গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে শহীদের রক্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে: জাহিদ হোসেন
দেশের মানুষ টানা চারটি মেয়াদে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। তাই জনগণ এখন তাদের অধিকার ফিরে পেতে চায়, চায় সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতন্ত্রের পূর্ণাঙ্গ প্রত্যাবর্তন। এই চেতনা থেকেই বিএনপি ১৭ বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এর দৃশ্যমান বহিঃপ্রকাশ ঘটে ৫ আগস্টের গণআন্দোলনে। এই আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, নিখোঁজ চৌধুরী আলম বা ইলিয়াস আলীরা শুধু স্থানীয় নির্বাচনের জন্য রক্ত দেননি—তাঁদের আত্মত্যাগ ছিল জনগণের ভোটের অধিকার এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য।
রোববার (৬ জুলাই) দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিএনপির উপজেলা ও পৌর শাখার আয়োজনে এক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, “বিএনপি কখনোই ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকেন্দ্রিক রাজনীতি করে না। যারা আমাদের সমালোচনা করেন, তাঁদের বলব—সমালোচনার জায়গা থেকে নয়, ঐক্যের জায়গা থেকে ভাবুন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জাতি যে ঐক্য দেখিয়েছে, সেটাই প্রমাণ করে, ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে পারলে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা সম্ভব।”
জাহিদ হোসেন আরও বলেন, “বর্তমান দুঃসময়ে যারা জাতীয় নির্বাচন পাশ কাটিয়ে কেবল স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন, তাঁদের উদ্দেশে বলি—এভাবে চললে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটতে পারে। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে হলে একতাবদ্ধ হতে হবে। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যের ভিত্তিতে আন্দোলনে শামিল হতে হবে।”
তিনি বলেন, “বিএনপি ভবিষ্যতমুখী রাজনৈতিক দল। এর প্রমাণ আমাদের নীতিগত কৌশল ও নেতৃত্ব। জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা কর্মসূচি, খালেদা জিয়ার ডালভাত কর্মসূচি কিংবা তারেক রহমানের ভিশন ২০৩০—এসবই গণতান্ত্রিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা।”
সংস্কার প্রসঙ্গে জাহিদ হোসেন বলেন, “বিএনপি হলো সেই রাজনৈতিক শক্তি, যারা একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রে দেশকে ফিরিয়ে এনেছে। চারটি পত্রিকা থেকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা উন্মুক্ত করেছে। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার থেকে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। এমনকি ১৯৭৪ সালের কালাকানুনও বিএনপির নেতৃত্বেই বাতিল হয়েছে। কাজেই বিএনপি সংস্কারবিমুখ নয়, বরং সময়োপযোগী সংস্কারে বিশ্বাসী।”
তিনি আরও বলেন, “শহীদদের রক্তের মাস জুলাইয়ে দাঁড়িয়ে অনৈক্য তৈরি করা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। ঐক্যবদ্ধ জাতিই পারে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে। স্বৈরশাসনের সুযোগ সৃষ্টি করে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আগামীদিনে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস রহমান, সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন শিল্পী, উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আকরাম হোসেন মণ্ডল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজা আহমেদ, পৌর বিএনপির সভাপতি ফরিদ খান, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।