যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন অস্ত্র ও বিমান কেনার পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত করেছে ভারত। দেশটির তিনজন সরকারি কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের পর দুই দেশের সম্পর্ক কয়েক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। এই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ভারতের প্রথম বড় অসন্তোষ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের ওয়াশিংটন সফরে কয়েক শ কোটি ডলারের অস্ত্র কেনার ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুল্কবিষয়ক অনিশ্চয়তার কারণে সেই সফর বাতিল হয়েছে।
শুল্ক ও বাণিজ্য বিরোধ
ট্রাম্প ৬ আগস্ট ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫% অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন, যা নিয়ে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ৫০%—যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অংশীদারদের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ হার। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে অর্থ জোগাচ্ছে।
ভারত জানিয়েছে, শুল্ক সমস্যা ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্বচ্ছতা না আসা পর্যন্ত প্রতিরক্ষা কেনাকাটা এগোবে না।
স্থগিত হওয়া ক্রয় পরিকল্পনা
স্থগিত হওয়া আলোচনার মধ্যে রয়েছে—
-
স্ট্রাইকার যুদ্ধযান (জেনারেল ডায়নামিকস)
-
জ্যাভলিন ট্যাংকবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র (রেথিয়ন ও লকহিড মার্টিন)
-
নৌবাহিনীর জন্য ৬টি বোয়িং পি৮১ নজরদারি বিমান
এসব চুক্তির মোট সম্ভাব্য মূল্য প্রায় ৩৬০ কোটি ডলার।
রাশিয়ার সঙ্গে ঐতিহ্যগত সম্পর্ক
ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক এবং ঐতিহ্যগতভাবে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফ্রান্স, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র থেকেও কেনাকাটা বেড়েছে, তবুও রক্ষণাবেক্ষণ ও দীর্ঘমেয়াদি সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য রাশিয়ার ভূমিকা এখনো গুরুত্বপূর্ণ।
দিল্লি জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল পেলে রাশিয়া থেকে আমদানি কমাতে পারে। তবে মার্কিনবিরোধী মনোভাব ও রাজনৈতিক বাস্তবতা মোদির জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়াকে কঠিন করে তুলেছে।