
বদরুল ইসলাম (বরগুনা)
বরগুনা জেলার ডেঙ্গু পরিস্থিতি দিন দিন আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। সর্বশেষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন সদর উপজেলার চরকলোনী এলাকার বাসিন্দা এবং ধূপতি মনসাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শিরিন সুলতানা (৪৫)। তিনি সাবেক বিআরডিবি চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিনের স্ত্রী।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শিরিন সুলতানাকে বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনটি শিশুসন্তানের জননী এই শিক্ষিকার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে বরগুনা জেলায় ডেঙ্গুতে এ পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে বরগুনা সদরেই প্রাণ হারিয়েছেন ২৮ জন, বেতাগীতে ৪ জন এবং পাথরঘাটায় ৩ জন।
এদিকে বরগুনা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন। সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। জেলায় বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৩ জনে। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৯৩ জন, যাদের মধ্যে ১৩৮ জনই সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বরগুনা সিভিল সার্জনের কার্যালয় জানিয়েছে, জেলার প্রতিটি এলাকাতেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। প্রতিদিন নতুন নতুন রোগী শনাক্ত হওয়ায় চিকিৎসা সেবায় চাপ বেড়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, যদি পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তাহলে তা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় আরো জানায়—সকল নাগরিককে সচেতন হতে হবে, বাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে এবং নিজ উদ্যোগে মশক নিধন কার্যক্রমে অংশ নিতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদেরও এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা পালনের তাগিদ দিয়েছেন তিনি।