রেজা শাহীন
শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ছাড়া পরিপূর্ণ বিকাশ সম্ভব না। শিশুর শারীরিক বিকাশ যেমন প্রয়োজন তেমনি মানসিক বিকাশও। সব বাবা মা চায় তার সন্তান বুদ্ধিমুতি হোক। শিশুর বুদ্ধি বিকাশের জন্য মা বাবা টেনশনে থাকেন। বয়সের সাথে সাথে শিশুর মানসিক বিকাশ ঘটতে থাকে। শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য খাবারের গুরত্ব অপরীসীম। এমন কিছু খাবার রয়েছে যা নিয়মিত খাওয়ালে শিশুর মানসিক বুদ্ধি বৃদ্ধি পাবে। চলুন জেনে অাসি সেসব খাবার সম্পর্কে।
মায়ের দুধঃ
শিশুর মানসিক বিকাশে মায়ের দুধের বিকল্প নেই। শিশু জন্মের পর কম পক্ষে ৬ মাস পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো উচিৎ। মায়ের দুধে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন রয়েছে। গবেষণায় দেখা
গেছে, যেসব শিশুকে নিয়মিত মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো হয় তাদের স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের বিকাশ অন্যদের চেয়ে ভালো
ডিমঃ
শিশুর মানসিক বিকাশে ডিম একটি গুরুত্বপূণর্ণ খাবার। ভিটামিন, অায়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, অায়োডিন, কোলন সহ বেশ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ রয়েছে। ডিমে থাকা কোলিন শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে সহায়তা করে।
বাদামঃ
বাদামে রয়েছে ভিটামিন বি-৩। যা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায়। পেস্ত বাদাম, কাজু বাদাম, চীনা বাদাম সহ সব ধরণের বাদামই শিশুর মানসিক বৃদ্ধি গঠনে সহায়ক। বাদামে থাকা উপাদান মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়। ফলে মস্তিষ্ক সুস্থ থাকে। সেই সাথে স্মৃতি শক্তির উন্নতি ঘটে।
অাখরোটঃ
শিশুর মস্তিষ্কের যে কোনো রোগ থেকে রক্ষা করতে অাখরোট সাহায্য করে। অাখরোটে রয়েছে, ভিটামিন ই,ফোলেট, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং খনিজ। তাছাড়া ওমেগা-৩ ফ্যাট ও রয়েছে এতে।
শাক-সবজিঃ
শিশুর মস্তিষ্কের নতুন কোষ গঠনে শাক সবজির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাতা কপি ও পালং শাকে রয়েছে ভিটামিন কে এবং বিটা ক্যারোটিন। ভিটামিন কে এবং বিটা ক্যারোটিন
শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। এছাড়া নিয়মিত অাপনার শিশুকে টমেটো খাওয়াতে পারেন। টমেটো মস্তিষ্কের কার্যকরতা বৃদ্ধি করে।
ডার্ক চকলেটঃ
ডার্ক চকলেট মস্তিষ্কে নিউরন তৈরি করে যা নতুন বিষয় মনে রাখতে সাহায্য করে। এটি শিশুর মস্তিষ্ক সতেজ রাখে। ডার্ক চকলেট মানসিক দূবর্লতা কমায় এবং মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক রাখে।
সামুদ্রিক মাছঃ
মস্তিষ্কের কার্য ক্ষমতা বাড়াতে সামুদ্রিক মাছের জুড়ি নেই। সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাট এসিড, জিংক। শিশুকে সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ দিন মাছ ও মাছের তেল খাওয়ানো উচিৎ। সামুদ্রিক মাছ দেহে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এছাড়া এসব মাছ হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী।
কলাঃ
কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে কার্বোহাইড্রেট। কলা শিশুর মনোযোগ বৃদ্ধি করে। এছাড়াও কলায় পটাশিয়াম থাকায় মস্তিষ্ককে দ্রুত শিখতে সাহায্য করে। কলাতে অারও অাছে ভিটামিন -৬। যা শিশুর মনকে চাঙ্গা করে তোলে। কলা রক্তে শর্করার পরিমান বৃদ্ধি করে এবং বিষন্নতা কমিয়ে মস্তিষ্কে সুখী হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায়।
মধুঃ
মানব দেহের উপকারের ক্ষেত্রে মধুর চেয়ে শক্তিশালী অার কোনো খাবার নেই। মধুতে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন, পটাশিয়াম, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ইত্যাদি। শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে খুবই প্রয়োজনীয়। মধু দেহের পেশীর ক্লান্তি দূর করে। তাছাড়া মধু রক্তে হিমোগ্লোবিনের ভারসাম্য বজায় রাখে।
কালোজিরাঃ
কালোজিরায় ২১ শতাংশ শর্করা রয়েছে। কালোজিরার অারও কিছু নাম রয়েছে। যেমন- নিজেলা, কালো কওড়া, ফিনেল ফ্লাওয়ার ইত্যাদি। এটি মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের তুলনায় কালোজিরা মেধা বিকাশে দ্বিগুন কাজ করে। নিয়মিত কালোজিরা খাওয়ানো হলে দ্রুত শিশুর মানসিক এবং দৈহিক বৃদ্ধি ঘটবে।