Saturday, May 24, 2025
27 C
Dhaka

চিরতরুণ ওয়ারফেজ

জাকারিয়া খান

তখন ছিলো আজম খান, ফকির আলমগির, ফিরোজ সাঁই, ফেরদৌস ওয়াহেদ, পিলু মমতাজ, নকিব খান,ফুয়াদ নাসের বাবুদের মত গুণি শিল্পীদের যুগ। ৭১ এ যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে এদের মত শিল্পীরা প্রচলন শুরু করেন পপ মিউজিকের। গান গুলো শ্রোতারাও দারুণ ভাবে গ্রহন করে নেয়। সেটা ছিলো বাংলাদেশের ব্যান্ড মিউজিকের প্রথম ধাপ। পপ মিউজিক পুরোদমে শ্রোতাপ্রিয় হতে থাকে। এমন সময় সেন্ট জোসেফ স্কুলে পড়ুয়া কিছু ডানপিটে বালক শুরু করেন রক মিউজিক। ব্যান্ডের নাম দিলেন “ওয়ারফেজ”। পপ সংগীতের যুগে রক সংগীত বাংলাদেশের মানুষের কাছে এক নতুন নাম। ১৯৮৪ সালের ৫ই জুন সেন্ট জোসেফ স্কুলে পড়ুয়া একদল গান পাগল ক্ষ্যাপা কিশোরদের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে কালজয়ী ব্যান্ড “ওয়ারফেজ”। এই কিশোরগুলোই সর্বপ্রথম বাংলাদেশে রক মিউজিকের প্রচলন ঘটান।পপ সংগীতের যুগে এই ঘরানার গান আধুনিকই বটে! শুরু থেকেই তাদের ইচ্ছে ছিলো রক-হেভি মেটাল গান করার। এমনই আশা নিয়ে গান শুরু করেছিল ঢাকার ৪টি নতুন ব্যান্ড – ওয়ারফেজ,এইসেস , ইন ঢাকা ও রকস্ট্রাটা। এদের মাঝে শুধুমাত্র ওয়ারফেজই এখন পর্যন্ত টিকে আছে ।

শুরুতে ওয়ারফেজের লাইন আপ ছিলো- কমল (বেস), হেলাল (ড্রামস), বাপ্পী (ভোকাল) এবং মীর ও নাইমুল (গিটার)। তবে এই লাইন আপ খুব বেশিদিন স্থায়ী হতে পারে নি। বাপ্পী,হেলাল ও মীর ব্যান্ড ছেরে দেন। এরপর বেস গীটার ছেড়ে লীড গীটার বাজাতে শুরু করেন ইব্রাহীম আহমেদ কমল । শেখ মনিরুল আলম টিপু দায়িত্ব নেন ড্রামসের। বাপ্পীর পরিবর্তে লীড ভোকালিস্ট হিসেবে যোগ দেন রাশেদ। তখন থেকেই ওয়ারফেজের ড্রামার হিসেবে আছেন টিপু। একমাত্র এই জায়গাটায় কখনো পরিবর্তন ঘটতে দেখা যায় নি। আর তাইতো তিনি এখন ব্যান্ডটির দলনায়কের ভুমিকা পালন করছেন! কিছুদিনের মাঝেই ওয়ারফেজের ভিতর আরেকদফা পরিবর্তন ঘটে। নাইমুল ব্যান্ড ছেড়ে দিয়ে আমেরিকা চলে গেলে ইন ঢাকার কী-বোর্ডিস্ট ফুয়াদ, গীটারিস্ট মাশুক অতিথি শিল্পী হিসেবে বাজাতে থাকেন। বলে রাখা ভালো প্রথম দিকে ওয়ারফেজ ইংরেজি গান কাভার করত। বিভিন্ন বড় অনুষ্ঠানে ইংরেজি গান শোনানোর জন্য তাদের বায়না করে নেওয়া হতো। সে সময় তারা হোয়াইটস্নেক, ডিপ পার্পল ও আয়রন মেইডেনের গান কাভার করত।

