স্বপ্নদ্রষ্টা; ‘জনসেবায় সর্বদা উন্মুখ’ – স্লোগান এবং তিনটি মূলমন্ত্র ‘শিক্ষা, মানবতা ও সেবা’ নিয়ে ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল যাত্রা শুরু করা একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সামাজিক কল্যাণমূলক সংগঠন। টিফিনের টাকা জমিয়ে সমাজের অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ভাবনা নিয়ে গঠিত সংগঠনটি আজ গুটি গুটি পায়ে প্রায় চার বছরে পৌঁছে গেছে।

এই দীর্ঘ পথচলায় আমাদের পরিবারের সাথে যুক্ত হয়েছে অসংখ্য মানুষ। বরাবরই ভিন্নধর্মী আয়োজনের মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে; দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে স্বপ্নদ্রষ্টা পরিবারের স্বেচ্ছাসেবকেরা। ইতোপূর্বে, সমাজের কল্যাণে অসামান্য অবদান রাখায় ‘অঙ্কুর’ ও ‘বাংলাদেশ রক্তদান সংঘ’ এর তরফ থেকে দুইটি বিশেষ সম্মাননা স্মারক লাভ করে “স্বপ্নদ্রষ্টা”।


করোনা মহামারির ক্রান্তিকালে গোটা বিশ্ব যখন স্থবির হয়ে পড়েছিল, তখনো থেমে থাকেনি স্বপ্নদ্রষ্টা সংগঠনের স্বপ্নবাজ তরুণেরা। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পূর্বেই বায়ু দূষণের হাত থেকে রক্ষা পেতে “ভালো থাকুক আমাদের সমাজ” নামক ইভেন্টে সমাজের শ্রমজীবী মানুষদের মাঝে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করে স্বপ্নদ্রষ্টার স্বেচ্ছাসেবীরা। এছাড়াও গাজীপুরে এতিম শিশুদের নিয়ে আয়োজন করে “ভালোবাসার আহার-২”।

করোনা মহামারীর সময় অসচেতন সমাজকে সচেতন করতে বিভিন্ন জায়গায় জীবাণুনাশক ছিটিয়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে কাজ করে স্বেচ্ছাসেবকেরা। মধ্যবিত্ত পরিবারের অসহায় মানুষেরা যখন কাজ হারিয়ে অভাব অনটনে খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছিলো, তখন নীরবেই পাশে দাঁড়িয়েছে ‘স্বপ্নদ্রষ্টা’। ঈদের আগে যেন অভাবের তাড়নায় খুশি না হারিয়ে যায়, সে কথা মাথায় রেখে অনেক পরিবারে ঈদ উপহার হিসেবে খাবার পাঠায় ‘স্বপ্নদ্রষ্টা’। শহরের আনাচে কানাচে যেখান থেকেই স্বপ্নদ্রষ্টার ফোন নম্বরে কল এসেছে, সেখানেই খাবার নিয়ে হাজির হয়েছে স্বপ্নদ্রষ্টা পরিবারের স্বেচ্ছাসেবকেরা।

করোনাকালীন সৃষ্ট আর্থিক সমস্যা সমাধানে আয়োজন করে “ভালোবাসার ত্রাণ” নামক চমৎকার ইভেন্ট; সাম্প্রতিককালে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় অসহায় হয়ে পড়া মানুষদের জন্য দুই ধাপে “বন্যার্তদের পাশে স্বপ্নদ্রষ্টা পরিবার” নামক ইভেন্টের আয়োজন করেছে স্বপ্নদ্রষ্টারা।
দ্রুত নগরায়নের ফলে প্রতিনিয়ত উজাড় হচ্ছে গাছপালা, বাড়ছে পরিবেশ দূষণ, গ্রীন হাউজ গ্যাস বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে গোটা বিশ্ব। পরিবেশকে সুন্দর ও বাসযোগ্য রাখতে “পরিবেশ বাঁচাতে বৃক্ষরোপণ” ইভেন্টের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় বৃক্ষরোপণ করেছে স্বপ্নদ্রষ্টা পরিবারের স্বেচ্ছাসেবকেরা।

মাঠপর্যায়ের কাজের পাশাপাশি অনলাইন কার্যক্রমেও সমান তৎপর ছিল স্বপ্নদ্রষ্টা সংগঠন। “Social Talk With Shwapnodroshta” নামক লাইভ সেশনে সমাজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা করা হয়।
বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য স্বপ্নদ্রষ্টা আয়োজিত প্রথম অনলাইন মেগা কার্নিভাল “Fundraiser Carnival 2020” এ আমরা ব্যাপক সফলতা অর্জন করি।
স্বপ্নদ্রষ্টার সকল আয়োজনে আমরা পেয়েছি সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সমর্থন এবং অকৃত্রিম ভালোবাসা।এরই ধারাবাহিকতায় করোনা মহামারির প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মানবসেবায় অসামান্য অবদান রাখার জন্যে AARVI ফাউন্ডেশনের তরফ থেকে “কোভিড-১৯ হিরো এওয়ার্ড” প্রদান করা হয় স্বপ্নদ্রষ্টা সংগঠনকে। প্রায় ৩৫০ সংগঠনের মধ্য থেকে এই অর্জন স্বপ্নদ্রষ্টা পরিবারের সকল সদস্যের, এই অর্জন প্রতিটি গর্বিত স্বপ্নদ্রষ্টার।

ব্যতিক্রমধর্মী আরো অসংখ্য ইভেন্ট আয়োজন করতে চায় স্বপ্নদ্রষ্টা সংগঠন; রাজধানী ছাড়িয়ে দেশের প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখে স্বপ্নবাজ স্বপ্নদ্রষ্টারা। স্বপ্নদ্রষ্টার এগিয়ে যাওয়ার পথে, সকল কার্যক্রমে, সফলতা ও অর্জনে সর্বদা পাশে চাই আপনাদের।
স্বপ্নদ্রষ্টা পরিবারের সাথে যুক্ত থাকুন সবসময়।
–
লিখেছেন আফিয়া তাসনিম।