ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেনে সহিংসতা অব্যাহত রাখায় রাশিয়ার ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) হোয়াইট হাউসে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিন আমাদের উদ্দেশে অনেক আজেবাজে কথা বলেছেন। তিনি অনেক মানুষকে হত্যা করছেন—এর মধ্যে ইউক্রেনীয় সেনা যেমন আছে, তেমনি নিজের সেনারাও।’
নতুন নিষেধাজ্ঞা?
রাশিয়ার বিরুদ্ধে সিনেটে প্রস্তাবিত একটি নিষেধাজ্ঞার বিল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।’ তবে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা খোলাসা করেননি তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমি আপনাদের বলব না। আমরা কি একটু চমক রাখতে পারি না?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেমন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় পরিকল্পনা অনুযায়ী হামলা করেছি, তেমনি প্রয়োজন হলে রাশিয়ার ক্ষেত্রেও কঠোর পদক্ষেপ নেব।’
ইউরোপের অবস্থান
এদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে এক ভাষণে বলেন, ‘ইউরোপ কখনোই ইউক্রেনকে ছেড়ে দেবে না। যুদ্ধবিরতির জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’ তিনি জানান, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স মিলে একটি নতুন জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে, যারা স্বেচ্ছায় ইউক্রেনকে সাহায্য করতে আগ্রহী।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা অব্যাহত
যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প একাধিকবার পুতিনের সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে যোগাযোগ করেছেন বলে জানালেও যুদ্ধ বন্ধ হয়নি। বরং ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ইউক্রেনকে আরও ‘আত্মরক্ষামূলক অস্ত্র’ সরবরাহ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও বুলেটপ্রুফ সামগ্রী।
তবে অস্ত্র মজুদের ঘাটতির কারণে কিছু সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার কথাও জানিয়েছে পেন্টাগন। এ বিষয়ে অস্ত্র সক্ষমতা নতুন করে ‘পর্যালোচনা’ চলছে বলে জানানো হয়।
রাশিয়ার সাম্প্রতিক অবস্থান
গত মে মাসে ইউক্রেন-রাশিয়া আলোচনায় অগ্রগতি হলেও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘মস্কো আলোচনার তারিখের জন্য ইউক্রেনের দিকে তাকিয়ে আছে।’
এদিকে রাশিয়া ইউক্রেনের দনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের ডাচনে নামক একটি গ্রাম দখলে নেওয়ার দাবি করেছে। সর্বশেষ সপ্তাহগুলোতে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের শহরগুলোতে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের কূটনৈতিক অবস্থান এবং সামরিক সহায়তার সিদ্ধান্ত আগামী দিনে যুদ্ধের গতিপথে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। একইসঙ্গে, ইউক্রেন-রাশিয়া আলোচনার উদ্যোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনার কিছুটা প্রশমন ঘটাতে পারে।