আস্তে আস্তে ওয়ারফেজের সুনাম, সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এভাবে করে একদিন তাঁরা বাংলা ব্যান্ড সংগীতের অন্যতম পুরাধা ও সমাজসচেতন শিল্পী মাকসুদুল হকের নজরে আসেন। একদিন মাকসুদুল হক তাদের নিয়ে মীরপুর পল্লবীতে আলোচনায় বসেন। আলোচনার মুল টপিক ছিলো “কিশোররা কেনো বাংলা গান করছে না?” প্রায় কয়েক ঘন্টা আলোচনার পর কিশোররা মাকসুদ সাহেবের কথা মেনে নিলো। এর পরে শুধুই ইতিহাস। মাকসুদ সাহেবের অনুপ্রেরণাকে কাজে লাগিয়ে কিশোরের দল বাংলায় রক-হেভি মেটাল গান শুরু করে ও ১৯৯১ সালের ২৬শে এপ্রিল বামবার একটি কনসার্টে গান গেয়ে রীতিমত সারা ফেলে দেয়। তখন তারা সিদ্ধান্ত নেয় অ্যালবাম বের করার। অবস্য এরই মাঝে ওয়ারফেজের লাইন আপে তৃতীয় রদবদল হয়ে গেছে। কয়েকজন মেম্বার পড়ালেখার জন্য দেশের বাইরে চলে গেলে ব্যান্ডে যোগ দেন হৃদয় কারা গলার শিল্পী সাঞ্জয়। তখন তাদের লাইন আপ হয় – সাঞ্জয়(ভোকাল), কমল(লীড গীটার), বাবনা(বেজ), টিপু(ড্রামস) ও রাসেল(গীটার,কি-বোর্ড)।

১৯৯১ সালের ২৮শে জুন “ওয়ারফেজ” শিরোনামে বের হয় তাদের প্রথম অ্যালবাম। আগেই বলেছি বাংলাদেশে রক মিউজিক সে সময়ে একদমই নতুন নাম। তাই একটু সময় নিলেও ওয়ারফেজের প্রথম অ্যালবাম দারুণ হিট করে। ওয়ারফেজই প্রথম ব্যান্ড যারা রক মিউজিক করে সাফল্যের মুখ দেখে। এর আগে রকস্ট্রাটা একটা অ্যালবাম বের করলেও তেমন শ্রোতাপ্রিয়তা করে তুলতে পারে নি। প্রথম অ্যালবামের “একটি ছেলে”, “বসে আছি একা”, “স্বাধিকার”, “কৈশর” এখনো মানুষের মুখে মুখে থাকে। “বসে আছি” ও “একটি ছেলে” এই গান দুটো এতটাই জনপ্রিয় যে প্রায় প্রত্যেকটা কনসার্টেই তাদের অবশ্যই গাইতে হয়। ১৯৯২ ও ১৯৯৩ সালে টানা দুবার “কোকাকোলা ব্যান্ড অ্যাওয়ার্ড” এ সেরা ব্যান্ডের পুরষ্কার পায়। তৎকালীন সেরা ব্যান্ড ফিডব্যাক, সোলস, উচ্চারণ এদের পিছনে ফেলে সেরা ব্যান্ডের কাতারে চলে আসে ওয়ারফেজ।

