ফটো সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান মিন্টু সম্প্রতি মুখোমুখি হন চ্যানেল আগামী’র। স্টাফ রির্পোটার শাকিলুর রহমানের সাক্ষাৎকারে তার শৈশব, ছোটবেলা ও ফোট সাংবাদিকতা নিয়ে অনেক কথা হয়।
চ্যানেল আগামীঃ কেমন আছেন?
মিন্টুঃ ভালো, তুমি?
চ্যানেল আগামীঃ জ্বী ভালো। আপনি ছোটবেলার ও শৈশব কীভাবে কাটতো শুনতে চাই?
মিন্টুঃ আমি একটি সুন্দর গ্রামে জন্মগ্রহণ করি। আমার নাটোরে গোপালপুর গ্রামে জন্ম, ১৯৬৬ সালের ২১ জানুয়ারি মাসে ।সেখান থেকে হাটি হাটি পা পা করে এই পর্যন্ত আসা। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মধ্যে দিয়ে আগাতে থাকি আমি সামনে দিকে এগিয়ে থাকে সে মানুষের অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকে। একজন সাধারণ মানুষের চেয়ে বেশি থাকে। সে জন্য জীবনে চ্যালেঞ্জ আসবে চ্যালেঞ্জকে ভয় পেলে চলবে না। আমি ছোট বেলাই অনেক মাছ ধরতাম আর ডাক টিকেট সংগ্রহ করতাম। আমি ছোট বেলা থেকেই বাবার হাতে ক্যামেরা দেখি। ছোট বেলা থেকে ফটো-সাংবাদিকতা করার অনেক ইচ্ছা। ১৯৭২-৭৩ সালের আমার দুর্লভ সুযোগ হয়েছিল ধানমন্ডিস্থ কবিভবনে কাজী নজরুল ইসলামকে দেখার। কবিভবনে গিয়েছিলাম বাবার সঙ্গে। সঙ্গে ছিল ছোট বোন ও বড় বোন। সেই দুর্লভও স্থির হয়ে আছে বাবার ক্যামেরায় তোলা ছবিতে। বাবার সুবাদে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে বঙ্গবন্ধুকে দেখার সুযোগ হয়।
চ্যানেল আগামীঃ আপনি কোন ক্লাস থেকে ফটোগ্রাফ করেন?
মিন্টুঃ ৯ম শ্রেনি থেকে ফটোগ্রাফ শুরু করি, এখন বয়স হবে ১৫ বছর মত।
চ্যানেল আগামীঃ একেবারে ছোট করে চিত্রশিল্পী হওয়ার গল্পটা যদি বলেন?
মিন্টুঃ আমি রাতারাতি চিত্রশিল্পী হতে পারিনি। দীর্ঘদিনের সাধনা, পরিশীলন ও পরিশ্রমের মধ্যদিয়ে আজ আমি নিজস্ব অবস্থান সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি। আমি একজন আলোকচিত্র শিল্পীই নয়, আমি বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী। ছোট বেলা থেকে ভেবে এসেছি আমি বাবার মত বড় ফোট সাংবাদিক হব। বাবা আলোকচিত্র শিল্পী, যিনি বাংলাদেশের অনেক ইতিহাস ঐতিহ্যের ছবি তুলে সাক্ষী হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত পছন্দের ফটোগ্রাফার। আমার বাবার মত হওয়া অনেক ইচ্ছা তাই ফটোগ্রাফার ও ফটো সাংবাদিক নেশা এবং পেশা হিসাবে নিয়েছি। আমি শুধু ফটো সাংবাদিক না একাধারে লেখক, প্রযোজক ও সফল পরিচালক। একুশ শতকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় ফটোগ্রাফিও পারে বিশাল ভূমিকা রাখি। তাই নতুন প্রজন্মের ‘মডেল ফটোগ্রাফী’ নামে একটি বই লেখি, যার মাধ্যমে একজন তরুণ অল্পসময়ে হয়ে উঠতে পারে সফল একজন ফটোগ্রাফার। ইতোমধ্যে এ বইটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছি। দেশের বাইরেও এ বইটি বেশ প্রশংসিত পেয়েছে। এছাড়াও আমার লেখা বই ‘চিরঞ্জীব শেখ মুজিব’, ‘বাঙালী জাতির মহানায়ক’, ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ বহুল আলোচিত হয়েছে। আমি প্রযোজনা করেছি প্যাকেজ নাটক ‘স্বাধীন’, পূর্ণদৈর্ঘ্য ছায়াছবি ‘মৌমাছি’, ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’ ও ‘শিল্পী’।
চ্যানেল আগামীঃ আপনার পছন্দের ফটো সাংবাদিক ও ফটোগ্রাফার কে?
মিন্টুঃ আমরা বাবা লুৎফর রহমান। আমি আমার বাবার কাছ থেকে সব শিখি।
চ্যানেল আগামীঃ আপনার জীবনের স্বপ্ন কি?
মিন্টুঃ আমি ছোট বেলা থেকে স্বপ্ন দেখি বাবার মত ফটো সাংবাদিক হব। আমার স্বপ্ন ফটো সাংবাদিক।
চ্যানেল আগামীঃ আপনার কি কি পত্রিকাই কাজ করছেন?
