আরটিভির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে পরিচালক মিজানুর রহমান আরিয়ান নির্মাণ করেন নাটক ঋণী৷ নাটকটি সম্প্রচার করা হয় আরটিভির পর্দায়। এছাড়াও গ্লোবাল টিভি ড্রামা ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা হয় নাটকটি। নাটকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো এবং মেহজাবিন চৌধুরী। নাটকে আফরান নিশোর চরিত্রের নাম সাহেদ এবং মেহজাবিন চৌধুরীর চরিত্রের নাম ঋণী। ঋণী নাটকটি লিখেছেন রাজীব হাসান। ইতিমধ্যে ইউটিউবে ৩০ লক্ষ মানুষ দেখেছে নাটকটি।
রাজীব হাসান একধারে লেখক ও সাংবাদিক। বর্তমানে প্রথম আলোতে সহকারী ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। হরিপদ ও গেলিয়েন, আমাদের শহরে বাঘ এসেছিল, অভিরূপের অভিযান এই বই গুলো তারই লেখা। ঋণী নাটক নিয়ে কথোপকথন হয় তার সাথে……
সীমান্তঃ ঋণী নাটকটার মাধ্যমে আপনি দর্শকদের মাঝে কি বার্তা দিতে চেয়েছেন?
রাজীব হাসানঃ আমি তো ঈশপের গল্প লিখি না, ফলে আমার কোনো গল্পেই কোনো বার্তা থাকে না। আমি শুধু গল্পটা বলতে চাই। আমাদের জীবনে প্রতিদিনই কোনো না কোনো গল্প তৈরি হয়। কিন্তু সব গল্পই তো আমরা বাকিদের বলি না। বাকিদের বলার জন্য গল্পটার মধ্যে ‘বিশেষ কিছু’ থাকতে হয়। ফলে যে গল্প বলা হয়, সেই গল্পের মধ্যে এমনিতেই সেই ‘বিশেষ কিছু’ থাকে বলে সেখান থেকে পাঠক বা দর্শক তার মতো করে বার্তা খুঁজে নিতে পারে। আবার নাও পারে। শিল্পের মূল কাজ হলো অনুভূতি তৈরি করা, শেখানো নয়। ফলে আমি আমার কোনো গল্পে কী বার্তা দিলাম, এর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, আমার গল্পটা আমার পাঠক বা দর্শককে কোনো অনুভূতির সামনে দাঁড় করাল কি না। বার্তা দেওয়ার প্রবণতা বরং অনুভূতি তৈরির চেষ্টা করে নষ্ট করে।
সীমান্তঃ- সামনে কি আপনার লেখা আরো কোন নাটক পাবে আপনার শুভাকাঙ্ক্ষীরা?
রাজীব হাসানঃ- পেতেও পারে, নাও পেতে পারে। আমি আসলে অলস লেখক। ঘাড়ে বন্দুক না ঠেকালে আমি লিখতে বসি না। ঋণী লিখতে পেরেছিলাম মিজানুর রহমান আরিয়ানের জন্য। সে লিখিয়ে নিতে পেরেছে। ৫ বছর পর টিভির জন্য স্ক্রিপ্ট লিখলাম। কে জানে, আবার হয়তো ৫ বছর পরে লিখব।
সীমান্তঃ- আপনার চোখে ঋণী নাটকটা কেমন ছিলো?
রাজীব হাসানঃ- আামি আমার কোনো লেখা নিয়েই তৃপ্ত না। সব লেখাই শেষ করার পর মনে হয়, এটা কিছুই হয় নাই। সত্যি বলতে ঋণী যে এক দিনে এক মিলিয়ন মানুষ দেখবে, এটা আমার কল্পনার বাইরে ছিল। বিশেষ করে তখন আবার জাতীয় নির্বাচন একদমই দুয়ারে, নির্বাচনের সময় তো ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আমি নিজে উত্তর খুঁজেছি, এত মানুষ নাটকটা কেন পছন্দ করল? নাটকের সামগ্রিক গল্পটা ইউনিক কিছু নয়। বরং খুবই সাধারণ। হয়তো সাধারণ বলেই এটা অনেক মানুষ তাঁর নিজের জীবনের কোনো না কোনো অংশের সঙ্গে মেলাতে পেরেছে। তবে ঋণীর সাফল্যে আমার কৃতিত্ব ভগ্নাংশমাত্র। ভিজুয়াল ফরম্যাটে স্টোরিটেলিংয়ে লেখকের চেয়ে নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী এবং নেপথ্যের কুশলীদের ভূমিকা বেশি। বিশেষ করে মিজানুর রহমান আরিয়ানের কৃতিত্ব। উনি খুবই ভালো নির্মাতা। ঋণীর মূল গল্পটার ভাবনাও তাঁর। আমি শুধু দৃশ্য ও সংলাপ নির্মাণ করেছি।
সীমান্তঃ অমর একুশে বই মেলা ২০১৯ এ কি কোন বই বের করছেন?
রাজীব হাসানঃ এবারও প্রথমা থেকে বের হচ্ছে। ওই যে ঘাড়ে বন্দুক রাখার ব্যাপারটা, প্রথমা তো আমার কর্মক্ষেত্র প্রথম আলোরই সহযোগী প্রকাশনা। তা ছাড়া প্রথমার প্রধান নির্বাহী রাশেদ ভাই আমার গুরুস্থানীয়। উনি কিছু বলা মানে আমার জন্য সেটা নির্দেশ। ফলে প্রথমার জন্য লিখতে পেরেছি। বইয়ের নাম ‘বোকা বাবা ও কিডন্যাপার’। বই নিয়ে এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে চাইছি না।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেনঃ গোলাম মোর্শেদ সীমান্ত