প্রথম অ্যালবাম হিট হওয়ার পর তাঁরা দ্বিতীয় অ্যালবাম নিয়ে কাজ শুরু করে। তবে আবারো জটিলতায় পরতে হয় তাদের। রাসেল আর কমল পড়াশোনার জন্য বিদেশে চলে গেলে ওয়ারফেজের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পরে। রাসেল-কমল ছুটিতে দেশে আসলে চলে রেকর্ডিং। এভাবে করেই ১৯৯৪ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর প্রকাশ পায় ওয়ারফেজের দ্বিতীয় অ্যালবাম “অবাক ভালোবাসা”। এই অ্যালবামটির টাইটেল ট্র্যাক গেয়েছিলেন বাবনা করিম এবং এই গানটি দারুণ শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছিল। অসাধারণ লিরিক্স ও কম্পোজিংয়ের গানটি এখনো অনেক জনপ্রিয়। দ্বিতীয় অ্যালবাম প্রকাশের পর পরই ব্যান্ড ছেড়ে আমেরিকা পাড়ি জমান রাসেল আলী। তবে সেখানেও তিনি মিউজিককে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। ১৯৯৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঈদের মধ্যে বের হয় ওয়ারফেজের তৃতীয় অ্যালবাম “জীবনধারা”। প্রথম দুটো অ্যালবামের চেয়ে একটু আলাদা করার লক্ষ্য নিয়েই এই অ্যালবাম করা। হার্ড রক ছেড়ে এবার একটু সফট রক উপহার পেলো ওয়ারফেজ ভক্তরা। এই অ্যালবামে যুক্ত হয় নতুন আরেকজন মেম্বার যার নাম ফুয়াদ ইবনে রাব্বি। জীবনধারা অ্যালবামের বাবনার কণ্ঠে “মৌনতা” ও গানটি ছিলো এক কথায় অসাধারণ। এছাড়া সাঞ্জয়ের গলায় “ধুপছায়া” গানটি ছিলো মায়াকারা এক ধরনের গান।

এবার একটু পিছনে ফেরা যাক, রাসেল আলীর সাথে বাবনা করিমও বিদেশে চলে গিয়েছিলেন। ছুটিতে ফিরে রেকর্ডিং এর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। জীবনধারা অ্যালবামটিই ওয়ারফেজের সাথে বাবনার শেষ অ্যালবাম। ১৯৯৮ সালের ২ এপ্রিল, রোজার ঈদে মুক্তি পায় ওয়ারফেজ তথা বাংলাদেশের রক মিউজিক ইতিহাসের অন্যতম সেরা অ্যালবাম “অসামাজিক” । এই অ্যালবামে যুক্ত হন দেশ সেরা বেজ গীটারিস্ট বেসবাবা-সুমন (অর্থহীন) ও লীড গীটারিস্ট আসিফ ইকবাল জুয়েল। যে অ্যালবামে রয়েছে দেশ সেরা বেজ গীটারিস্ট, দেশ সেরা লীড গীটারিস্ট ও দেশ সেরা ড্রামারদের সংমিশ্রণ সেই অ্যালবাম কি হিট না হয়ে পারে! এই অ্যালবামের সেরা তিনটি গান “অসামাজিক”, “ধুসর মানচিত্র” ” ও “অশনি সংকেত” বাংলা রক মিউজিকে আলাদা ভাবে স্থান করে নিয়েছে। এই অ্যালবামের পরেই ওয়ারফেজ সবথেকে সংকটাপন্ন অবস্থা পার করে। ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে ব্যান্ড ত্যাগ করেন হৃদয় গ্রাসী শিল্পী সাঞ্জয়। ভক্তদের হতাশ করে ব্যান্ড ছেড়ে চলে যান সাঞ্জয়। আর এই সাঞ্জয়ের বিকল্প খুঁজে পেতে ওয়ারফেজকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল সুদীর্ঘ দুইটি বছর। অতঃপর ওয়ারফেজ ও তার ভক্তরা পায় বর্তমান লীড ভোকাল মিজানকে। এরই মাঝে পুরো ব্যান্ড আবারো এলোমেলো হয়ে যায়। কমল আর টিপু বাদে পুরোনো বাকি সবাই ব্যান্ড ত্যাগ করে। নতুন যোগ দেন বালাম (ভোকাল, গিটার), শামস (কি-বোর্ড) ও বিজু(বেজ)। উল্লেখ্য, বালাম অনেক আগে থেকেই ওয়ারফেজের সাথে ছিলেন। অষ্টম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে তাঁর লেখা একটি লিরিক্স নিয়ে ওয়ারফেজ গান করেছিল।

