মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক প্রভাব আরও শক্তিশালী করতে ইসরায়েলের মাটিতে সামরিক ঘাঁটি সম্প্রসারণ এবং অস্ত্রের মজুত বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এই উদ্যোগের আওতায় নির্মাণ করা হচ্ছে বিমানঘাঁটি, গোলাবারুদের গুদাম, হেলিকপ্টার ঘাঁটি ও অন্যান্য কৌশলগত স্থাপনা।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই-এর এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ এসব অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী ঠিকাদারদের আহ্বান জানিয়েছে। যদিও প্রকল্পের কাজ শুরুর কথা ছিল গত জুনে, তবে সাম্প্রতিক ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের কারণে তা কিছুটা পিছিয়ে গেছে।
ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ আরও জানায়, এই প্রকল্পগুলোর ব্যয় শুরুতেই ২৫ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে এবং ভবিষ্যতে তা ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে (১০০ কোটি ডলার) পৌঁছাতে পারে।
প্রকল্পের আওতায় থাকছে:
পুরোনো বিমানঘাঁটিগুলোর আধুনিকীকরণ
যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারের জন্য হ্যাঙ্গার নির্মাণ
জ্বালানি সরবরাহ কেন্দ্র ও মেরামতের ঘর
গোলাবারুদের গুদাম
দীর্ঘমেয়াদি সাত বছর মেয়াদি নির্মাণ ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প
আর্থিক সহায়তা ও তহবিল
এই প্রকল্পগুলোর অর্থায়নের বড় অংশই আসছে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সামরিক সহায়তা তহবিল থেকে। ইসরায়েল প্রতি বছর এই তহবিল থেকে প্রায় ৩৮০ কোটি ডলার পেয়ে থাকে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই অর্থ মূলত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামরিক ঠিকাদারদের মাধ্যমেই ব্যয় করা হয়।
এছাড়া ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা সমমূল্যের অতিরিক্ত সামরিক সহায়তা প্রদান করে।
অতীত নজির
এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে গোপন সামরিক স্থাপনা নির্মাণ করেছে। ২০১২ সালে ‘৯১১ নম্বর স্থাপনা’ নামে একটি গোপন ঘাঁটি গড়ে তোলে তারা, যা দীর্ঘদিন নজর এড়িয়ে যায়।
নিরাপত্তা প্রেক্ষাপট
রয়টার্স জানায়, ইরানের সাম্প্রতিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের কিছু সামরিক স্থাপনা আঘাতপ্রাপ্ত হলেও, চলমান অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ওই হামলার আগেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। যদিও এসব প্রকল্পের অবস্থান গোপন রাখা হয়েছে, জানা গেছে, সব কাজ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এমন তৎপরতা অঞ্চলটির ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা।