রহিম শুভ, ঠাকুরগাঁও
বুকের রক্ত দিয়ে ১৯৫২ সালে বাঙালির মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা হলেও এ দেশে এখনো অনেক মাতৃভাষার অস্তিত্ব বিপদাপন্ন। নিজ ভাষায় শিা গ্রহণের সুযোগ না থাকা, নিজেদের বর্ণমালা , জনসংখ্যা হ্রাস ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর ভাষা বিপদাপন্ন হওয়ার মূল কারণ বলে অনেকেই মনে করছেন। বে-সরকারি এনজিও সংস্থা ইএসডিও সূত্রে জানা গছে, বর্তমানে সারাদেশে প্রায় ৪৫টি আদিবাসী সম্প্রদায় রয়েছে। এর মধ্যে নিজস্ব মাতৃভাষার সংখ্যা ৩০। কিন্তু নিজ জাতির বাইরে গেলেই ঠাকুরগাঁওয়ের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীকে বাংলা কিংবা উরাও বা সাঁওতালি ভাষায় কথা বলা ছাড়া উপায় থাকে না। সাদ্রীভাষা ব্যবহার করছে প্রায় ১০ জনগোষ্ঠী একইভাবে আরো কয়েকটি সম্প্রদায় আছে যাদের জাতিগত ভিন্নতা থাকলেও মুখের ভাষা এক। কিন্তু চাকমা ও মারমা ছাড়া আর কারো বর্ণমালা নেই।
আদিবাসী শিক্ষার্থী রোজিনা মার্ডি জানায়, স্কুলে বাংলা ভাষার বই পড়তে অনেক কষ্ট হয়। আ বাসায় গিয়ে মাতৃভাষায় কথা বলতে হয়। তাই আমাদের স্কুলের বইয়ে যদি আমাদের নিজস্ব ভাষা হয় তাহলে অনেক ভাল হয়। সুজন মোরমো জানান, আমি বাংলা ভাষায় ভালভাবে কথা বলতে পারি না। বাংলা বই পড়া উচ্চরণ করতে কষ্ট হয়। ভাল ভাবে লিখতেও পারি না। আমাদের যদি নিজ ভাষায় বই হত বা লিখার সুযোগ হত তাহলে আমরা ভালভাবে নিজ ভাষায় পড়াশোবারনা করতে পারতাম। আদিবাসী শিক্ষক আসুন তাকেজ জানান, বাংলা ভাষায় আদিবাসী শিক্ষার্থীকে পড়াতে স্কুলে কষ্ট হয়। নিজস্ব ভাষা না থাকায় তারা স্কুলে আসতে আগ্রহী না। তাই তাদের মাতৃভাষা যুক্ত বই পেলে শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে উঠবে। টিকে থাকবে তাদের মাতৃভাষা।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বলেন, সরকার ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, অধিকার, ভাষা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে সরকার ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর লিপি সংরক্ষনের পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। সার্বিভ ভাবে ঠাকুরগাঁওয়ে সরকার ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে অনেক কাজ করছে। এদিকে বেসরকারি পর্যায়ে ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর ভাষা সংরণের উদ্যোগ নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখছে না। তাই সরকারি উদ্যোগে এসব ভাষা রক্ষার দাবি আদিবাসী সম্প্রদায়ের।