যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবার আলোচনায় বসছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান
সম্প্রতি সংঘাত অবসানের পর প্রথমবারের মতো সরাসরি আলোচনায় বসতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান। আগামী সপ্তাহে ইউরোপের একটি দেশে—সম্ভবত নরওয়ের রাজধানী অসলোতে—এই আলোচনার আয়োজন হতে পারে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এক্সিওজের বরাতে আনাদোলু এজেন্সি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলোচনা হবে মূলত ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ে। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ নিতে পারেন দেশটির মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ। তিনি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন।
দুইটি সূত্রের বরাতে বলা হয়, সম্প্রতি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক চরম উত্তেজনায় পৌঁছায়। এর প্রেক্ষিতে এই আলোচনা হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আলোচনার নির্দিষ্ট তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য নেই। একইভাবে, ইরানের জাতিসংঘ মিশনও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এর আগে ইসরায়েলের এক হামলায় ইরানের উচ্চপর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক নিহত হন। এরপর যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। ইরান এসব হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ ও পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (NPT) লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত করে।
জবাবে ইরানও ইসরায়েল অধিকৃত বিভিন্ন স্থাপনায় এবং কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল-উদেইদ সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালায়। পরিস্থিতি চরমে পৌঁছালে গত ২৪ জুন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।
ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া পোস্টে বলেন, “ইরান ও ইসরায়েল একটি পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই যুদ্ধবিরতি ১২ ঘণ্টা স্থায়ী হবে, এরপর একে চূড়ান্ত যুদ্ধসমাপ্তি হিসেবে ঘোষণা করা হবে।”
তিনি জানান, প্রথমে ইরান যুদ্ধবিরতি শুরু করবে এবং পরে ১২ ঘণ্টা পর ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে এতে অংশ নেবে। এইভাবে ২৪ ঘণ্টার মাথায় ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ সমাপ্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।
ট্রাম্প আরও লেখেন, “যুদ্ধবিরতির সময় উভয় পক্ষ শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক আচরণ বজায় রাখবে। আমরা ধরে নিচ্ছি, সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ীই এগোবে। এজন্য আমি ইরান ও ইসরায়েল উভয় পক্ষকে তাদের সাহস, ধৈর্য ও কৌশলের জন্য অভিনন্দন জানাই।