–মো:আল জোবায়ের আলিম
যখন থেকে আমার বুদ্ধির সামান্যতম বিকাশ হচ্ছিল, তখন থেকেই আমি আমার দাদুর সাথে থাকতাম। দাদার কথা আমার মনে পড়ে না, চেহারা ও মনে করতে পারি না। আর হ্যা, আমি নাকি আমার দাদার মতো দেখতে হয়েছি, তাও দাদুর কাছে হাজারবারের ও বেশি বার শুনা। যতটুকো মনে পড়ে, দাদুর কোলে মাথা রেখে ঘুমানো, দাদুর পাশের বালিশটা ছিল আমার দখলে।
আমি ছোটবেলায় খুব বেশি রাত জাগতে পারতাম না, তাই প্রচুর মার খেতে হতো আম্মুর হাতে (যদিও সেই মার গুলোই জীবনকে বদলে দিয়েছে)। আম্মু যখন মারত, তখন দাদুই আমার ঢাল হিসেবে আমাকে রক্ষা করত, নিয়ে গিয়ে কান্না থামাতো।
ছোটবেলায় এক বার প্রাইমারী স্কুলে থাকাকালীন আমার মাথা ফেটেছিল, তখন গ্রামে অত রিকশা/সি এন জি চলতো না, সেই সময়ে ও দাদু আমাকে গ্রামের বাজারের ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল, আর কিছুই মনে নেই এতটুকো ছাড়া যে, আমি দাদুকে জড়িয়ে ধরে ডাক্তারের সামনে বসে ছিলাম। আর ডাক্তারের কাজ ডাক্তারই করলেন।
আবার ১ বার দোলনা থেকে পড়ে গিয়ে পিঠের মেরুদণ্ডতে প্রচুর ব্যথা পাই, তখন ও দাদুর হাতের জাদুর মালিশে কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাই।
এমনই দাদুকে নিয়ে গল্প বলা শুরু হলে হয়ত রাতের পর রাত শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু দাদুকে নিয়ে আমার বেড়ে উঠার গল্প শেষ হবে না।
কিন্তু আজ পড়ালিখার তাগিদে আমি দাদুর কাছ থেকে অনেক দূরে। ব্যস্ততা এতই বেড়ে গেছে যে দাদুর সাথে ফোনালাপ করতে ও সময় পাই না। হয়ত, আমি সেই সকল দিনের কথা ভুলে গেছি, তাই।
সত্যিই আমি বড় সার্থপর, যে দাদুর সাথে আমি শৈশব কাল কাটিয়েছি, আমি সেই দাদুর কোন খবর নেই না বলে।
সত্যিই আমি বড়ই স্বার্থপর, দাদুর ভালোবাসাগুলোকে ভুলে থাকতে পেরে।
সত্যিই আমি বড়ই স্বার্থপর।
ক্ষমা করে দিও দাদু।
ক্ষমা করে দিও আমাকে।
ছবি-কেয় ক্রেইন
ডেইলি পিনটারেস্ট ডট কম