Sunday, April 27, 2025
28 C
Dhaka

যিনি শংখচিল কিংবা শালিকের বেশে এই কার্ত্তিকের নবান্নের দেশে ফিরতে চেয়েছেন বারংবার: কবি জীবনানন্দ দাশ

ইভান পাল

আমরা জানি যে, আমাদের দেশকে ষড়ঋতুর দেশ বলা হয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের এই দেশে বিভিন্ন সময়ে বহু মানুষ এসেছেন। আর এসে এদেশের যে ভুবন ভোলানো প্রকৃতির রুপ, তাতে মুগ্ধ হয়েছেন। এই প্রকৃতির রুপের প্রেমে পড়েছেন। ভালবেসেছেন।

আর এ বাংলার কবি, সাহিত্যিকরা তো প্রকৃতি বন্দনা করেছেন ই। তাও আবার প্রবলভাবে।

আমাদের রবি ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, পল্লীকবি জসীম উদ্দিন, কবি শামসুর রাহমান সহ আরো অনেকে। বলে হয়তোবা শেষ করা যাবে না। কারণ প্রকৃতি বন্দনা করেন নি বাংলা সাহিত্যে এমন সাহিত্যিক খুজেঁ পাওয়া দুষ্কর।

কিন্তু এই বাংলা সাহিত্যের আরো একজন কবি রয়েছেন। যিনি এই পল্লী প্রকৃতি’র রুপে মুগ্ধ হয়ে, এই ভুবনভোলানো প্রকৃতিকে ভালবেসে লিখেছিলেন “রুপসী বাংলা” নামক তারঁ বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ।।
কি আচঁ করতে পেরেছেন, কার কথা বলছি।
হুম, ঠিক ধরেছেন।
কথা বলছি, বাংলা সাহিত্যের রুপসী বাংলার কবি “জীবনানন্দ দাশের”।

বিংশ শতাব্দীর একজন অন্যতম প্রধান কবি, লেখক, প্রাবন্ধিক এবং অধ্যাপক। তাকেঁ আবার বাংলাভাষার “শুদ্ধতম কবি” বলে ও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তিনি বাংলা কাব্যে দিয়েছেন আধুনিকতার ছোঁয়া।তাই তাকেঁ “আধুনিক কবি” ও বলা হয়ে থাকে। আর সমৃদ্ধ করেছেন সমগ্র বাংলাসাহিত্য জগতকে।

জন্মেছিলেন ১৮৯৯ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের দক্ষিনের জেলা বরিশালে। তাঁর পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ঢাকা জেলার বিক্রমপুর পরগণার অধিবাসী । তাঁর পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত (১৮৩৮-৮৫) বিক্রমপুর থেকে বরিশালে বসতি স্থানান্তরিত করেন। তারঁ পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত ছিলেন হিন্দুধর্মের সকল কুসংস্কারের উর্দ্ধে। যুক্তিশীল এই মানুষটি পরবর্তীতে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন। আর অংশ নেন বরিশালের ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়ে। আর তিনি তাঁর বিভিন্ন ধরনের মানবহিতৈষী কাজের জন্য ব্যাপকভাবে সমাদৃত হন। জীবনানন্দের পিতা সত্যানন্দ দাশগুপ্ত ছিলেন সর্বানন্দের দ্বিতীয় পুত্র। সত্যানন্দ দাশগুপ্ত ছিলেন বরিশাল ব্রজমোহন স্কুলের শিক্ষক। আবার তারঁও ছিল বহুমাত্রিক প্রতিভা। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রবন্ধ লিখতেন (প্রাবন্ধিক)।ছিলেন বরিশাল ব্রাহ্ম সমাজের সম্পাদক এবং ব্রাহ্মসমাজের মুখপত্র “ব্রাহ্মবাদী” পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক।।

পাঠকমহল তো, এতক্ষণ জীবনানন্দ দাশের পিতার এবং পিতামহের কথা শুনলেন। এবার একটু তারঁ মমতাময়ী মায়ের কথা বলি।

