নাফিসা নুজহাত
১৯৭০ সাল থেকে মিয়ানমারের রাখাইন সম্প্রদায়ের মুসলিমরা বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে প্রবেশ করেছে।তবে ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে “মুসলিম নিধন কর্মসূচী” তাদের গণহারে এদেশে আসতে বাধ্য করে।২০১৭ এর ২৫ আগষ্ট থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অত্যাচারে প্রচুর মানুষ আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে,যার ১বছর পেরিয়ে গেছে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গ্রামের সকল ঘরে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে,মহিলাদের গণধর্ষণ করে,শত শত মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে কলঙ্কজনক এক অধ্যায় যুক্ত করেছে। জাতিসংঘ,ইউনিসেফের মত জনকল্যাণমূলক সংস্থাগুলো এগিয়ে এসেছে বাস্তহারা এসব মানুষের মানবিক অধিকারের কথা চিন্তা করে।বাংলাদেশ সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে তাদের খাদ্য,চিকিৎসা নিশ্চিত করে যাচ্ছে।তবুও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর জানা যায় যেমন- ডিপথেরিয়া হয়ে ৯জনের মৃত্যু,৭০০ জনের আক্রান্ত হওয়া নিশ্চিত হয়েছে।১ বছর পার হওয়ার পর ও কেমন আছেন অভিবাসীরা?
জুন ২০১৮ পর্যন্ত ৭০০,০০০ রোহিঙ্গার বাংলাদেশে অবস্থানের তথ্য পাওয়া গেছে।এর মধ্যে ৩৫০,০০০ জনই শিশু।সম্প্রতি সেভ দ্যা চিলড্রেন এর ১৩৯ জন শিশুর উপর গবেষণায় দেখা গেছে,৭০ ভাগ শিশু সহিংসতায় মা-বাবা হতে বিচ্ছিন্ন.৬৩ ভাগ শিশু সেনাবাহিনীর আক্রমণের সময় বিচ্ছিন্ন হয়েছে পরিবার থেকে,৯ ভাগ শিশু বাংলাদেশে পালিয়ে আসার সময় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে।প্রায় ৬০০০ এর মতো শিশু পরিবার ছাড়া একা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।এসব শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিভিন্ন সংগঠন থাকলেও অনেক অধিকার হতে বঞ্চিত হতে হচ্ছে তাদের।মিয়ানমারে অবস্থানকালেও শিক্ষার সুযোগ হতে তারা বঞ্চিত ছিল বলে জানায়।
শিক্ষা,বেকারত্ব এই অভিবাসীদের মধ্যে অপরাধ বাড়িয়ে দিয়েছে,কক্সবাজার,নাফ নদী,চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে ইয়াবা ব্যবসা,মাদক সেবন ইত্যাদির সাথে রোহিঙ্গারা জড়িত হয়ে পড়ছে।মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী অং সান সূচীর নিরব ভূমিকা রোহিঙ্গাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য দীর্ঘশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে।
মানসিক পরিপক্বতার আগে এমন মানসিক ধাক্কা ও নাগরিকতার পরিচয়ের দ্বন্ধের মাঝে আটকে পড়া শিশুরা চায়, অনিশ্চিত অদূর ভবিষ্যতের মেঘাচ্ছন্ন আকাশটায় আলোর মুখ দেখতে।।