দিনের ব্যস্ত সময়ে অনেকেই হালকা ক্ষুধা মেটাতে স্বাস্থ্যকর বিকল্প খোঁজেন। বিশেষ করে স্ন্যাকস হিসেবে প্রাকৃতিক ফলের মধ্যে কলা ও খেজুর জনপ্রিয়। উভয় ফলই পুষ্টিগুণে ভরপুর হলেও কোনটি শরীরের জন্য বেশি উপকারী—তা নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক চাহিদা ও খাদ্যাভ্যাসের ওপর।
ক্যালরির দিক থেকে তুলনা
কলা অপেক্ষাকৃত কম ক্যালরিযুক্ত। প্রতি ১০০ গ্রাম কলায় থাকে প্রায় ৮৯ ক্যালরি, যেখানে খেজুরে থাকে প্রায় ১৮০ ক্যালরি। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগ্রহীরা কলাকে নিরাপদ বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন।
শর্করার মাত্রা
খেজুরে শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি—প্রায় ৬৪ গ্রাম। এটি দ্রুত শক্তি জোগায় এবং স্বাভাবিক মিষ্টির চাহিদা কমায়। তবে উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের কারণে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কম উপযোগী। কলায় শর্করার মাত্রা প্রায় ১২ গ্রাম, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তুলনামূলকভাবে নিরাপদ।
ওজন নিয়ন্ত্রণ ও হজমে ভূমিকা
কলা ওজন কমানোর ডায়েটে কার্যকর, কারণ এতে ক্যালরি কম এবং হজম সহজ। অন্যদিকে, শরীরচর্চার পর দ্রুত শক্তি দরকার হলে খেজুর ভালো বিকল্প, কারণ এটি দ্রুত হজম হয়ে শরীরে শক্তি জোগায়।
ফাইবার ও খনিজ উপাদান
খেজুরে ফাইবারের পরিমাণ প্রায় ৮ গ্রাম, যা হজমে সহায়ক। কলায় এই পরিমাণ প্রায় ২.৬ গ্রাম। খনিজ উপাদানের দিক থেকে কলা পটাসিয়ামে সমৃদ্ধ, যা হৃদ্রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। খেজুরে রয়েছে আয়রন ও ম্যাগনেসিয়াম, যা রক্তস্বল্পতা ও স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
উপসংহার
কলা ও খেজুর উভয়ই স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল। তবে কখন কোনটি গ্রহণ করবেন, তা নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা ও প্রয়োজন অনুযায়ী। ওজন কমাতে চাইলে কলা, আর শরীরচর্চার পর দ্রুত শক্তির জন্য খেজুর উপযুক্ত। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য কলা অপেক্ষাকৃত নিরাপদ, আর আয়রনের ঘাটতি থাকলে খেজুর বেশি উপকারী।
তবে মনে রাখতে হবে, যে কোনো ফলই অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ না করে পরিমিতভাবে খাওয়াই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।