নতুন লাইন আপ নিয়ে ২০০১ সালে মুক্তি পায় পঞ্চম অ্যালবাম “আলো”। গত তিনটি অ্যালবামের মত এটিও যথারীতি শ্রোতারা তৃপ্তি সহকারে খেয়েছে। এই অ্যালবামে মিজানের গলায় “বেওয়ারিশ” গানটি প্রবল জনপ্রিয়তা লাভ করে। এছাড়া বালামের গাওয়া “সময়”, “যত দুরে”, “সেই স্মৃতি গুলো” গানগুলোও দারুণ সমাদৃত হয়। আর মিজানের গলায় হতাশা গানটিতো ছিলো আগুনের গোলা! সাঞ্জয়-বাবনা চলে যাবার পর এই অ্যালবামটিই সবচেয়ে বেশি ব্যবসা সফল হয়।। “আলো” অ্যালবাম কমলের আপন ছোট ভাইকে উৎসর্গ করা হয়। যিনি সরক দুর্ঘটনায় অকাল মৃত্যুবরণ করেছিলেন ২০০২ এ ব্যান্ড ত্যাগ করে মিজান ব্যক্তিগত কাজে বিদেশে পারি জমান । এর কিছুদিন পরেই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ব্যান্ড ত্যাগ করেন প্রতিষ্ঠা সদস্য কমল ও ২০০৬ এ অর্থহীনে যোগদান করেন। একা হয়ে পরেন আরেক সিনিয়র সদস্য টিপু। তবে জাহাজের অভিজ্ঞ নাবিক টিপু শক্ত হাতে ব্যান্ডের নেতৃত্ব দেন। কমলের জায়গায় আসেন সাজ্জাদ আরেফিন । মুল ভোকালে আসেন বালাম। সে বছর বিজুও ব্যান্ড ছেড়ে দেন। বেজ গিটারে আসেন সেজান। নতুন লাইন আপে ২০০৩ সালে বের হয় ওয়ারফেজের পঞ্চম অ্যালবাম “মহারাজ”। এই অ্যালবামে বালামের গলায় আরও কিছু আগুন ঝড়া গান উপহার পায়। “মহারাজ’ অ্যালবামের টাইটেল ট্র্যাক এতটাই জনপ্রিয় যে “একটি ছেলে”, “বসে আছি একা”র মত প্রত্যেকটা কনসার্টেই গাইতে হয়। এছাড়া “সুখ”, “বাঙালিরা আর কত দেখবে”, “সাইক্লোন”, “স্বপ্ন তুমি নও” গান গুলো ভালোই জনপ্রিয়তা পায়।

