গল্প: ও কে?!
“মঙ্গলবার 03:28 AM”
আধোবিধ্বস্ত ঘরটার মধ্যে ঢুকেই দরজার খিল আটকে দিয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয় দাঁড়ালো পৃথিবীর সর্বশেষ মানুষটা। হাপুনি উঠছে খুব দ্রুত লয়ে। পিপাসায় কলিজা চিমসে আসছে। একটু পানি দরকার। ওই তো দেখা যায় একটা ক্যান। পৃথিবীতে বেঁচে থাকা একমাত্র মানুষটার চোখের তারায় আলো জ্বলে উঠলো। নিয়ে ঢকঢক করে গিলে ফেললো তরলটুকু। ওটা ডিজেল ছিল। সবকিছুরই একটা সীমা একটা শেষ আছে। এই বিজ্ঞানের উৎকর্ষতা উন্নতিযাত্রার ও একটা শেষ আছে। ধ্বংস আছে। আছে। আছে। আছেই! তাই হয়েছে। তৃতীয় পারমাণবিক বিশ্বযুদ্ধে পুরো পৃথিবীটা একটা জ্বলন্ত কয়লার টুকরো হয়ে গেছে। সৌরজগতের ছায়াপথে দেখা যায় সবুজ শ্যামল গ্রহর স্থানে ধিকিধিকি শুধু জ্বলছে নিভছে একটা কিছু। সেই পৃথিবীর শেষ জীবিত মানুষটির গল্প আমরা শুনছি। এতক্ষণে তার দেহের কোষে কোষে ডিজেল ক্রিয়া-বিক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। আর সামান্য কিছুক্ষণ পর বিদায় নেবে পৃথিবীর শেষ মানুষটি। এমন সময় দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। ঠকঠক… ঠকঠক… ঠকঠক…!
গল্প: যাত্রা!
হেডফোনের উথালপাতাল মিউজিক ভেদ করে ভীষণ একটানা ধাতব আওয়াজ, তারপর দপ করে একটা শব্দ অত:পর নিস্তব্ধতা। কানের পর্দা কি ফেটে গেলো? আশেপাশের লোকেরা চিৎকার করে কী যেন বলছে তাকে, পরিবেশে কেমন রোমহর্ষক চাঞ্চল্য, অথচ মনে হচ্ছে সুনসান নীরবতা তাকে জাঁকিয়ে ধরেছে। ইয়া আল্লাহ! ঘরঘর করে তুফান তুলে ওটা কী ধেয়ে আসছে? তীব্র আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। এত কাছে ও! রেললাইন ধরে হাটা লোকটা বুঝে গেছে এরপর কী হতে যাচ্ছে! আরেকটা ছেলে দৌড়ে এলো লোকটাকে টেনে লাইন থেকে তুলতে। হতবিহবল লোকটি আচমকা জামার আস্তিন আঁকড়ে ধরলো ছেলেটার। – ও ছেলে কই যাও? আমার সাথে চলো!
— সালমান সাদ