মিয়ানমার ও এর বাইরের মানবাধিকারকর্মীদের অভিযোগ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের সহায়তায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণহত্যা, গণধর্ষণ করা হয়েছে। ফেসবুকে মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত জিহাদের প্রচারণার কারণেই এই গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের দাবি। মিয়ানমারসহ বিশ্বের নানা দেশের মানবাধিকারকর্মীরা সংবাদ সংস্থা সিএনএনকে জানায়, পোস্টগুলো সরকারপন্থী বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন থেকে ছবি নিয়ে সেগুলোকে মিথ্যা বা ভুল উপস্থাপনা করা হয়েছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কার্টুন বানিয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে।
ফেসবুক মেসেঞ্জারের উদ্ধৃতি দিয়ে মানবাধিকারকর্মীদের দলটি জানায়, মেসেঞ্জারে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে একটি মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত জিহাদের পরিকল্পনার কথা ছড়ানো হয়। মুসলিমদের বিরুদ্ধে সচেতন হতে বলা হয়। এমনকি ফেসবুকে এই তথ্যটি ছড়িয়ে দিতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এতে পরিষ্কার যে, ফেসবুকের এই বিভিন্ন মাধ্যমকে ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।
এই ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ পোস্টের প্রতিক্রিয়ার মিয়ানমারের একটি প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) এই পোস্টগুলোর স্ক্রিনশটসহ একটি খোলা চিঠি ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গকে পাঠায়। সংস্থাটি বলে, এই ধরনের প্রচারণা বন্ধ না করে, বরং নজিরবিহীনভাবে সারা দেশে ছড়িয়েছে। যার ফলে সারা দেশে ভীতি ছড়িয়েছে। এ ছাড়া অন্তত তিনটি ধ্বংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে।
এক সাক্ষাৎকারে মার্ক জাকারবার্গ এই খোলা চিঠির উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ফেসবুক এই হিংসাত্মক তথ্য শনাক্ত করেছে।
এদিকে, মানবাধিকার কর্মীরা জরুরি অবস্থায় উপযুক্ত পদ্ধতি গ্রহণের ক্ষমতা নেই বলে ফেসবুককে ভর্ৎসনা জানায়। স্থানীয় গ্রাহকদের ওপর নজরদারি ও স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে বলেও তাঁরা অভিযোগ করে। জাকারবার্গ বলেন, ‘হিংসাত্মক তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সত্য এবং মানুষের সাধারণ আলোচনাকে ঠিক রেখে আমরা এই হিংসাত্মক তথ্যগুলোকে মুছে ফেলতে চাচ্ছি। যা আমরা মিয়ানমারসহ যুক্তরাষ্ট্রে করছি।’
মানবাধিকারকর্মী জার্নি বলেন, ‘ফেসবুক নিরপেক্ষ, কিন্তু রাষ্ট্রই বিষাক্ত।’ তিনি আবার বলেন, ‘ফেসবুক একটি পশুতে পরিণত হয়েছে; প্রকৃতপক্ষে,পশুরা ফেসবুক ব্যবহার করছে। এই উস্কানিদাতারা মিয়ানমার সমাজের দুটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানের মানুষ। একদল মিয়ানমার সেনাবাহিনী, আরেকদল সন্যাসী।’