মিন্টুঃ নিউজ মিডিয়া দিয়ে আমরা কর্মজীবন শুরু। পরে ‘দৈনিক ইত্তেফাক’-এর মহিলাঙ্গনে দীর্ঘ দিন কাজ করেছি। বর্তমানে শোবিজ পত্রিকার প্রধান ফটোসাংবাদিক হিসেবে কর্মরত আছি। তাছাড়া বেতার বাংলা, সিনে তারকায়ও কাজ করছি। টাইল টিভিতে ফটো সাংবাদিক হিসাবে আছি। আমি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, উত্তরা ক্লাব এবং ফটোগ্রাফি সোসাইটির সদস্য হিসাবে আছি।
চ্যানেল আগামীঃ আপনার ক্যামেরা দিয়ে কার কার ছবি ধারণ করেছেন?
মিন্টুঃ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, সাবেক রাষ্ট্রপতিগণ সহ বর্তমানে রাষ্ট্রপতি, চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেন, কবি শামসুর রাহমান, সঙ্গীতশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্ন, রাভিনা টেন্ডন, নায়িকা শ্রীদেবী, রেখা, মুনমুন সেন, নায়ক শাহরুখ খান, সালমান খান, সালমান শাহ, সুনীল শেঠি, চলচ্চিত্ত অভিনেত্রী শাবানা, ববিতা, বিপাশা, শাবনূর, মৌ, রিয়া, বিখ্যাত ক্রিকেটার ইমরান খান, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অনেক বিখ্যাত গুণীজন ক্যামেরায় বন্দি করেছি।
চ্যানেল আগামীঃ সাধারণ বিষয়ও আপনার ক্যামেরায় অসাধারণ হয়ে ফুটে ওঠে কেন?
মিন্টুঃ এর পেছনে প্রধান কারণ হচ্ছে ছবি তোলার আগে মডেল ও আলোকচিত্রীর মাঝে মানসিকভাবে একটা বোঝাপড়া করি। আমার সব বাবার কাছ থেকে শিখা।
চ্যানেল আগামীঃ আপনি ফটোগ্রাফার এর জন্য কি কি পুরস্কার ও পদক পেয়েছেন?
মিন্টুঃ শেরে বাংলা পদক, মাদার তেরেসা পদক, কাজী নজরুল ইসলাম পদক, কবি আব্দুল হাকিম পদক, স্বাধীনতা সংসদ পদক, এশিয়ান চ্যারিটেবল সোসাইটি পদকসহ আরো অনেক পুরস্কার পেয়েছি।
চ্যানেল আগামীঃ আপনি এখন ফটো সাংবাদিক হিসাবে কি কি পত্রিকাই আছেন?
মিন্টুঃ আমি ‘দৈনিক ইত্তেফাক’-এর মহিলাঙ্গনে দীর্ঘ দিন কাজ করেছি। বর্তমানে শোবিজ পত্রিকার প্রধান ফটোসাংবাদিক হিসেবে কর্মরত। তাছাড়া বেতার বাংলা, সিনে তারকায়ও ফটো সাংবাদিক হিসাবে কাজ করি। টাইল টিভিতে ফটো সাংবাদিক হিসাবে আছি।
চ্যানেল আগামীঃ আপনার বাবা লুৎফার রহমানের সর্ম্পকে কিছু বলনে?
মিন্টুঃ আমার বাবা লুৎফর রহমান ছিলেন দেশের আলোকচিত্র শিল্পী, যিনি বাংলাদেশের অনেক ইতিহাস ঐতিহ্যের ছবি তুলে সাক্ষী হয়েছিলোন। তিনি ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত পছন্দের ফটোগ্রাফার। সেই সুবাদে তিনি বঙ্গবন্ধুর অনেক আলোচিত ছবি তাঁর ক্যামরয় ধারণ করেছেন। তাছাড়া তিনি বেতার বাংলার প্রকাশনা বিভাগে চাকুরি করেছেন। আমি ছোটবেলা থেকে দেখি বাবার হাতে ক্যামেরা। সেই ক্যামেরাই আজকে মিন্টুর খ্যাতি দেশময় ছড়িয়ে দিয়েছে। ১৯৭২-৭৩ সালের দিকে আমার দুর্লভ সুযোগ হয়েছিল ধানমন্ডিস্থ কবি ভবনে কাজী নজরুল ইসলামকে দেখার। কবি ভবনে আমি গিয়েছিল বাবার সঙ্গে। আমার সঙ্গে ছিল ছোট বোন ও বড় বোন। সেই দুর্লভও স্থির হয়ে আছে বাবা লুৎফর রহমানের ক্যামেরায় তোলা ছবিতে। আমার বাবার সুবাদে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে বঙ্গবন্ধুকে দেখার সুযোগ হয়। এখন বাবার কথা অনেক মনে পরে।
চ্যানেল আগামীঃ চ্যানেল আগামীকে সময় দেওয়া জন্য ধন্যবাদ।
মিন্টুঃ চ্যানেল আগামীকে ধন্যবাদ ও তোমাকেও ধন্যবাদ।