সামিরা শাইবা অথৈ-
বাংলা চলচিত্রের একটি পরিচিতদৃশ্য হল নায়িকা বা নায়ক – নায়িকার পরিবারের কোন সদস্য খলনায়কের কাছে জিম্মি। পুরনো হোক কিংবা নতুন হোক বাংলাচলচিত্র মানেই এই দৃশ্যটি থাকবেই। কিন্তু এই জিম্মির ভূমিকায় যদি চলচিত্র নিজেই থাকে? হ্যাঁ, বাংলা চলচিত্র আজ এই ভূমিকাতেই আছে। গত কয়েক বছর ধরেই চলচিত্র মূলত ভাল চলচিত্র যেন খলনায় কের কাছে জিম্মি হয়ে আছে।
আর এইখল নায়ক কারা? বাজারে সস্তা মানের কুরুচিপূর্ণ অশ্লীল চলচিত্র নির্মাতারাই উল্লেখিত খলনায়ক। যদিও ভালমানের চলচিত্র যে তৈরি হচ্ছেনা এমনটা নয়। কিন্তু এখন ভালমানের চলচিত্রের সংখ্যা অতি নগণ্য। দেশের বিভিন্ন জেলায় হলের সংখ্যা কমেযাওয়া, হল বন্ধ হয়ে যাওয়া, সাধারণ মানুষের বাংলাচল চিত্রের উপর থেকে রুচিহারানো, বিদেশী চলচিত্রে বেশি আসক্তি ইত্যাদি কারণগুলোর পেছনেও ভূমিকা রাখছে এইখল নায়কেরা। সস্তামানের গল্প, সস্তা প্রযোজনা , নিম্নমানের অভিনয় নিয়েই আজকালকার চলচিত্র গুলো মুক্তি পাচ্ছে। তাই মানুষ বাধ্য হয়েই হল বিমুখ হচ্ছে। বাংলা চলচিত্রের উপর থেকে মানুষ প্রতিনিয়তই ভরসা হারাচ্ছে যা বাংলা চলচিত্রের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি।
এই নিম্নমানের চলচিত্রগুল কে বাজার থেকে না সরালে, এদের সংখ্যা না কমিয়ে আনতে পারলে এবং সর্বোপরি ভাল চলচিত্রের সংখ্যা না বাড়ানো হলে বাংলা চলচিত্রের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পরে যাবে। ভাল এবং উচ্চমানের চলচিত্র আর নির্মাতারা যদি নায় কের ভুমিকায় না আসে তাহলে সত্যিই এই খলনায়কের হাত থেকে জিম্মিরত চলচিত্রকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে না।
দেশের চলচিত্র বাজারে যখন একটি ভাল চলচিত্র মুক্তি পায় তখন সাধারণ জনগণ একটু আশার আলো পায়। তারা পরবর্তী আরও একটি ভালচলচিত্রের অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু যখন একটি ভাল চলচিত্রের পর কয়েক টি বাজে মানের চলচিত্র মুক্তি পায় তখন স্বাভাবিক ভাবেই মানুষ চলচিত্র থেকে বিমুখ হয়ে যায়। তাই বাংলা চলচিত্রের স্বাভাবিক অবস্থাফিরিয়ে আনতে স্বাভাবিক ভাবেই প্রয়োজন ভাল ভাল চলচিত্রের একটানা মুক্তি। তার সাথে বাজে মানের চলচিত্রের সংখ্যা কমিয়ে আনার ব্যাপারতো আছেই।