ফারহানা ইসলাম
মৌলিক কর্মসূচী
এই ভীতিপ্রদ ও রক্তক্ষয়ী স্কীম বাস্তবায়নে সে যে মৌলিক পদ্ধতি অনুসরণ করে-তা ছিল নিম্নরূপ:
মান্যবর ও ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের কবজায় আনতে সম্পদকে ব্যবহার করা। সাফল্যের স্বর্ণচূড়ায় পৌঁছতে প্রয়োজনে নারীদের ভোগসামগ্রী হিসেবে পেশ করা’। যাতে করে আমাদের উদ্দেশ্যে বাস্তবায়নে এরা পথের হয়ে যাতে এরা আমাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের পথে বাঁধা দাঁড়ায়। বরং তারা হবে আমাদের দাবারগুটি।
‘আমাদের সংগঠনের যে শিক্ষকমন্ডলী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন তাদের কর্তব্য হলো- প্রতিভাবান, প্রখরমেধাসম্পন্ন ছাত্রদের কবজায় রাখা। তাদের চিন্তা-চেতনায় আমাদের ধ্যান-ধারনার প্রসার ঘটানো। এ চিন্তা-চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার পর তাদেরকে আমাদের বিশেষ স্কুলগুলোতে প্রশিক্ষণ দেওয়া’। বর্তমানে তাদের বর্তমানে তাদের তিনটি স্কুল এই কর্মসূচী আনজাম দিচ্ছে:
প্রথমটি স্কটল্যান্ডের শহর গর্ডন্স টাউনে অবস্থিত।
দ্বিতীয় জার্মানীর শহর ছালামে ।
তৃতীয়টি গ্রীসের শহর অ্যানাভ্রিটায় ।
তাদের তৃতীয় প্রধান কর্মসূচী হল- তথ্য-প্রযুক্তি ও মিডিয়ার (রেডিও, টিভি ও পত্রিকা) উপর করায়ত্ব কায়েম করা। যাতে এগুলো তাদের মর্জি মাফিক আবর্তিত হয়। (আল-মাসূনিয়্যাহ: ৩০)
এই ভয়াবহ প্ল্যান তৈরী করে, একে অবিশ্বাস্য সাফল্যের দ্বার প্রান্তে পৌঁছানোর পর ১৮৩০ সালে আদীম ওয়েইস হাপটের জীবনাবসান ঘটে।
সংস্করের অন্তরালে
তাদের অঘোষিত শ্লোগান খুবই চমৎকার ও সম্মোহিনী। কিন্তু এর বাস্তব ও প্রকৃত অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্নরূপ। আদীম ওয়েইস হাপট প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে ‘বৈশ্বিক সরকার’ প্রতিষ্ঠার যে শ্লোগান উত্তোলন করেছিল-তাতে প্রভাবিত হয়ে অজস্র বুদ্ধিজীবি ও বৈজ্ঞানিকরা তার পতাকাতলে সমবেত হন। কিন্তু এই শ্লোগান শুধু শ্লোগানই ছিল, যাতে করে গুণীজনকে কবজা করা যায়। তার মূল লক্ষ্য ছিল বিশ্বের যাবতীয় ধর্ম-মতবাদের বিলোপ সাধন। যার মোটামোটি ধারণা পাওয়া যায়-১৮২৯ সালে অনুষ্ঠিত ‘নিউইয়র্ক কনফারেন্সে’ তাদের ‘রাইট’ নামী এক বক্তার সম্ভাষণ থেকে। সে বলেছিল- ‘আমাদের সংগঠন ধর্মদ্বেষী, নাস্তিক ও সন্ত্রাসী মুভমেন্টের সমন্বয়ে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন’। আা আর ঠিক এই বছর )আর ঠিক এই বছর (অর্থাৎ ১৮২৯ সালে) কমিউনিজাম বা সমাজতন্ত্রের আবির্ভাব হয়। ‘বৈশ্বিক সরকার’ প্রতিষ্ঠার শ্লোগানধারী এই সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা এতই ভয়াবহ যে-‘স্বীয়হীন স্বার্থ চরিতার্থে এরাই রক্তক্ষয়ী প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংঘঠিত করে’। এটা কোন লৌকিকতা নয়, এটা কোন লেৌকিকতা নয়, বরং বাস্তব ও প্রমাণসিদ্ধ। ১০ আগষ্ট ১৯৭১ সালে লিখিত ‘পাইকের’ হস্তলিখিত চিটি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে এখন সংরক্ষিত আছে। যাতে এই যুদ্ধগুলোর প্ল্যান ও লক্ষ্যের বিশদ বর্ণনা রয়েছে।
রহস্যাবৃত ফ্রীম্যাসন
এই আন্দোলন মানব সভ্যতার সর্বাধিক অন্তর্গূঢ় আন্দোলন। এর সদস্যদের রয়েছে ৩৩টি স্তর। প্রতি স্তরের সদস্য উর্ধ্বস্থ সদস্য সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অপারিজ্ঞাত।
নবাগত সদস্যকে প্রথমে একটি ঘুটঘুটে অন্ধকার কক্ষে নিয়ে আসা হয়। সেখানে থাকে মানব দেহের কঙ্কাল, খুলি ও বিষাক্ত কৃত্রিম সাপ। এই কক্ষকে বলা হয় ‘চিন্তা-ভাবনার কক্ষ’। এর দ্বারা নবাগতকে শিক্ষা দেয়া হয় এর দ্বারা নবাগতকে শিক্ষা দেয়া হয় যে- উঁচুস্তর লাভের জন্য সমূহ প্রতিকুল অবস্থা অতিক্রম করতে হবে। গৃহাভ্যন্তরে একজন চীফ অবস্থান করে। সে নবাগতের উদ্দেশ্যে পূনরাবৃত্তি করতে থাকে-তুমি কি ফ্রীম্যাসন হতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ?? নবাগত যদি প্রত্যুত্তরে ইতিবাচক জবাব দেয়, তা হলে গাইড তাকে চক্ষু বন্ধ করে গলায় রশি বেঁধে একটি হলরুমে নিয়ে যায়। সেখানে দুইটি খুঁটির মধ্যবর্তী স্থানে তাকে নানাবিধ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। অবশেষে তাকে বলা হয়-‘তুমি একটি দুরুহ পরীক্ষার মুখোমুখি হতে যাচ্ছ। তাই অঙ্গীকার ও পাক্কা হলফ উঠানোর পূর্বে চাইলে তোমার সোনলী অতীতে ফিরে যেতে পার’। যদি নবাগত অটল ও অবিচল থাকে তাহলে যদি নবাগত অটল-অবিচল থাকে চীফ তাকে এক গ্লাস সুপেয় ও অপর গ্লাস তিক্ত পানি পান করিয়ে বলে – ‘মানব জীবন এই তিক্ততায়ও বিনাশ হতে পারে’।