ফিচার ডেস্ক-
‘বস’, একনামে যাকে সবার চেনা; সেই কার্টুনের জাদুকর আহসান হাবীবের জন্মদিন আজ। কমিক অঙ্গনে ছোট বড় সবার পছন্দ এবং জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন আহসান হাবীব। তাঁর আঁকা কমিকের চরিত্র, কার্টুন বাংলাদেশের প্রত্যেক কমিকপ্রেমীর কাছে একেকটি বিপ্লবের পরিচায়ক।
ছোটবেলায় জন্মদিনগুলো খুব সাদামাটা ভাবেই পালন করা হত এই লেখকের। বার্থডে কেক কিংবা দামী দামী উপহারের চেয়ে ১১ বছর বয়স থেকে নিজের দাদাভাইয়ের (হুমায়ুন আহমেদ) কাছ থেকে পাওয়া বইগুলো ছিল তার কাছে স্বপ্নের সিঁড়ির মতো। বইয়ের মধ্যে শুভেচ্ছাবাণী হিসেবে লেখা থাকত ‘দাঁভাসের জন্মদিনে দাদাভাই’। ছোটবেলা থেকেই আহসান হাবীবের ছবি আঁকার প্রতিভার প্রস্ফুটন ঘটেছিল তাঁর বড় ভাই হুমায়ুন আহমেদের হাত ধরে। বাবার সিদ্ধান্তেই প্রতি সপ্তাহে বাড়িতে সবার আঁকা চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হতো। বড় ভাইদের মতো পড়াশোনায় খুব ভাল না হলেও কিশোর বয়সে কার্টুনের ক্যারেক্টার আঁকায় অর্জন করেছেন অসংখ্য সম্মাননা আর পুরষ্কার।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল তিনি স্কুলে পড়াকালীন সময়ে আট বারের বেশি স্কুল পরিবর্তন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিনি ভূগোলে এমএসসি অর্জন করেন। ১৯৮০ সালে ‘উন্মাদ’ পত্রিকার সম্পাদকের ভূমিকায় কার্টুনিস্ট হিসেবে তিনি তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেন। ‘উন্মাদ’ ছাড়াও তিনি ‘মৌলিক’, ‘অটোলাইন’, ‘ঘুড্ডি’ সহ বেশ কিছু বাংলা সায়েন্স ফিকশন ম্যাগাজিনের উদ্ভাবক। ছবি আঁকার পাশাপাশি কলেজ জীবন থেকে বিভিন্ন পত্রিকায় নিজের লেখা দুই- তিন লাইনের কবিতা প্রকাশিত হবার মধ্য দিয়ে তাঁর লেখক হবার বাসনা পূরণ হয়। তাঁর লেখা নন- ফিকশন উপন্যাসগুলোর মধ্যে ‘আবজাব’, ‘লিখতে লিখতে লেখক’, ‘বাবা যখন এক্কেবারে ছোট’, ‘ইশকুল টাইম’, ‘অফিস টাইম’, ‘যাহা বলিব মিথ্যা বলিব’, ‘ভুত যখন ghost’ কিশোরদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এছাড়াও ‘পাওয়েন ব্রন্সকির বিচার’ নামে তিনি একটি মজাদার সায়েন্স ফিকশন উপন্যাসও রচনা করেছেন।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী মিনার রহমানের স্কেচবুক দেখে তিনিই সজোড়ে বলে উঠেছিলেন, ‘একেই আমার চাই’।
জীবন থেকে নেয়া তার কমিকের প্রত্যেকটি চরিত্র হয়ে উঠুক জীবন্ত, ভাস্বর; জোকসের পাতায় পাতায় অট্টহাসির আমেজ লেগে থাকুক এই লেখকের জীবনে।
শুভ জন্মদিন ‘বস’।
লেখা-সাবা সিদ্দিকা সুপ্ত