ছুরি, লাঠি, হুমকি—সব হাতে ছিনতাই চক্রের দাপট, পুলিশি সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ছিনতাই এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনের আলো হোক বা রাতের আঁধার, রাস্তায় বের হলেই আতঙ্কে থাকছেন সাধারণ মানুষ। শনিবার (২ আগস্ট) সকাল পৌনে ৬টায় রেলস্টেশনের পথে ছিনতাইয়ের শিকার হয় একটি পরিবার, যারা অসুস্থ বাবাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিল। ভৈরব পৌর কবরস্থানের সামনে ছিনতাইকারীরা রিকশায় থাকা তিনজনকে মারধর করে সব লুট করে নেয়।
ভুক্তভোগী আমির খান, নাদিরা খান ও ছেলে ফারদিন খান জানান, ছিনতাইকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে চিকিৎসার টাকা, মোবাইল ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। অভিযোগ জানাতে গেলে থানার এক এসআই খারাপ ব্যবহার করেন বলেও দাবি করেন তারা।
শুধু এই একটি ঘটনা নয়—গত ১৮, ২১ ও ২৩ জুলাই সহ একাধিক দিন ভৈরবে ছিনতাই, চুরি ও অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। কখনো মোটরসাইকেল আরোহী, কখনো পথচারী, আবার কখনো যাত্রীবাহী নারী—সবাই এ চক্রের নিশানায়। রেলওয়ে ও শহর এলাকায় একাধিক ছিনতাইকারী আটকের ঘটনাও ঘটেছে সম্প্রতি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভৈরবের অন্তত ৫০-৬০টি স্পটে নিয়মিত ছিনতাই চলছে। দুর্জয় মোড়, মেঘনা সেতুর নাটালের মোড়, গাছতলাঘাট ব্রিজ, ভৈরব বাজার, রেলস্টেশন রোড, পলাশ সিনেমা মোড়সহ অসংখ্য স্থান ছিনতাইকারীদের জন্য ‘নিরাপদ আশ্রয়’ হয়ে উঠেছে।
সন্ধ্যা নামলেই গজারিয়া, মানিকদী, জামালপুরের পথে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যার পর ছোট যানবাহনও চলাচল করে না ছিনতাইয়ের ভয়েই। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত মাদকসেবী, কিশোর গ্যাং ও চিহ্নিত অপরাধীরা বলে জানান এলাকাবাসী।
তারা আরও জানান, দেশে চলমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ছাপ ভৈরবেও স্পষ্ট। পুলিশের ব্যর্থতা, বিচারহীনতা ও দ্রুত জামিনেই অপরাধীদের ছাড়িয়ে আসা—এসব কারণে অপরাধ বাড়ছে।
ভৈরব থানার ওসি খন্দকার ফুহাদ রুহানি বলেন, “প্রতিদিনই চুর-ছিনতাইকারী ধরা হচ্ছে, জেলেও পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে আবার অপরাধ করছে। পুলিশি অভিযান চলছে এবং চলবে।”