কবির মা কুসুম কুমারী দাস

কুসুমকুমারি দাশ।
বাংলা সাহিত্যজগতের আরেকজন অন্যতম কবি, সাহিত্যিক। জন্মেছিলেন বরিশালে।
পিতা চন্দ্রনাথ দাস এবং মাতা ধনমাণি। চন্দ্রনাথ দাস ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। আর তাই তৎকালীন কুসংস্কারাছন্ন হিন্দুসমাজ এটিকে কোনভাবে মেনে নিতে পারেননি। তাই তারঁ গ্রামে এনিয়ে শুরু হয় চরম বিরোধিতা। আর যার ফলশ্রুতিতে গ্রামের পৈতৃক ভিটা-মাটি ছেড়ে পাড়ি জমান বরিশালে । পড়াশোনার হাতেখড়ি ঘটে পারিবারিক পরিমন্ডলের মধ্যে। আবার পড়াশোনা করেছেন বরিশালে ব্রাক্ষ্ম সমাজ মেয়েদের জন্য যে হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তাতে।আবার কলকাতার বেথুন স্কুলেও পড়েছেন।ছোটবেলা থেকেই কবিতা লিখতেন। সাহিত্য চর্চা করতেন।
কেন এই মহিলা কবি কে নিয়ে এত্ত কথা বলছি।পাঠকমহলের মনে প্রশ্নটা আসতেই পারে। কারণ একটাই, আর তা হল–
ইনি ই হলেন কবি কুসুমকুমারি দাশ। কবি জীবনানন্দ দাশের মাতা। কবি কুসুমকুমারি দাশের সেই বিখ্যাত কবিতা আদর্শ ছেলে (আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে/ কথায় না বড় হয়ে কাজে বড়ো হবে) আজও আমাদের শিশুশ্রেণীর পাঠ্য।

যাক, আবারো ফিরে আসি রুপসী বাংলার কবি’র পাচালীঁ তে।

জীবনানন্দ দাশ ডাক নাম মিলু। তিন ভাইবোনের মধ্যে মিলু ই ছিলেন সবার বড়। ছোট ভাই অশোকানন্দ দাশ ১৯০৮ সালে এবং বোন সুচরিতা দাশ ১৯১৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

কম বয়সে স্কুলে ভর্তি হওয়া এটাই ছিল স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু তাদেঁর পিতা এই কম বয়সে সন্তানকে স্কুলে পাঠানো কে কোনভাবেই সমর্থন করতেন না। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, নিজেই হাতেখড়ি দেবেন সন্তানদের।
তাই মিলু প্রতিদিন ভোরে উঠে মনযোগ দিয়ে পিতার কন্ঠে উপনিষদ আবৃত্তি শুনতেন। তারঁ পিতা যে পন্ডিত ছিলেন। সকল শাস্ত্র, সকল বিষয়ের।
আর তারঁ মা খুব ভাল গান করতেন। কথায় আছে না, যে রাধেঁ(রান্না করা), সে চুল ও বাধেঁ। ঠিক তেমনি ছিলেন কবি কুসুমকুমারী দাশ। যেমন ছিলেন সাহিত্যিক। তেমন ই আবার ভালো গান ও করতেন।

জীবনানন্দ দাশ ছোটবেলা থেকেই ছিলেন লাজুক স্বভাবের। খেলাধুলার প্রতি ছিল তারঁ প্রবল ঝোকঁ।

আর ভ্রমণ করতে বেশী ই ভালবাসতেন। বাগান করা ছিল তারঁ অন্যতম প্রধান শখ। তাই বোধহয় এই প্রকৃতিকে বেশী ই অনুভব করতে পেরেছিলেন।

শৈশবে একবার কঠিন অসুখে শারীরিক বিপর্যয়ে পড়েন।আর স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য মাতা ও মাতামহ (মায়ের পিতা) হাসির গানের কবি চন্দ্রনাথ দাসের সাথে লক্ষ্মৌ, আগ্রা ,
দিল্লী সহ প্রভৃতি স্থান ভ্রমণ করেন।

