বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের ওপর নতুন করে আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিন মাসের আলোচনার পর বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ভারতের অর্থবিষয়ক সংবাদমাধ্যম লাইভমিন্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সিদ্ধান্তে ভারতের টেক্সটাইল খাত ব্যাপকভাবে লাভবান হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ হিসেবে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য হু হু করে বেড়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের খবরে ট্রাইডেন্ট, ওয়েলস্পান, গোকলদাস এক্সপোর্টস, কেপিআর মিল, বর্ধমান টেক্সটাইলস, আলোক ইন্ডাস্ট্রিজ, সিয়ারাম সিল্ক, কিটেক্স গার্মেন্টস ও অরবিন্দ লিমিটেডের শেয়ার দর ৩ থেকে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।
এর আগে বাংলাদেশের আমদানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কহার ছিল ৩৭ শতাংশ, যা সামান্য কমিয়ে ৩৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও এই হার এখনো অনেক বেশি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
ট্রাম্প সোমবার বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে একটি চিঠি দেন, যা তিনি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ প্রকাশ করেন।
চিঠিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে শুল্ক ও অশুল্ক বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বাণিজ্য ঘাটতির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অসামঞ্জস্যপূর্ণ বাণিজ্য সম্পর্ক পুনর্গঠনের অংশ হিসেবেই নতুন শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
এছাড়া, তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পণ্য পাঠিয়ে শুল্ক এড়ানোর চেষ্টা করা হলে, সেই পণ্যের ওপর আরও বেশি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ যদি মার্কিন বাজার পুরোপুরি উন্মুক্ত করে ও বাণিজ্য বাধাগুলো সরিয়ে নেয়, তাহলে এই শুল্ক হ্রাসের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে। একইসঙ্গে যদি কোনো বাংলাদেশি কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করে কিংবা কারখানা স্থাপন করে, তাহলে তাদের পণ্যের ওপর কোনো শুল্ক ধার্য হবে না।
তবে বাংলাদেশ যদি পাল্টা কোনো বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নেয়, তাহলে আরও কঠোর শুল্ক আরোপের ইঙ্গিতও দিয়েছেন ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, হোয়াইট হাউসের ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হওয়ার প্রাক্কালে এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। চিঠির মাধ্যমে ১৪টি দেশের শীর্ষ নেতাদের কাছে এই সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাঠানো হয়েছে।