ইভান পাল
প্রযোজকদের সাথে মনোমালিন্য ও বকেয়া বেতনের দাবিতে চলছে ভারতীয় বাংলা টিভি চ্যানেলের ধারাবাহিকের শিল্পীদের ধর্মঘট। তাই, প্রায় বেশীর ভাগ ধারাবাহিকই রয়েছে বন্ধের পথে।
স্টার জলসা, জি বাংলা সহ অনেকগুলো ভারতীয় বাংলা টিভি চ্যানেল ভারতীয় দর্শকরা তো বটেই, বাংলাদেশের দর্শকদের কাছেও বিনোদনের বিরাট একটা অংশ।
সন্ধ্যে কিংবা রাত হলেই এদেশের বেশিরভাগ মানুষই বসে পড়েন ভারতীয় এসকল বাংলা টিভি চ্যানেলের সিরিয়াল দেখবার আশায়।
কিন্তু, বন্ধ হয়ে যেতে পারে বিনোদন মূলক এসকল টিভি চ্যানেলের ধারাবাহিক নাটক সমূহ।
গত শনিবার সকাল থেকেই কলকাতার টালিগঞ্জের সব কয়টি স্টুডিওতেই ভারতীয় বাংলা টিভি চ্যানেল গুলোর সিরিয়ালের শুটিং বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, বাংলা সিরিয়ালের শিল্পীদের যে ফোরাম, সেটিই এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই কোন সিরিয়ালের ই নতুন করে খুব একটা শুটিং ও নাকি হচ্ছিল না।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, অনেক দিন থেকেই ভারতীয় বাংলা সিরিয়ালের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট শিল্পীরা তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রযোজকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাচ্ছেন। কিন্তু প্রযোজকেরা কোনভাবেই শিল্পীদের সাথে আলোচনায় বসবেন না। যার জন্যই প্রায় এক প্রকার বাধ্য হয়েই ধর্মঘট পালন করছেন টালি পাড়ার এই শিল্পীরা।
শিল্পীদের অভিযোগ, অনেক দিন থেকেই গভীর রাত পর্যন্ত ওভার টাইম (সিরিয়ালের শুটিং) করানো হচ্ছে তাদের দিয়ে। কাজের কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। যার ফলে শিল্পীদের ওপর বেড়েছে অতিরিক্ত কাজের চাপ। শিল্পী রা মনে করছেন, অতিরিক্ত কাজের চাপে পড়ে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, আবার কাজের মানের দিক থেকেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই প্রযোজকদের অবশ্যই কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিতে হবে, দেওয়াটা দরকার।
এই রিপোর্ট টি লেখার আগ পর্যন্ত জানা যায়, আজ বুধবার সকাল থেকে এখনো পর্যন্ত টালি পাড়ার কোন স্টুডিও তেই কোন রকম শুটিং শুরু হয়নি। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনও রকম সমাধানের সূত্র মেলেনি। জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার ভারতের দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে আর্টিস্ট ফোরামের সাধারণ বৈঠক বসে। সেখানে টলিউড ও টেলি পাড়ার প্রবীণ – নবীন অসংখ্য অভিনেতা, অভিনেত্রী উপস্থিত ছিলেন।
ভারতীয় বাংলা টিভি ধারাবাহিকের শিল্পীদের এইযে ধর্মঘট, এটা যে খুব একটা মঙ্গল ডেকে আনবে, তা কিন্তু একেবারেই নয়। বরং, নেতিবাচক প্রভাব ই পড়বে সব ক্ষেত্রে। তাই এসব টিভি চ্যানেলের মালিকরা মনে করছেন, খুব শীঘ্রই শিল্পীদের সাথে প্রযোজকদের এই সমস্যার সমাধান ঘটবে।