তার বয়স যখন আট বছর তখন তাকেঁ ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয় বরিশালের ব্রজমোহন বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে। বিদ্যালয়ে থাকাকালীন সময়েই তাঁর বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় রচনার সূচনা হয়। এছাড়া সে সময় তাঁর ছবি আঁকার দিকেও ঝোঁক ছিল। ১৯১৫ সালে ব্রজমোহন বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগ পেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।এর দু’বছর পর ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ও প্রথম বিভাগ পেয়ে সফলতার সাথে শিক্ষাজীবনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব শেষ করেন। এবার আরো উচ্চতর শিক্ষালাভের জন্য বরিশাল পর্ব আপাতত শেষ করে যাত্রা করেন কলকাতায়। ১৯১৯সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজীতে অনার্স সহ বিএ ডিগ্রী লাভ করেন।
ওই বছরেই
ব্রাহ্মবাদী পত্রিকার বৈশাখ সংখ্যায় তার প্রথম কবিতা ছাপা হয়। কবিতাটির নাম ছিল “বর্ষ আবাহন”। কবিতাটিতে কবির নাম ছাপা হয়নি, কেবল সম্মানসূচক শ্রী কথাটি লেখা ছিল। তবে পত্রিকার বর্ষশেষের নির্ঘণ্ট সূচিতে তার পূর্ণ নাম ছাপা হয়: শ্রীজীবনানন্দ দাস, বিএ ।(উইকিপিডিয়া) অতঃপর ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে দ্বিতীয় শ্রেণীতে এম. এ. ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯২২ সালে জীবনানন্দ কলকাতার সিটি কলেজে শিক্ষক হিসেবে অধ্যাপনা শুরু করেন এবং আইনশাস্ত্র অধ্যয়ন ছেড়ে দেন।

দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ১৯২৫ সালের জুনে দেহত্যাগ করেন। কবি জীবনানন্দ দাশ তখন দেশবন্ধুর স্মরণে ‘দেশবন্ধুর প্রয়াণে’ নামক একটি ব্রাহ্মবাদী কবিতা ছদ্মনামে রচনা করেন, যা তৎকালীন বঙ্গবাণী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কবিতাটি পরবর্তীতে কবির প্রথম কাব্য গ্রন্থ “ঝরা পালক”এ স্থান করে নেয়। আবার এই কবিতাটি পড়ে কবি কালিদাস রায় এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি বলেছিলেন, “এ ব্রাহ্মবাদী কবিতাটি নিশ্চয়ই কোন প্রতিষ্ঠিত কবির ছদ্মনামে রচনা”।

তাঁর প্রথম প্রবন্ধ ছিল “স্বর্গীয় কালীমোহন দাশের শ্রাদ্ধবাসরে”। প্রবন্ধটি ১৯২৫ সালে ব্রাহ্মবাদী পত্রিকার পরপর তিনটি সংখ্যায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। ঐ বছরই কল্লোল পত্রিকায় কবির ‘নীলিমা’ কবিতাটি প্রকাশিত হয়। কবিতাটি ছিল তারুণ্য আর কাব্যরস সমৃদ্ধ।তাই কবিতাটি প্রকাশিত হওয়ার পর তা তৎকালীন তরুণ কাব্যরসিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ধীরে ধীরে কলকাতা, ঢাকা এবং সমগ্র বাংলার বিভিন্ন সাহিত্যপত্রিকায় তাঁর লেখা ছাপা হতে থাকে। যেগুলির মধ্যে ছিল —
কল্লোল , কালি ও কলম , প্রগতি’র মতো বিখ্যাত সব পত্রিকা। ১৯২৭ সালে কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ
“ঝরা পালক” প্রকাশিত হয়। আর সে সময় থেকেই তিনি তাঁর পারিবারিক উপাধি ‘দাশগুপ্তের’ বদলে কেবল ‘দাশ’ লিখতে শুরু করেন।
প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি কলকাতা সিটি কলেজের যে শিক্ষকতার চাকরি, সে চাকরিটি হারান। কিছু আভ্যন্তরীণ কলেজ সমস্যার কারণে তাকেঁ চাকুরিচ্যুত করে কলেজ প্রশাসন।
যাক, এরপরও জীবন থেমে থাকেনি। চলছিলেন জীবনের সাথে সাথে। তবে এই যে তারঁ চাকরি হারানো তাতে তাকেঁ বেশীই অর্থকষ্টে পড়তে হয়। আবার উদারভাবে সাহিত্য চর্চার জন্য সমালোচনাও শুনতে হয়েছিল বহুবার।
তারঁ সমগ্র কর্মজীবন ছিল শিক্ষকতা নিয়ে। কলেজে, স্কুলে কিংবা গৃ্হশিক্ষক হিসেবে। তবে কর্মজীবনে স্থিরতার অভাব ইই তাকেঁ বেশী কষ্ট দিয়েছে।স্থিরভাবে তিনি কাজ করতে পারেননি।তাই বারবার চাকরি বদল করেছেন।

যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল তখন অধ্যাপনা ছেড়ে দেন। আর কলকাতা থেকে প্রকাশিত অধুনালুপ্ত দৈনিক “স্বরাজ পত্রিকা” তে সম্পাদকীয় বিভাগে যোগ দেন।

১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৯ই মে তিনি লাবণ্য দেবীর সাথে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন।

ধারণা করা হয়, ছোটবেলা থেকে মায়ের প্রভাবেই তারঁ মধ্যে কবিতা ভাবটি কাজ করতে শুরু করে। আর তখন থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে লিখতে শুরু করেন।
১৯১৯ সালে তাঁর লেখা প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। কবিতাটির নাম “বর্ষা আবাহন” ।
তারঁ অন্যান্য বিখ্যাত সব কাব্যগ্রন্থের মধ্যে — ঝরা পালক, ধূসর পান্ডুলিপি, বনলতা সেন, মহাপৃথিবী সাতটি তারার তিমির, বেলা অবেলা কালবেলা উল্লেখ্যযোগ্য।

আমি আগেই বলেছি তিনি প্রবন্ধ ও লিখতেন। “কবিতার কথা” তারঁ একটি শ্রেষ্ট প্রবন্ধ সংকলন।
আবার তিনি উপন্যাস ও লিখেছিলেন। তারঁ মৃত্যুর পর প্রকাশিত অনেক সৃষ্টির মধ্যে সে উপন্যাস আর অনেকগুলো গল্প ও ছিল।আবার অপ্রকাশিত কবিতাও কম নেই।

যাক, এবার একটু তারঁ প্রকৃতি নিয়ে সৃষ্টির কথাই বলি।

“আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে- এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয়- হয়তো বা শংখচিল শালিখের বেশে,
হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল ছায়ায়।”(সংক্ষিপ্ত)

কবি জীবননানন্দ দাশের বিখ্যাত এই কবিতায় তিনি লিখেছেন —
তিনি এই প্রকৃতির রুপে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তিনি বারংবার এই বাংলায় ফিরে আস্তে চান। তখন হয়তোবা মানুষ হয়ে ফিরবেন না। হয়তোবা শংখচিল কিংবা শালিকের কিংবা ভোরের কাকের বেশে তিনি এই কার্ত্তিক আর নবান্নের দেশে আমাদের ইই এই পল্লী প্রকৃতির মাঝে ফিরে আসতে চান।
তারঁ এই আবার আসিব ফিরে কবি এই বাংলার প্রকৃতির রুপের যে বর্ণণা করেছেন তা অতুলনীয়। অসাধারণ!

আর তারঁ শ্রেষ্ট সৃষ্টি রুপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থ। যেখানে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন এই বাংলার ই অসাধারণ রুপ বৈচিত্র্য। আর এজন্য ই তাকেঁ বলা হয় “রুপসী বাংলার কবি”।আবার এই কাব্যগ্রন্থেরই বেশিরভাগ কবিতা কাঠামোগতভাবে সনেট। তবে কবিতাসমূহে তিনি তারঁ প্রিয় অক্ষরবৃত্ত ছন্দের ই প্রয়োগ করেছেন।

আর তারঁ এই রুপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থটির কবিতাসমূহ কিন্তু বিভিন্ন অনুবাদক বিচ্ছিন্নভাবে অনুবাদ করেছেন। পূর্ণ গ্রন্থটির আবার একাধিক ইংরেজি অনুবাদও আছে। সর্বশেষ অনুবাদ করেছেন বৃটিশ কবি জো উইন্টার।