এরপর, ২০০৬ এ লীড গীটারিস্ট সাজ্জাদ আরেফিন ওয়ারফেজ ছেড়ে দেন। প্রায় একই সময় সেজানও পড়াশোনার তাগিদে বিদেশে গমন করেন। সেজানের জায়গায় পাকাপাকি ভাবে যোগ দেন রজার। কিছুদিন পর প্রচলিত ধারায় সলো ক্যারিয়ারের উদ্দেশ্যে ভোকালিস্ট বালামও ওয়ারফেজ ত্যাগ করেন। কমল ২০০৭ এ অর্থহীন-ওয়ারফেজ উভয় ব্যান্ডেই বাজান। ওদিকে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসছে যে! মিজান আবার ওয়ারফেজে জয়েন করলে পরিবারটি পুনরায় আগের মত হতে থাকে। সাথে ভাইব ব্যান্ডের গীটারিস্ট অনি হাসান যুক্ত হন। অনি নিজের গীটার বাজানোর দক্ষতার মাধ্যমে খুব সহজেই স্থান করে নেন ওয়ারফেজ ভক্তদের হৃদয়ে। এবার ওয়ারফেজের লাইন আপ দাঁড়ায়- ভোকাল: মিজান, লীড গীটার : কমল, সেকেন্ড গীটার : অনি হাসান, বেজ গীটার: রজার, ড্রামস : টিপু। এই লাইন আপ নিয়ে, ২০০৯ সালে “পথচলা” নামের একটি অ্যালবাম বের করে যাতে পুরোনো কিছু গান নতুন করে রেকর্ড করা হয়। অবশ্য নতুন দুটি গানও থাকে- “তোমাকে” ও “অমানুষ”। এদের মধ্যে দারুণ লিরিক্স ও কম্পোজিশনের মিলন হওয়ায় অমানুষ গানটি ব্যাপক প্রশংসা কুড়োয়। ফলে শ্রোতারাও ভালোভাবেই হজম করে নেয় অ্যালবামটি।
আগের লাইন আপ নিয়েই ওয়ারফেজ ২০১২ সালে বের করে তাদের সপ্তম অ্যালবাম “সত্য”। অ্যালবামটিতে রূপকথা, সত্য, না, আগামি, প্রজন্মের মত প্রভৃতি নতুন গান শ্রোতাপ্রিয়তা লাভ করে। এছাড়া ২০০০ সালের একটি অপ্রকাশিত গানও এই অ্যালবামে যুক্ত হয়। সম্প্রতি তাদের লাইন আপে আবারও রদবল ঘটেছে। লেখাপড়ার জন্য ইউনাইটেড কিংডমে পারি জমিয়েছেন লীড গীটারিস্ট অনি হাসান। তার বদলে এসেছেন পাওয়ারসার্জের সামির হাফিজ । ভোকাল মিজান বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ব্যান্ড ত্যাগ করলে শূন্যস্থান পূরণ করছে রেডিওঅ্যাক্টিভের পলাশ নুর। তাহলে ওয়ারফেজের বর্তমান লাইন আপ দাঁড়াচ্ছে পলাশ(ভোকাল), কমল(লীড গিটার), সামির(লীড গিটার), রজার(বেজ), শামস(কিবোর্ড) ও টিপু (ড্রামস)।
দেখেতে দেখতে এই ওয়ারফেজ পার করে ফেলল ৩২ টি বছর। এই ৩২ বছরে কত যে চড়াই উতরাই পার করেছে তা আমরা প্রতিনিয়ত লাইনআপের রদবল দেখে সহজেই বুঝতে পারি । ওয়ারফেজের মত বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যান্ডদল দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কেননা যতবারই ভাঙনের মুখ থেকে ফিরে এসেছে ততবারই ফিরে এসেছে আগের চেয়ে আরও রুদ্রমূর্তি ধারণ করে। প্রতিবারই দুর্দান্ত বাউন্স ব্যাক করেছে ও ভক্তরা পেয়েছে দারুণ সব আগুনের গোলা । এ সবকিছু সম্ভব হয়েছে টিপু ও কমলদের মত যোগ্য নেতার জন্য। শিরোনামে বলেছি চিরতরুণ ওয়ারফেজ । আসলে কাগজে কলমে বয়স বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু তাদের শ্রোতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর তাদের লাইভ পারফরমেন্স দেখে তো মনে হয় ২০ বছরের যুবক বুক উচিয়ে গান করছে!! আবার দেখুন লীড গীটারিস্ট কমলের স্টাইলও অনুকরণ করছে এদেশের অসংখ্য তরুণ। মাথায় স্ট্রেইট লম্বা চুল, তার ওপর কান টুপি, কুনুই পর্যন্ত ওঠানো কালো ফুল হাতাওয়ালা টি-শার্ট। এত গ্ল্যামার যাঁদের আছে তাদের তরুণ সম্বোধন না করে কি পারা যায়?
বাংলাদেশে হার্ড রক-হেভি মেটাল ঘরানার গান ওয়ারফেজই এনেছিল। আগে মানুষ রক মিউজিক বলতে বুঝত শুধু দ্রিম দ্রিম শব্দ আর কান ফাটানো চিৎকার। কিন্তু ওয়ারফেজ সবাইকে বুঝিয়েছে দ্রিম দ্রিম শব্দ, চিৎকার চেঁচামেচি দিয়ে রক মিউজিক হয় না। রক মিউজিকের একটা নিজস্ব স্টাইল আছে। ভালোবাসা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে তাঁরা সেই স্টাইলকে রপ্ত করে নিয়েছেন। অবশ্যই তাদের ড্রামার টিপু ও গীটারিস্ট কমল দেশসেরা মিউজিসিয়ানদের একজন। কোথায় কোন সুর দিতে হবে তা খুব ভালোভাবেই জানা আছে তাদের। স্প্যানিশ গীটারে বাংলায় সুর দিতে জানেন । আর তাইতো গত তিন দশক ধরে বাংলা ব্যান্ডের এক নম্বর স্থান ধরে রেখেছে তাঁরা। বর্তমানে নতুন যেসব হেভি মেটাল রক ব্যান্ড মঞ্চ কাঁপাচ্ছে তাদের সকলের আইডল হয়ে আছে ওয়ারফেজ।
ছবিঃ সংগৃহিত (গুগল সার্চ)

