ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে তফসিল ঘোষণা করেছে এবং নির্বাচন কমিশন একগুচ্ছ আচরণবিধি প্রকাশ করেছে, যা প্রার্থী ও ভোটারদের অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
নির্বাচন কমিশনের জারি করা আচরণবিধি অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোনো ধরনের মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী সর্বোচ্চ পাঁচজন সমর্থক নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন। মনোনয়নপত্র দাখিল বা প্রত্যাহারের সময় অন্য কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করাও নিষিদ্ধ।
প্রচারণা সংক্রান্ত বিধি:
প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রচারণা চালানো যাবে। রাত ১০টার পর মাইক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। ভোটার ও প্রার্থী ছাড়া কেউ ক্যাম্পাসে প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালানো গেলেও তা হতে হবে ইতিবাচক এবং আইনসিদ্ধ পদ্ধতিতে। গুজব, মিথ্যা তথ্য ছড়ানো, ব্যক্তিগত আক্রমণ ও চরিত্র হননের মতো কাজ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
সভা-সমাবেশ ও শোভাযাত্রা:
সভা বা সমাবেশ করতে হলে কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে অনুমতি নিতে হবে। প্রতিটি হলে একটি করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে সর্বোচ্চ তিনটি প্রজেকশন মিটিং করা যাবে। অনুমোদিত স্থান ছাড়া সভা বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। চলাচলে বিঘ্ন ঘটাতে পারে এমন স্থানে কোনো সভা বা মঞ্চ নির্মাণ নিষিদ্ধ।
প্রচারণা সামগ্রী সংক্রান্ত বিধি:
দেয়াল, গাছ, যানবাহন, বিদ্যুৎ বা টেলিফোনের খুঁটিতে পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার লাগানো যাবে না। প্রার্থীরা কেবল নিজেদের সাদাকালো ছবি ব্যবহার করতে পারবেন; অন্য কারো ছবি বা কোনো প্রতীক ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
ভোট কেন্দ্রের নিয়মাবলি:
ভোটারদের নিজ নিজ হলের বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। কেন্দ্রে মোবাইল বা কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে না, বুথের ভেতরে ছবি তোলা নিষিদ্ধ। ভোটদান শেষে ভোটারদের দ্রুত কেন্দ্র ত্যাগ করতে হবে, জটলা সৃষ্টি করা যাবে না।
শাস্তিমূলক ব্যবস্থা:
কোনো প্রার্থী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে তার প্রার্থিতা বাতিলসহ সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হতে পারে। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার এবং রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ারও সুযোগ রয়েছে।
এই আচরণবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।