গল্পিতা
সালমান সাদ
বিকেলে আমার ঘুমের স্বভাব। আছরের
নামাজের জায়নামাজ ছাড়তেই বিছানায় এলিয়ে পড়ি। মাঝেমধ্যে, খুব কমই এই অভ্যাসের ব্যত্যয় ঘটে। তখন ঘুরতে বেড়াতে বের হই। মাঠে যাই। খেলাধূলায় আগ্রহ একেবারেই নেই। পারিও না তাই। ছেলেপিলেদের খেলা দেখি। বিশাল বিস্তৃত আকাশের নীল দেখি। উদাস হই। ভাবনার জগতে ডুবে থাকি। সেদিন বিকেলে দেখি মাঠে একটা ছেলে -দশ কি বারো বয়স – জোরসে বল ছোঁড়ার প্র্যাক্টিস করছে। চোখেমুখে সে কী আগ্রহ উত্তেজনা তার! কখনো বল হাতে। কখনো খালি হাত ঘোরাচ্ছে। একটা যুবক বয়সী ছেলে-চেহারায় রুক্ষ ভাব- এগিয়ে এলো। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছেলেটার দুর্দান্ত হাত ঘোরানোর প্র্যাক্টিস দেখছিল।
ছেলেটা এবার একটা ইট ছুড়লো। সেটা দেয়ালে চক দিয়ে আকা স্টাম্পটার মাঝ বরাবর লক্ষ্যভেদলো!
সবাই যারা আশেপাশে থেকে খেয়াল করছিল তারা উল্লাস করে উঠলো।
যুবকমত ছেলেটা তার রুক্ষ চেহারায় বিদ্রুপের একটা বাঁকা হাসি টেনে ছেলেটাকে বললো
কিরে মোল্লার পুত মোল্লা! বোমা ছোঁড়ার প্র্যাক্টিস করোস নাকি? বড় হইলে জঙ্গি হবি! দেশটারে তোরা খায়া দিবি রে!
ছেলেটা তেড়ে এলো না। ক্ষ্যাপলো না। রাগলো না। কেমন নিঃশব্দ বেদনার একটা গভীর রুপ ছায়া ফেলেই তার চোখে মুখে ভাবে আবার রৌদ্র জেগে উঠলো। ছেলেটা শুধু বলে
একদিন
আমি বল ছুঁড়তে দৌড়লে রুদ্ধশ্বাস তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।
একদিন
আমি স্টাম্প বোল্ড করলে উল্লাসে ফেটে পড়বে বাংলাদেশ।
একদিন
আমি জিতে গেলে জিতে যাবে বাংলাদেশ!