-সালমান সাদ
বাঙালি মুসলমান উপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক মীর মোশাররফ হোসেনের একশত ছয়তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯১১ সনের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমান বাংলাদেশের রাজবাড়ি জেলার বালিয়াকান্দির পদমদী তে তার দাফন সম্পন্ন হয়। জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি এখানেই কাটান।
তৎকালীন বাংলাসাহিত্যে মুসলমানদের ভাগ্যরবি মীর মোশাররফ হোসেন ১৩ ই নভেম্বর ১৮৪৭ সালে বৃটিশ ভারত বর্তমান বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার চাপড়াখানি ইউনিয়নের লাহিড়ীপাড়ায় তার জন্ম হয়। পিতা মীর মোয়াজ্জেম হোসেন মাতা মীর দৌলতুন্নেছা।
উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাগদ্যের উন্মেষকালে তার অবদান অপরিসীম।
মীর মোশাররফ হোসেন তার আল্লাহপ্রদত্ত বহুমুখী প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে উপন্যাস, নাটক, প্রহসন, প্রবন্ধ ইত্যাদি রচনা করে মুসলিম রচিত আধুনিক বাংলা সাহিত্যে সমৃদ্ধ ধারার প্রবর্তন করেন।
ইমাম হোসেনের কারবালার বিষাদময় আখ্যান কে উপজীব্য করে লেখা তার উপন্যাস ‘বিষাদ সিন্ধু ‘ তার শ্রেষ্ঠ রচনা। বাংলা সাহিত্যে সর্বাধিক প্রচারিত ও পঠিত ধ্রুপদী উপন্যাসগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। তৎকালীন মুসলিম সমাজের অনেকেই তার এই ‘বিষাদ সিন্ধু’ উপন্যাসটিকে ধর্মীয় গ্রন্থর মত ঘরে রাখতো ও পাঠ করতো। উপন্যাসগ্রন্থটি আজো জনপ্রিয় ও বহুলপ্রচারিত ও পাঠ্য। তবে অতিরঞ্জন, ঐতিহাসিক তথ্যাবলীতে ভ্রান্তিসংযোগের কারণে গ্রন্থটি কিছুটা বিতর্কিত।
মীর মোশাররফ হোসেনের উল্লেখযোগ্য রচনাবলী হলো
‘রত্নবতীগল্প’ (গদ্যে রচিত প্রথম বাঙ্গালী মুসলমান রচিত গল্প) ‘বসন্তকুমারী ‘ (বাংলা নাটক সাহিত্যে মুসলিম সাহিত্যিক রচিত প্রথম নাটক নাটকটি তিনি নওয়াব আবদুল লতিফকে উৎসর্গ করেন)
এছাড়া ও হজরত ইউসোফ, হজরত বেলালের জীবনী, হজরত আমীর হামজার ধর্মজীবন লাভ, মদিনার গৌরব, এসলামের বিজয়, খোতবা, পঞ্চ নারী পদ্য, রাজিয়া খাতুন, প্রেম পারিজাত, বাঁধা খাতা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।