চট্টগ্রামে ডেঙ্গু বৃদ্ধি পাচ্ছে, মশা নিধনে পুরনো জরিপের ওপর নির্ভরতা উদ্বেগজনক
চট্টগ্রামে জুন ও জুলাই মাস থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিটি করপোরেশন ও সিভিল সার্জন কার্যালয় বিভিন্ন সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে এবং মশা নিয়ন্ত্রণে ওষুধ ছিটানো কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে এ কার্যক্রমে ব্যবহার করা হচ্ছে দেড় বছর আগের জরিপের তথ্য, যা বর্তমান পরিস্থিতি প্রতিফলিত করে না।
২০১৯-২০ সালে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর), সিটি করপোরেশন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সমন্বয়ে পাঁচটি এলাকা — কোতোয়ালি, বাকলিয়া, বায়েজিদ, চকবাজার ও বন্দর — হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এই পুরনো জরিপের ভিত্তিতে এখনও মশকনিধন কার্যক্রম চলছে, অথচ নতুন কোনো হালনাগাদ জরিপ নেই।
বর্তমানে বর্ষার শুরু থেকেই ডেঙ্গু রোগী বাড়তে শুরু করেছে। জুন মাসে ১৭৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে, চলতি বছর মোট রোগীর সংখ্যা ৪৯৫ জন, যাদের অর্ধেকের বেশি জুন থেকে এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে। এছাড়া সম্প্রতি হাসপাতালের ভর্তি তালিকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, বর্ষার সময় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং নগর ও উপজেলায় রোগী দেখা যাচ্ছে। সতর্ক থাকতে হবে, এবং বিভিন্ন প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের মশা নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রতিদিন ক্রাশ কর্মসূচি অনুযায়ী প্রজননপ্রবণ এলাকায় ৭০ জন কর্মী ওষুধ ছিটাচ্ছেন এবং ফগিং করছেন। তবে কার্যক্রম এখনও পুরনো জরিপের ওপর নির্ভরশীল।
সিটি করপোরেশন নতুন জরিপের জন্য আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, কিন্তু সিদ্ধান্ত হয়নি কখন এটি সম্পন্ন হবে। এদিকে বাকলিয়া এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাভিত্তিক নতুন বায়োলজিক্যাল লার্ভিসাইড ‘বিটিআই’ পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে।
ডেঙ্গুর পাশাপাশি এডিস মশার কামড়ে ছড়ানো চিকুনগুনিয়াও বেড়ে চলেছে। চিকিৎসকেরা সতর্ক করে বলেছেন, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া উভয়েই তীব্র জ্বর এবং শরীর ব্যথার সৃষ্টি করে, তবে চিকুনগুনিয়ার ব্যথা অধিক দীর্ঘস্থায়ী ও তীব্র হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ডেঙ্গুর প্রধান মৌসুম জুন থেকে অক্টোবর-নভেম্বর পর্যন্ত। তাই এই সময় সতর্কতা অবলম্বন ও জনসচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।