হাসান ইনাম
মীর মহাম্মদ সাদেক আলী খান। বাংলার ইতিহাসের প্রখ্যাত বিশ্বাসঘাতক মীর জাফরের গুণধর (!) পুত্র। ইতিহাসে যাকে আমরা মীরণ নামেই চিনি।
পলাশী ষড়যেন্ত্রর অন্যতম প্রধান নায়ক ছিলেন এই মীরণ। মীরণ শুধু সিরাজ হত্যাকান্ডের মূল নায়ক নয়, সে আমিনা বেগম এবং ঘষেটি বেগমের হত্যার সাথেও জড়িত ছিল। নবাব পত্মী লত্ফুন্নেসাকে অপমান এবং মীর্জা মেহেদীকে নিষ্ঠুর ভাবে হত্যার করার নায়কও তিনিই। এক কথায় বলতে গেলে মীর জাফরের সকল অপকর্মের অন্যতম বা প্রধান সহযোগী ছিলেন তিনি। কি পরিণতি হয়ে ছিল এই হীনচেতা মানুষটার ? জানতে খুব ইচ্ছে করে। চলুন একটু ঘেঁটে আসি ইতিহাস।

“অক্সফোর্ড হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া” তে ভিনসেন্ট এ স্মিথ লিখেছেন –
মীরণকে ইংরেজদের নির্দেশে হত্যা করেছিল মেজর ওয়ালস।
অপর দিকে ‘মুর্শিদাবাদ কাহিনী’ তে নিখিল নাথ রায় লিখেছেন –
মীরণের মনে স্বাধীনতার ইচ্ছা বলবত হওয়ায় মীর কাশিমের সাহায্যে তাঁকে কৌশল পূর্বক নিহত করা হয়। পরে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রকাশ করা হয়।
এবার ? আমরা কোন সূত্রে ধরে আগাবো ??
ইতিহাস এ একটা বিষয় খুব ইন্টারেস্টিং। খলনায়কদের মৃত্যুর সঠিক কারণ কখনই সুস্পষ্টভাবে পাওয়া যায় না। কারো কারো ক্ষেত্রে বিষয়টা ভিন্ন।
মীরণের মৃত্যু যেভাবেই হোক না কেন , নৃশংস ভাবে হয়েছে। করুন মৃত্যু হয়েছে।
মীরণের মৃত্যুর জন্য ইংরেজ এবং মীর কাশিম উভয়কেই সন্দেহ করা যেতে পারে। মীর জাফর তখন ছিলো নামমাত্র নবাব। ‘বজ্রপাতে সন্তানের মৃত্যু হয়েছে’ এমন সাজানো গল্প বিশ্বাস করেনি সে। তারপরও নিজের নবাবী জীবন রক্ষার্থে কিছুই করতে পারেনি মীর জাফর। কাপুরুষের মতো চোখের পানিই ফেলেছে।
সূত্র :
১. অক্সফোর্ড হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া
– ভিনসেন্ট এ. স্মিথ
২. মুর্শিদাবাদ কাহিনী
– নিখিল নাথ রায়
৩. পলাশী ট্রাজেডির ইতিবৃত্ত
– জেহাদ উদ্দিন