গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মিশরের প্রথম প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ মুরসি মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছেন বলে সংশয় প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। দেশটির বর্তমান আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসি সরকার তাকে অস্বাস্থ্যকর একটি কারাগারে আটকে রেখেছে বলেও অভিযোগ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের একটি কমিটির। খবর আল জাজিরার।
এছাড়া কারাগারে তাকে নানারকম নির্যাতনের পাশাপাশি মানসিকভাবে নির্যাতন করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে জানিয়ে গত বুধবার ব্রিটিশ সাংসদ ও আইনজীবীদের একটি প্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, কারাগারে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা না দেওয়ায় যেকোনো সময় মৃত্যুর কাছে পরাজয় বরণ করতে পারেন দেশটিতে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসি। বিশেষ করে ডায়াবেটিস ও লিভার রোগের কোনো চিকিৎসাসেবা না দেয়ায় তার স্বাস্থ্য ক্রমেই খারাপ অবস্থার দিকে যাচ্ছে বলে মত দেন তারা।
আবদেল ফাত্তাহ আল সিসিকে অভিযুক্ত করার পাশাপাশি মুরসির প্রতি এসব অবিচার আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়। দেশটিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আর এ নির্বাচনে আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন সিসি। এমন সময়েই প্রতিবেদন প্রকাশ করলো ব্রিটিশ এ প্যানেল। জানা যায়, টুরা প্রিজনে গত তিন বছর ধরে একটি কক্ষে একাই থাকেন মুরসি। ওই কক্ষে তার সঙ্গে কাউকে মিশতে দেওয়া হয় না। শুধু তাই নয়, তার শরীরে অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে গেলেও তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে না।
ব্রিটিশ সংসদের ওই প্যানেল আরও জানায়, তারা মুরসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চায়। তার শারীরিক অবস্থা কেমন আছে, তা দেখারও দাবি জানায় সংগঠনটি। ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট সিসি দেশটির প্রথমবারের মতো নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত হন। তবে এক বছরের মাথায় তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিশরের জনগণ। ২০১৩ সালের প্রথমদিকে দেশটির ক্ষমতা দখল করে আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির নেতৃত্বাধীন মিশরের সেনাবাহিনী।
এরপর মুরসিকে গ্রেপ্তার করে মিশরের নির্যাতন সেল খ্যাত টুরা প্রিজনে পাঠানো হয়। পরে তিন মামলায় তাকে ৪৮ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। প্রেসিডেন্ট ভবনের বাইরে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার আদেশ দেওয়ায় তাকে ২০১৫ সালে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এরপর ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে আরও ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। ২০১৭ সালে আদালত অবমাননার দায়ে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।সূত্র: আল-জাজিরা