ইভান পাল
আজ ১৭মার্চ, রবিবার বন্দরনগরী চট্টগ্রামের জামালখান এলাকার ঐতিহ্যবাহী ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিশুদের সাংস্কৃতিক জগৎ নিয়ে কাজ করা বিখ্যাত সংগঠন শিশুমেলা’র আয়োজনে জাতীয় শিশু দিবস এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ~ এর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।
ক্যালেন্ডারের পাতায় আজকের দিনটি বাঙ্গালিদের জন্য নি:সন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।
কারণ, ১৯২০ সালের ১৭ ই মার্চের ঠিক আজকের দিনেই জন্মেছিলেন ~ স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
যার হাত ধরেই এদেশে লাল সবুজের পতাকা উড়েছিল। বাঙ্গালিরা মুক্ত হতে পেরেছিলেন, পাকিস্তানিদের শাসন শোষণ থেকে।
যারঁ জন্য ই এই বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষ স্বপ্ন বুনেছিল আর আজকের লাল সবুজের বাংলাদেশ পেলো।
আজ বাঙ্গালি জাতির সেই মহামানবের জন্মদিন।
আর তাই লাল সবুজের এই দেশে পিদিমের মিটিমিটি আলোতে স্বপ্ন দেখা বাঙ্গালিদের জন্য কিংবা মাছ ভাত খেয়ে বেচেঁ থাকা প্রতিটি বাঙ্গালিদের জন্যই আজকের দিনটি নি:সন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।।
সেই সাথে আজকের দিনটি বাঙ্গালিদের কাছে আরেকটি কারণে বিখ্যাত। আর তা হচ্ছে, আজ জাতীয় শিশু দিবস।।
“১৯৯৬ সাল থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।”
আর পুরো বিশ্বে অবশ্য অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার টি কেই বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয়।।
১৭ই মার্চ একদিকে যেমন জাতির জনকের জন্মদিন এবং অন্যদিকে জাতীয় শিশু দিবস তাই দিনটিকে ঘিরে বাঙ্গালিদের আয়োজন টা একটু বেশি ই থাকে। সাথে বর্ণিলভাবে সাজানো থাকে।
জাতীয়ভাবে অর্থাৎ সরকারি পর্যায় থেকে দিনটিকে উদযাপন তো করা হয়, সাথে দেশের প্রতিটি শহর, বন্দর, জেলা, উপজেলাতে ও বর্ণাঢ্য আয়োজনে দিনটিকে উদযাপন করা হয়।
আর এরই ধারাবাহিতায় এবং চট্টগ্রামে কচিকাঁচাদের সাংস্কৃতিক জগৎ নিয়ে কাজ করা সংগঠন শিশুমেলা ‘র চার বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের হেলদী ওয়ার্ড খ্যাত জামালখান এলাকার ঐতিহ্যবাহী ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে শিশুদের নিয়েই সংগঠনটি আয়োজন করে এক বর্ণিল সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার।
১৭ ই মার্চ রোববার বিকেল ৪টে থেকে কঁচিকাচাদের নিয়ে শুরু হওয়া এই সাংস্কৃতিক আয়োজনে অংশ নেয় খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী, নবধারা সঙ্গীতাঙ্গন, নৃত্য নিকেতন, সুরাঙ্গন বিদ্যাপিঠ ডান্স একাডেমি, নটমল্লার সঙ্গীত একাডেমি এবং কৃত্তিকা নৃত্যালয়।
অনুষ্ঠানটিতে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন~ শিল্পী নুসরাত জাহান রিনি, প্রাপন্তী চক্রবর্ত্তী, অংকিতা আচার্য্য, শুক্লা পাল কনিকা, নিঝুম বড়ুয়া, ইমন শীল, সুব্রত ধর, স্বপ্নময়ী শিকদার ও স্বর্ণময়ী শিকদার।

শিশুমেলার’র আয়োজনে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ~ সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং উৎসবের কো-চেয়ারম্যান শৈবাল দাশ সুমন।।
আরো উপস্থিত ছিলেন— উপ সদস্য সচিব রত্মাকর দাশ টুনু, প্রধান সমন্বয়ক রুবেল দাশ প্রিন্স, ও সমন্বয়ক প্রকৌশলী অমিত ধর।
আর এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি এবং শিশু উৎসবের চেয়ারম্যান ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম।।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিন বলেন,
“বঙ্গবন্ধু জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। জাতির জনক শিশুদের ভালোবাসতেন। স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে আম্মাদের শিশুদের প্রতি নজর দিতে হবে। শিশুদের জন্য আনন্দময় শৈশব নিশ্চিত করতে হবে। তাদের ভালো শিক্ষার পরিবেশ দিতে হবে। শিশুদের জানাতে হবে এদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের ইতিহাস। শিশুরা সঠিক ইতিহাস জানলে দেশপ্রেমিক হয়ে বড় হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ায় দেশপ্রেমিক নতুন প্রজন্মই হবে আমাদের মূল শক্তি।”
এসময় খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি এবং শিশু উৎসবের চেয়ারম্যান ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম তারঁ বক্তব্যে বলেন , “আজকের শিশু-কিশোরদের জানতে হবে বঙ্গবন্ধুর অবদান। জাতির জনকের আর্দশ ধারণ করে এই প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে।”
অনুষ্ঠানটিতে আরও বক্তব্য রাখেন- ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং উৎসবের কো-চেয়ারম্যান শৈবাল দাশ সুমন, উৎসব কমিটির সদস্য সচিব রত্মাকর দাশ টুনু, প্রধান সমন্বয়ক রুবেল দাশ প্রিন্স, ও সমন্বয়ক প্রকৌশলী অমিত ধর।
আর দিনটি উপলক্ষে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার ও আয়োজন করা হয়।