শোক দিবস না প্রচারণা দিবস
পনেরই আগস্ট বাঙালি জাতির জন্য শোক পালনের দিন হলেও হাল আমলে তা প্রচারণা দিবস ছাড়া অন্য কিছু মনে করা বেশ দুঃসাধ্য ব্যাপারই বটে। শোক দিবসের অন্তত এক সপ্তাহ আগে থেকে দেয়ালে দেয়ালে ছেয়ে যায় কাঁদো বাঙালি কাঁদো লেখা পোস্টার, যার কোণায় জাতির জনকের রক্তমাখা ছবি ছাপা থাকলেও সিংহভাগটা জুড়েই থাকে এলাকার ছোট থেকে বড়, উঁচু থেকে নিচু সব নেতা আর সেবকদের নাম ঠিকুজি কুষ্ঠি। এসব পোস্টার দেখে বোঝা দায়, এ কী আদৌ শোক প্রকাশ করে ছাপানো পোস্টার নাকি নাম আর দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের বাহানামাত্র !
ব্যাপারটা এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকলেও হতো। কিন্তু, পনেরই আগস্ট সকাল থেকে রাস্তার মোড়ে মোড়ে বাজানো শুরু হয় সাতই মার্চের ভাষণ আর বেদনাভরা গান, চলে বারোটা অব্দি। তারপর নেতাদের মনে সন্তুষ্টি জাগে, হ্যা বেশ, অনেক হয়েছে শোক পালন, এবার শোককে শক্তিতে পরিণত করা যাক। সেই শক্তির বহিঃপ্রকাশ দেখা যায় এলাকা কাঁপিয়ে বাজানো কালা চশমা আর ব্রেকআপ সং এ। বাহ, কী অসাধারণ শোক পালন !
না, শোক পালনের পালা শেষ হয়নি এখনো। দুপুরের খানিক আগে গলির মুখে বিশাল সাইজের হাড়ি পাতিল চাপিয়ে শুরু হয় আলুর বিরিয়ানি রান্না। বিকেলে সেই রান্না শেষ হলে প্যাকেট হয়ে তা পৌঁছে যায় নেতাদের বাড়ি। বারে, সাোদিন শোক পালন করে ক্লান্ত নেতাদের ক্ষুধা পায়না বুঝি !
আর কত অরাজকতা দেখবে বাংলাদেশ ? শোক দিবস পালনের নামে এই যে কাড়ি কাড়ি টাকা জলান্জলি দেয়া হয়, এই টাকায় কি মালিবাগ মৌচাক রাস্তাটা মেরামত করা যেতনা ? এই টাকায় কি একশোটা গরিব পরিবারে চাল কিনে দেয়া যেতনা ? পঞ্চাশটা সেলাই মেশিন কি পেতে পারতেন না অসহায় মহিলারা ?