ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান তাঁর সাম্প্রতিক পাকিস্তান সফরে দেশটির পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। রবিবার (৩ আগস্ট) পাকিস্তানের রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি বলেন, “ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের ১২ দিনের আগ্রাসনের সময়ে পাকিস্তান সরকারের, সংসদের, রাজনৈতিক দলগুলোর এবং আলেম সমাজের সমর্থন আমাদের জন্য অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক ছিল।”
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও ১২টি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরের পর ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেন, “প্রিয় পাকিস্তানে এসে আমি খুবই আনন্দিত। এ দেশ আমার দ্বিতীয় ঘর। আতিথেয়তার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “ইরান-পাকিস্তান সম্পর্ক কেবল প্রতিবেশী নয়, বরং একটি গভীর ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। পাকিস্তানকে আমরা ভাইয়ের মতো দেখি, এবং এই সম্পর্ককে আরও গভীর করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে ৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য বিদ্যমান রয়েছে, যা স্বল্প সময়ের মধ্যেই ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার বিষয়ে উভয় দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সফরে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলো রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, পর্যটন, শিক্ষা, পরিবহন, কৃষি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতসহ বহুবিধ ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির অঙ্গীকার বহন করে।
বিশেষত সীমান্ত নিরাপত্তা, যৌথ অর্থনৈতিক অঞ্চল, রেল-সড়ক-নৌপথে পরিবহন, সীমান্ত বাজার এবং সীমান্ত শহরগুলোর নিরাপত্তা জোরদার—এই বিষয়গুলোতে উভয় দেশ চুক্তি করেছে। এছাড়া সীমান্তে সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৩ জুন থেকে ইসরাইল ইরানের সামরিক, পারমাণবিক এবং আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায়। ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের নাতাঞ্জ, ফরদো ও ইসফাহানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে বোমাবর্ষণ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) “অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩”-এর অংশ হিসেবে ইসরাইল অধিকৃত অঞ্চলে ২২ দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় এবং কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল-উদেইদ ঘাঁটিতে পাল্টা আঘাত হানে।
২৪ জুন যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে এই সংঘাতের সমাপ্তি ঘটে।