যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার নেহাল মোদি, ২ বিলিয়ন ডলারের ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত
বিশাল অঙ্কের ব্যাংক জালিয়াতির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার হয়েছেন ভারতের পলাতক ব্যবসায়ী নীরব মোদির ছোট ভাই নেহাল দীপক মোদি। প্রায় ১৪ হাজার কোটি রুপি, অর্থাৎ প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার (৫ জুলাই) এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) অনুরোধে ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিশের ভিত্তিতে গত ৪ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
এই গ্রেপ্তারকে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক (পিএনবি) দুর্নীতির তদন্তে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। নেহাল মোদিকে ভারতে প্রত্যর্পণ করতে দীর্ঘদিন ধরে আইনি ও কূটনৈতিক প্রক্রিয়া চলছিল। তিনি রেড কর্নার নোটিশের বৈধতা নিয়ে আপত্তি তুললেও তা খারিজ হয়ে যায়, যার পরেই গ্রেপ্তার সম্ভব হয়।
২০১৮ সালে প্রকাশ্যে আসা পিএনবি কেলেঙ্কারির মূল অভিযুক্ত ছিলেন নীরব মোদি। তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, তদন্তে বাধা দেওয়া এবং প্রমাণ নষ্ট করার অভিযোগ রয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডে তাকে সরাসরি সহযোগিতা করেন নেহাল মোদি। তদন্তে উঠে এসেছে, তিনি শেল কোম্পানি ও বিদেশি লেনদেনের মাধ্যমে দুর্নীতির অর্থ গোপন ও স্থানান্তর করেছেন।
এই মামলায় পরবর্তী শুনানি হবে ১৭ জুলাই। এর আগে নেহালের পক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হতে পারে, তবে মার্কিন প্রসিকিউশন জামিনের বিরোধিতা করার কথা জানিয়েছে।
ভারতের ইতিহাসে অন্যতম বড় এই ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে পিএনবি প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ কোটি রুপির ক্ষতির মুখে পড়ে। এর মধ্যে নীরব মোদির বিরুদ্ধে ৬ হাজার ৪৯৮ কোটি এবং তার চাচা মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে ৭ হাজার ৮০ কোটি রুপি আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
নীরব মোদিকে ২০১৯ সালের মার্চে যুক্তরাজ্যে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বর্তমানে লন্ডনের একটি কারাগারে বন্দি এবং ভারতের হাতে প্রত্যর্পণ ঠেকাতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, মেহুল চোকসি বর্তমানে অ্যান্টিগার একটি কারাগারে আটক।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে পিএনবি আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানানোর আগেই নীরব মোদি ও মেহুল চোকসি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। অভিযোগ রয়েছে, পিএনবির মুম্বাইয়ের ব্র্যাডি হাউস শাখার কিছু কর্মকর্তার সহায়তায় তারা এই বিশাল অর্থ জালিয়াতি করেন, যা ভারতের ব্যাংকিং খাতের অন্যতম বড় কেলেঙ্কারিতে পরিণত হয়।