কবি জীবনানন্দ দাশ বিংশ শতাব্দীর একজন শক্তিমান প্রগতিশীল আধুনিক কবি। মানবতার বিপন্ন ছবি তারঁ কবিতায় প্রতিফলিত।শব্দচয়নের নৈপুণ্যে তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র। তারঁ প্রথমদিকের কবিতাতে ছিল বিষাদের ছোয়াঁ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকেঁ নিয়ে যথার্থই বলেছিলন, তারঁ কাব্য “চিত্ররুপময়”।

তিনি ১৯৫৪সালের ১৪ই অক্টোবর কলকাতার বালিগঞ্জে এক ট্রাম দুর্ঘটনায় গুরুতর ভাবে আহত হন। ট্রামের ক্যাচারে আটকে তার শরীর দলিত হয়ে গিয়েছিল। ভেঙ্গে গিয়েছিল কণ্ঠা, ঊরু এবং পাঁজরের হাড়। গুরতরভাবে আহত জীবনানন্দের চিৎকার শুনে ছুটে এসে নিকটস্থ চায়ের দোকানি চূণীলাল এবং অন্যান্যরা তাঁকে উদ্ধার করে। তাঁকে ভর্তি করা হয় শম্ভূনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে। এ সময় ডাঃ ভূমেন্দ্র গুহ সহ অনেক তরুণ কবি জীবনানন্দের সুচিকিৎসার জন প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন। আর এই দুর্ঘটনার ঠিক এক সপ্তাহ পরে অর্থাৎ ২২শে অক্টোবর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শম্ভুনাথ পন্ডিত হাসপাতালে তারঁ মৃত্যু ঘটে।
উল্লেখ্য, বাংলাসাহিত্য জগতে তাকেঁ “তিমির হননের” কবিও বলা হয়।

Hot this week

নীল শাড়ি রূপা আর এক হিমালয়ের হিমু

সেদিন হিমালয় থেকে হিমু এসেছিল। মো. মোস্তফা মুশফিক তালুকদার। মাথার উপর...

সিজিপিএ বনাম অভিজ্ঞতা — মাহফুজা সুলতানা

বন্ধু, তোমার সিজিপিএ আমায় ধার দিও। বিনিময়ে,আমার থেকে অভিজ্ঞতা নিও।...

‘দেবী’কথনঃ একটু খোলামেলাই!

জুবায়ের ইবনে কামাল আপনি কি দেবী সিনেমা নিয়ে আমার মতই...

শরৎকাল: কাশের দেশে যখন প্রকৃতি হাসে !

ইভান পাল || আজ কবিগুরুর একটা গান ভীষণ মনে পড়ছে--- "আজি...

মাওঃ সাদ সাহেবের যত ভ্রান্ত উক্তি

বেশ কিছুদিন যাবৎ মাওঃ সাদ সাহেবকে কেন্দ্র করে তাবলীগ...

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আরপিএল: সম্ভাবনা ও গুরুত্ব

আরপিএল বর্তমান বিশ্বে দক্ষ মানবসম্পদ গঠনের জন্য প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি...

কালীগঞ্জে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে অভিভাবক সমাবেশ

গাজীপুরের কালীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী ‘নরুন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে’ শিক্ষার মানোন্নয়নের...

দৈনিক যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন ফিরে পেলেন শফিক রেহমান

দৈনিক যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন ফিরে পেলেন বর্ষিয়ান সাংবাদিক শফিক রেহমান।...

বিয়ের কাজ সারলেন তালাত মাহমুদ রাফি

বিয়ে করেছেন সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফি। সোমবার (১৭ মার্চ)...

যুদ্ধ বন্ধে পুতিনের সাথে কথা বলবে ডোনাল্ড ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি আগামীকাল মঙ্গলবার রুশ...

সিআইডি প্রধান হলেন গাজী জসীম

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন...

দেশের মাটিতে পা রাখলেন হামজা চৌধুরী

অবশেষে অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো। দেশের মাটিতে পা রাখলেন...

পিরোজপুরে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে পিতা-পুত্র আটক

পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে সপ্তম শ্রেণির এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে জোর করে...
spot_img

Related Articles

Popular Categories

spot_imgspot_img