-অনিরুদ্ধ সাজ্জাদ।
প্রতিদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে শিশির ভেজা আলপথে খালি পায়ে হাঁটতে যাই।গ্রাম্য এই প্রকৃতির সাথে আমি অনেকদিনের পরিচিত।প্রতিদিনই মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেখি রাজকীয় সুর্যোদয়ের অমুল্য এক দৃশ্য।এই সুর্য যখন বীরদর্পে উত্তাপ ছড়িয়ে উপরে উঠতে থাকে তখন আমারো মনে হয় আমাকে কিছু করতে হবে।
দিনের শুরুটা হয় এই কিছু একটা করার প্রত্যয় নিয়েই। নিজের জন্যে ,পরিবারের জন্যে, সমাজের জন্যে কিংবা দেশের জন্যে। মাঝেমাঝে যখন নিজেকে খুব ব্যর্থ আর অর্থহীন মনে হয় তখন একান্তেই ভাবতে বসি,,-বাবা কত কষ্ট করে উপার্জন করছে আর সেই যৎসামন্য উপার্জন দিয়ে হাসিমুখে সংসারটা চালিয়ে নিচ্ছে মা।শুধু সন্তানকে বড় করে তোলার জন্য।
আমি এই বাবা মায়ের সন্তান হয়েই তাদের জন্য হলেও কিছু করতে চাই।
গ্রামের কাঁচাপথ দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় মাঠ থেকে চাষী কাকু চিৎকার দিয়ে বলে, বাজান ভালো কইরা পড়ালেখা করো তাইলে আর আমার লগে ক্ষেতে নামতে অইবো না। টং দোকানদার যখন বলে, মামা স্কুল পলাইও না ,এসব ভালা না।কিংবা গ্রামের মুরুব্বির হাস্যমুখের আদেশ, খোকা খারাপ পোলাপানের সাথে মিশিস না।
তখন তাদের থেকেই প্রেরণা পাই, এই সমাজের জন্যে, এই মানুষদের জন্যে আমাকে কিছু একটা করতে হবে। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে নিজের অর্জিত যৌগ্যতাটুকু দিয়ে।
ক্লাসে স্যাররা যখন পড়ায় কিভাবে ত্রিশ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছিল, বাংলার বীর সন্তানেরা শহীদ হয়েছিল একটি দেশের জন্যে।আমি সেই সোনার দেশে জন্ম নিয়েছি।আমার কি পরম সৌভাগ্য!।এই দেশটির জন্যেও তো আমাকে কিছু একটা করতে হবে।শুধু কিছু একটা না অনেক কিছুই করতে হবে।
এই কিছু করার প্রেরণারাই আমাদের মনে স্বপ্ন জাগায়।আমাদের এই স্বপ্নগুলোই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।বেঁচে থাকার প্রেরণা জোগায়।এই স্বপ্নগুলো নিয়েই হয় আরেকটি সোনালী দিনের শুরু।