ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গ্রুপ হামাসকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। রোববার (১০ আগস্ট) চেন্নাইয়ের আইআইটি-মাদ্রাজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, হামাস, লস্কর-ই-তাইয়েবা (এলইটি), দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)সহ আরও কয়েকটি সংগঠন স্থায়ীভাবে ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণ। এতদিন ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা না করলেও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা বিশ্বের বহু দেশ ইতোমধ্যেই এই তকমা দিয়েছে। ফলে সেনাপ্রধানের এই মন্তব্য কৌশলগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
হামাস জাতিসংঘের ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় নেই। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার পর তারা আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক আলোচনায় আসে। ওই ঘটনার পর থেকে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
ভারতের অভিযোগ, ঐতিহাসিকভাবে কাশ্মীর ইস্যুতে জড়িত না হলেও এ বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের ‘কাশ্মীর সংহতি দিবসে’ পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) হামাস সদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেছে। তারা লস্কর-ই-তাইয়েবা, জইশ-ই-মোহাম্মদসহ পাকিস্তান সমর্থিত জঙ্গি সংগঠনের পোশাক পরিহিত ছিলেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ভারতের কাছ থেকে কাশ্মীর ছিনিয়ে নেওয়া হবে’ এমন বক্তব্য দিয়েছেন। এসব ঘটনা নয়াদিল্লির নিরাপত্তা মহলে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
এর আগে ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ইসরাইল হামাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছিল। তবে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার কারণে ভারত তখন সেই পদক্ষেপ নেয়নি।
জেনারেল দ্বিবেদীর সাম্প্রতিক মন্তব্য ইঙ্গিত করছে যে, ‘অপারেশন সিঁদূর’-এর পর ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী নীতি দক্ষিণ এশিয়ার বাইরেও বিস্তৃত হতে পারে এবং কাশ্মীর প্রেক্ষাপটে যুক্ত হওয়া আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোকেও এর আওতায় আনা হতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি