মহিউদ্দীন অমি,ব্যুরো চিফ,বরিশাল
অধ্যক্ষকে শাসানো ও লাঞ্ছিত করা বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল ইসলাম ওরফে বাপ্পিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর সঙ্গে ছাত্রলীগের আরও তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার সকাল ১০টায় চারজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আটক অন্য তিনজন হলেন আ ন ম হাফিজ (২৬), মো. এইচ এম হাফিজুল ইসলাম (২৫) ও মো. রুবেল ব্যাপারী (২৭)। তাঁরা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী এবং রেজাউল ইসলামের সহযোগী। গত শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় রেজাউল ইসলামকে তাঁর তিন সহযোগীসহ নগরের সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ ক্যাম্পাস থেকে আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ। বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, রেজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে কলেজ অধ্যক্ষকে শাসানো, লাঞ্ছিত করা এবং চাঁদাবাজির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে তিন সহযোগীসহ গত শনিবার রাতে আটক করা হয়। রাতভর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাতেই কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির একটি মামলা করেছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত রবিবার তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, রেজাউল ইসলামকে রাতে আটক করার পর কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। অধ্যক্ষসহ কলেজের ২০ শিক্ষক থানায় উপস্থিত হন। এ সময় কলেজ অধ্যক্ষকে মামলা করার জন্য অনুরোধ জানালেও তিনি রাজি হননি। পরে কলেজের এক শিক্ষক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। জানা যায়, কলেজ অধ্যক্ষের নীরবতার কারণেই ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল ইসলাম কলেজে প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। সেখানে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নিয়ে তাঁদের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি হয়। যার জের ধরে গত বৃহস্পতিবার তাঁকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন রেজাউল ইসলাম। এ ব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ সচীন কুমার রায় বলেন, ‘পুলিশের ওই বক্তব্য সঠিক নয়। অধ্যক্ষ হচ্ছেন সরকারের প্রতিনিধি। তাই অধ্যক্ষ কোথাও মামলা করেন না। সারা দেশে সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মামলা করেন। আমরা পুলিশের কাছে রেজাউল ইসলামের সব অপরাধের কথা বলেছি। চাঁদা দাবির কথাও বলেছি। তার ভিত্তিতেই অধ্যক্ষের পক্ষে শিক্ষক অলিউল ইসলাম বাদী হয়েছেন।’ কলেজ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, রেজাউল ইসলামের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে অনেক আগে। তারপরও তিনি কলেজের সব কাজে খবরদারি করেন। তাঁকে না জানিয়ে কলেজে কোনো অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয় না। সব অনুষ্ঠান থেকে তাঁর জন্য বরাদ্দ রাখতে হয়। বরাদ্দ না রাখলেই ক্ষিপ্ত হন। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠান সম্পর্কে না জানানোর কারণেই অধ্যক্ষের ওপর ক্ষিপ্ত হন তিনি।