নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের কেন্দ্রস্থলে ঘটে গেছে একটি হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ড। সোমবার সন্ধ্যায় পার্ক অ্যাভিনিউয়ের একটি ৪৪ তলা ভবনে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালান এক বন্দুকধারী, যাতে প্রাণ হারান চারজন। নিহতদের একজন ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ বিভাগের সদস্য দিদারুল ইসলাম (৩৬)। হামলার পর বন্দুকধারী নিজেও আত্মহত্যা করেন।
নিউইয়র্ক পুলিশ কমিশনার জেসিকা এস. টিশ জানান, হামলাকারীর নাম শেন ডেভন তামুরা (২৭)। তিনি নেভাডার লাস ভেগাসের বাসিন্দা এবং বৈধ অস্ত্রধারী। যদিও তাঁর মানসিক সমস্যা ছিল বলে জানা গেছে, হামলার ঘটনার সঙ্গে তার সরাসরি সম্পর্ক এখনো নিশ্চিত নয়।
হত্যাকাণ্ডের বিবরণে জানা যায়, সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে একটি কালো বিএমডব্লিউ গাড়িতে করে শেন এসে ভবনের লবিতে প্রবেশ করেন এম৪ রাইফেল হাতে। প্রথমেই তিনি গুলি করেন পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামকে, যিনি সেদিন ছুটিতে থাকলেও ভবনটিতে কর্মরত ছিলেন। এরপর এক নারী ও ভবনের নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি চালান তিনি। এ সময় একটি লিফট থেকে নামা একজন নারীকে তিনি গুলি না করে ছেড়ে দেন।
পরে তিনি লিফটে করে ৩৩ তলায় গিয়ে একটি অফিসে ঢুকে আরও এক নারীকে গুলি করে হত্যা করেন এবং শেষে নিজেই আত্মহত্যা করেন।
নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এক বিবৃতিতে দিদারুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তিনি ছিলেন সাহসী, সৎ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগও তাকে ‘হিরো’ হিসেবে উল্লেখ করে জানায়, দিদারুল নিজের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন।
২০২১ সালে দিদারুল নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে যোগ দেন এবং ব্রঙ্কসের ৪৭ নম্বর প্রিসিঙ্কটে কর্মরত ছিলেন। তাঁর পরিবারে রয়েছে দুই সন্তান, এবং তাঁর স্ত্রী বর্তমানে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তাদের তৃতীয় সন্তানের জন্ম হওয়ার কথা।
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে নিউইয়র্ক শহর শোকস্তব্ধ এবং বাংলাদেশি কমিউনিটিতে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট