ভারতের নাগপুরে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর দাবিতে বিক্ষোভের পর তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। সোমবার দুপুরে সম্রাট আওরঙ্গজেবের কবর সরানোর দাবিতে নাগপুরের মহাল এলাকায় একটি বিক্ষোভ জমায়েত করে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দল। বিক্ষোভে আওরঙ্গজেবের একটি ছবি ও ঘাসে ভরা সবুজ কাপড়ে আবৃত একটি প্রতীকী সমাধি পুড়িয়ে দেয় তারা। পুলিশ জানায়, এদিন কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ভিএইচপির বিক্ষোভ চলাকালে মুসলিম সম্প্রদায়ের পবিত্র গ্রন্থ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন বেশ ক্ষুব্ধ হয় ও পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করে। সোমবার (১৭ মার্চ) নাগপুরের গণেশপেঠ, মহাল ও গান্ধীবাগ এলাকায় ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল সংঘর্ষ বাঁধে। এসময়, পাথর নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। এদিন, হিন্দু পুণরুত্থানবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএসের মূল কার্যালয়ের একেবারে কাছের এলাকাগুলোতেই এসব সংঘর্ষ বাঁধে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর ৬ জন বেসামরিক নাগরিক ও ৩ জন পুলিশ অফিসার আহত হয়েছেন। এদিন, জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাসও ছোঁড়ে পুলিশ। এছাড়া, নাগরিকদের প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বের হওয়ার আহ্বানও জানান তারা।মঙ্গলবার নাগপুর পুলিশ জানিয়েছে, কোটওয়ালি, গণেশপেঠ, তাহসিল, লাকড়গঞ্জ, পাচপাওলি, শান্তিনগর, সাক্কারদারা, নন্দনবান, ইমামবাড়া, যশোধরানগর ও কপিলনগর থানা এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।
এদিকে, মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দফতরের রাষ্ট্র মন্ত্রী যোগেশ কদম সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানান, এখনও সহিংসতার কারণ খুঁজে বের করা যায়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে। হনসাপুরি অঞ্চলের এক দোকান্দার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তিনি দোকান বন্ধ করছিলেন। এসময়, তিনি দেখেন একদল লোক গাড়িতে আগুন লাগাচ্ছে। দ্রুত তিনি পানি নিয়ে আগুন নেভাতে গেলে তারা তার মাথায় পাথর ছোঁড়ে।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা এএনআইকে জানান, সংঘর্ষ শুরুর আগে প্রথমে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে আক্রমণকারীরা। সবার মুখই ঢাকা ছিল। তারা ধারালো অস্ত্র, লাঠি ও কাঁচের বোতল নিয়ে এসেছিল। এসেই দোকানগুলোতে তারা হামলা চালায়, পাথর ছোঁড়ে ও গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়।