সাবা সিদ্দিকা সুপ্ত
কাঠ, হাতুরি, সিমেন্ট আর নানা রঙের ভালবাসায় সিক্ত ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী আর নেই। পার্থিব অবয়বের মায়া ত্যাগ করে পরপারে চলে গেলেন হয়তো নূতন আধ্যাত্মিক ভাষ্কর্যকে রূপ দিতে।
৬ই মার্চ মঙ্গলবার দুপুর পৌণে একটায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউতে থাকা অবস্থায় দেহত্যাগ করেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাষ্কর। দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি হৃদরোগের জটিলতায় ভুগছিলেন।
ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণীর জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি খুলনায়, নানাবাড়িতে। তাঁর বাবার নাম সৈয়দ মাহবুবুল হক এবং মায়ের নাম রওশন হাসিনা। ১১ ভাইবোনের মধ্যে প্রিয়ভাষিণী ছিলেন সবার বড়।
মূলত ঘর সাজানো এবং নিজেকে সাজানোর জন্য দামী জিনিসের পরিবর্তে সহজলভ্য শৈল্পিক জিনিস দিয়ে কিভাবে সাজানো যায় সেই প্রয়াস থেকেই ভাষ্কর্য চর্চার সূচনা। শিল্পকলায় অসামান্য অবদানের জন্য ২০১০ সালে বাংলাদেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরষ্কার” হিসেবে পরিচিত ‘স্বাধীনতা পুরষ্কার’ প্রদান করা হয়।
অবশেষে একাত্তর বছর বয়সে মুক্তিযোদ্ধা পদবী নিয়ে স্বাধীনতার মাসে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই বিরাঙ্গণা মহিয়সী রমণী। আজ সকালেই তাঁর সপক্ষে ‘মুক্তিযোদ্ধা গ্যাজেট’ প্রবর্তিত হয়।
হয়তো আর কোন ভাষ্কর্যের গল্প ঠাঁই পাবেনা প্রিয়ভাষিণীর সুমিষ্ট কন্ঠে, কাঠগুলোও হাতুড়ি আর শিরিষ কাগজের ছোঁয়া পাবেনা, কিন্তু এদেশের হাওয়া- আবহাওয়া আর প্রকৃতির মাঝে তিনি ও তাঁর সৃষ্টি চিরকাল অম্লান হয়ে থাকবে।