Hot this week

নীল শাড়ি রূপা আর এক হিমালয়ের হিমু

সেদিন হিমালয় থেকে হিমু এসেছিল। মো. মোস্তফা মুশফিক তালুকদার। মাথার উপর...

সিজিপিএ বনাম অভিজ্ঞতা — মাহফুজা সুলতানা

বন্ধু, তোমার সিজিপিএ আমায় ধার দিও। বিনিময়ে,আমার থেকে অভিজ্ঞতা নিও।...

‘দেবী’কথনঃ একটু খোলামেলাই!

জুবায়ের ইবনে কামাল আপনি কি দেবী সিনেমা নিয়ে আমার মতই...

শরৎকাল: কাশের দেশে যখন প্রকৃতি হাসে !

ইভান পাল || আজ কবিগুরুর একটা গান ভীষণ মনে পড়ছে--- "আজি...

মাওঃ সাদ সাহেবের যত ভ্রান্ত উক্তি

বেশ কিছুদিন যাবৎ মাওঃ সাদ সাহেবকে কেন্দ্র করে তাবলীগ...

সিরাজদিখানে অপারেশন ডেভিল হান্টে আওয়ামীলীগ নেতা ফেরদৌস গ্রেফতার

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনা করে ফেরদৌস (৫৫)...

আইএসপিএবি ২০২৫ নির্বাচনে আমিনুল হাকিমের নেতৃত্বে ‘আইএসপি ইউনাইটেড’ প্যানেল

আসন্ন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) ২০২৫–২০২৭...

বাংলাদেশ থেকে ১.৫ মিলিয়ন টন আম নিতে আগ্রহী চীন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কেন্দুয়া ঘাসুড়া এলাকার একটি রপ্তানিযোগ্য আমবাগান...

‘স্টারলিংক‘-এর লাইসেন্স অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের এনজিএসও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘স্টারলিংক‘-এর লাইসেন্স অনুমোদন করেছেন প্রধান...

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আরপিএল: সম্ভাবনা ও গুরুত্ব

আরপিএল বর্তমান বিশ্বে দক্ষ মানবসম্পদ গঠনের জন্য প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি...

কালীগঞ্জে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে অভিভাবক সমাবেশ

গাজীপুরের কালীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী ‘নরুন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে’ শিক্ষার মানোন্নয়নের...

দৈনিক যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন ফিরে পেলেন শফিক রেহমান

দৈনিক যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন ফিরে পেলেন বর্ষিয়ান সাংবাদিক শফিক রেহমান।...
spot_img

Related Articles

Popular Categories

spot_imgspot_img