জুবায়ের খান
জে এস সি নিয়ে কিছু কথা বলবো। জানিনা সবাই কি হিসেবে নিবে তবে আমি আমার দৃষ্টিকোণ থেকে বলছি। জে এস সি আসলে কিছুই না। এই পরীক্ষার ফলাফলকে এতোটা সিরিয়াস হিসেবে নেয়ার কিছুই নেই।
শিক্ষার্থীরা সাধারণত দুটি কারণে এই পরীক্ষাকে সিরিয়াস হিসেবে নিচ্ছে। এক হলো সে পরীক্ষাকে স্বেচ্ছায় সিরিয়াস হিসেবে নিচ্ছে অথবা অভিভাবক কিংবা প্রতিবেশির প্রভাব।
আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন থেকে বলছি। আমি সবে একাদশে পড়ছি। হ্যা খুব বেশি বড় হইনি তবে অষ্টম শ্রেনি অতিক্রম করেছি প্রায় তিন বছর হয়ে গেছে । একদা আমি ক্লাস টিটারের কাছে গিয়েছি এবং জিজ্ঞাসা করেছি,
স্যার জে এস সি’র সার্টিফিকেট টি পাইনি।
স্যার হাসতে হাসতে আমাকে অপ্রত্যাশিত এক উত্তর দিলেন।
তিনি বললেন,
জে এস সি সার্টিফিকেট দিয়ে কি ঝালমুড়ি খাবি?
এমন কি এখন পর্যন্ত আমি জে এস সি সার্টিফিকেটের দেখা পাইনি অর্থাৎ আমার প্রয়োজন হয়নি।
ভবিষ্যতে প্রয়োজন হবে কি?
ভবিষ্যতেও প্রয়োজন হবে বলে মনে হয়না, কেননা ভবিষ্যতে প্রধান দুটি বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল অর্থাৎ এস এস সি ও এইচ এস সি পরীক্ষার ফলাফল ভুমিকা রাখে বলেই সবসময় দেখে এসেছি।
তাই বলা যায়, তোমাদের জীবন সবে শুরু। অর্থাৎ নবম শ্রেনী থেকেই শুরু তোমাদের জীবন। পড়ালেখা কে সিরিয়াস নেয়ার উপযুক্ত সময় এটাই। তাই অন্যথায় এই পরীক্ষার ফলাফলকে সিরিয়াস নেয়ার প্রয়োজন নেই। এই ফলাফল ভালো হলে তা তোমার আত্মবিশ্বাস কে বাড়াবে আর যদি ফলাফল খারাপ হয়ে থাকে তাহলে তা তোমাকে নতুন উদ্যমে পড়ালেখা করার উৎসাহ জোগাবে।
কিন্তু আমাদের সমাজে পরীক্ষার্থীরা ফলাফল কে যতটা না সিরিয়াস হিসেবে গ্রহন করছে তারচেয়ে বেশি গ্রহন করছে অভিভাবকেরা। অভিভাবকেরা যেমন তাদের সন্তানদের প্রভাবিত করছে ঠিক তেমনি তারাও প্রতিবেশি থেকে প্রভাবিত হচ্ছে যা শিক্ষার্থীদের জন্য মোটেও ইতিবাচক নয়।
দেখা যায়, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের আগেই প্রতিবেশিরা অস্থির হয়ে যাচ্ছে । একের পর এক ফোনে কল করে বলছে , ভাই/ভাবি আপনার ছেলের রেজাল্ট কি?
আর তাঁদের এই জিজ্ঞাসা অভিভাবকদেরও ভয়ানক ভাবে প্রভাবিত করছে । তারা চিন্তিত থাকে, যদি তার সন্তান এ+ না পায় তাহলে প্রতিবেশিদের মুখ দেখাবে কি করে?
অন্যদিকে সন্তানের উপর তখন চলতে থাকে মাত্রাতিরিক্ত মানসিক চাপ যা এই বয়সে তার ধারন করা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতি।
প্রতিবেশিরাও তো কোনো না কোনো সন্তানের অভিভাবক। তাদের উদ্দেশ্যে বলা মানে প্রতিটি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলা। আপনারা এই ফলাফল কে সিরিয়াস হিসেবে গ্রহন করবেন না। যদি সন্তান ফলাফল ভালো করে তাহলে তাঁকে উৎসাহ দিন ভবিষ্যতে আরো ভালো কিছু করার । আর খারাপ করে থাকলে হতাশ হবেন না । যদি আপনি হতাশ হন তাহলে তা আপনার সন্তানের মাঝে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই খারাপ করা স্বত্যেও তাঁকে উৎসাহ দিন যেন ভবিষ্যতে ভালো ফলাফল করতে পারে । কেননা জীবন তো সবেই শুরু। আর জি পি এ পাঁচের পিছনে না ঘুরাঘুরি করে সন্তান স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখুন। তাহলে আমাদের দেশ হবে সুন্দর। শিক্ষার মান যেমন বাড়বে ঠিক তেমনই আপনার সন্তান বিশ্বের সামনে দেশকে মাথা উঁচু করে তুলে ধরতে পারবে।