যাইফ মাসরুর
|| ১ ||
সকাল আটটা। শফিক ঘুম থেকে জেগেছে কেবল। তার ঘুম ভাঙার কথা আরো আগেই। কেউ ডাক দিয়ে দেয় না, অ্যালার্ম বাজে না, কিছুই না। কিন্তু প্রতিদিন সময়মতোই ঘুম ভেঙে যায় তার।
আজ কেন ভাঙলো না, ভেবে পাচ্ছে না সে। অফিসের টাইম হয়ে গেছে, এখন গিয়ে সে বসের বড়সড় একটা ঝাড়ি শুনবে। এখন অফিসে গিয়ে বসের ঝাড়ি শুনবে নাকি ঘরে বসে থাকবে, সেটা ভাবছে। আজ অফিস কামাই দিয়ে কালকে হাজিরা দিয়ে বলবে—”গতকাল জ্বর এসেছিল।” কেমন হয় কথাটা?
কী করবে ভেবে পাচ্ছে না শফিক।
শোয়া থেকে উঠে বসলো সে। তারপর চৌকি থেকে নেমে উঠে দাঁড়ালো। আগে হাতমুখ ধুয়ে ঘুমের চিহ্ন দূর করা যাক। তারপর দু’কাপ চা খেয়ে শরীর চাঙা করা জরুরী। তারপর না হয় ভেবে দেখা যাবে অফিসের ব্যাপারটা। সময় যেহেতু পেরিয়েই গেছে, অতএব তাড়াহুড়োর কোনো মানে হয় না।
শফিক কামরা থেকে বেরিয়েই দূর থেকে দেখতে পেলো, শৌচাগারের সামনে বেশ কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে, সিরিয়াল দিয়ে। ”আহা মেসজীবন” আক্ষেপের সুরে কথাটুকু বলে ফিরে এলো সে।
চৌকির নিচে উঁকি দিয়ে ট্রাঙ্ক থেকে চা-পাতির কৌটা বের করলো, সেখান থেকে হাতের তেলোতে কয়েক চিমটি চা-পাতি নিয়ে চুলার ধারে চলে এলো। চুলায় চা বসিয়ে চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে কিছুটা ধ্যানমগ্ন অবস্থায়।
— “শফিক ভাই, আপনের চিঠি আসছে, ভাবি পাঠাইসে।”
শফিকের ধ্যানটা দীর্ধস্থায়ী হলো না, ডাকপিয়ন মজিদ মিয়ার ডাকে ভাটা পড়লো। শফিক ঘাড় ঘুরিয়ে বললো, “‘কবে আইসে?'”
— “গতকাল সন্ধ্যায়। আমি কি আপনের চিঠি দেরি করি নাকি? গরম থাকতে থাকতেই দিয়া যাওনের চেষ্টা করি।”
— ”ভালো কাম এইডা, আপনারে ধন্যবাদ। বসেন এখন, চা-পাতি গরম হইতেসে, খায়া যান।”
মজিদ মিয়া মনে মনে খুশিই হলো। শফিকের এখানে চা খেলে তার আটঅানা বেঁচে যাবে। এমনিতেও সে শফিককে চিঠি দিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় কোনও টঙে বসতো চায়ের জন্য। এখন সেটা আর করতে হচ্ছে না। সে খুশি খুশি মুখে বললো, ”আইচ্ছা”।
চায়ের সঙ্গে হালকা টা খেয়ে বিদায় হলেন মজিদ মিয়া।
শফিক একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। খামটা হাতে নিয়ে দেখতে পেলো, যথারীতি পারুলের চিঠি। মনটা খারাপ হয়ে গেল শফিকের।
“আহা!”
একটা চাপা শ্বাস বেরিয়ে গেলো বুক থেকে। উঠে দাড়ালো সে। কাগজ কলম নিয়ে বসতে হবে। একটা, দুইটা করে অনেকগুলো চিঠি জমা হয়েছে পারুলের, সেগুলোর উত্তর দিতে হবে। তার আগে আজকের চিঠিটা পড়ে দেখা দরকার। টেবিলের সামনে চেয়ার টেনে বসলো সে। সাদা খামের ভেতর থেকে বের করে চিঠিটা পড়তে শুরু করলো।
|| ২ ||
প্রিয় নীলার আব্বা,
আশাকরি ভালো আছেন। আল্লাহ ভালোই রেখেছে আপনাকে। তবে আমি ভালো নেই। আপনার চিন্তায় আমি শেষ। আচ্ছা, আপনি কি আমার চিঠির উত্তর দেবেন না? এভাবে রাগ করে থেকে আর কতকাল কাটাবেন? রাগ করে থেকে কী লাভ আপনার? এই রাগের খেসারত কিন্তু আপনাকে এখনই দিতে হচ্ছে।
আপনাকে কতগুলো চিঠি লিখলাম, আম্মার অসুখের কথা জানালাম, আপনে উত্তর দিলেন না। চিকিৎসার অভাবে, অষুধপত্তর না পেয়ে আম্মা মারা গেলেন তার কয়দিনবাদেই।
আবার চিঠি লিখলাম আপনার কাছে, উত্তর পেলাম না। তারপর আবার চিঠি লিখলাম কয়দিন পর, সুসংবাদ দিলাম, আপনে মেয়ের বাবা হয়েছেন। অন্তত নিষ্পাপ মেয়ের মুখটা দেখে যান। কি পরির মত সুন্দর! মাশাল্লা। ভেবেছিলাম, আপনে মেয়ের বাবা, আপনেই বড় হকদার মেয়ের নাম রাখার। কিন্তু আপনে আসলেনই না। আমরা নিজেরাই নাম রাখলাম, ”নীলা”।
আরো অনেক কাজে অনেক চিঠি দিয়েছি। উত্তর পাইনি। আমি অবলা এক নারী। অতো প্যাঁচগোচ করিনা, বুঝিওনা।
তা, আজকে আর আমি এতো কথা লিখতে চাই না। এতোটুকু লিখলাম, আমি আপনার বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আম্মা নেই, কোনও মুরুব্বি নাই, একা বাড়িতে আমি ছোট বাচ্চা নিয়ে থাকতে ভয় পাই। এমনেই দিনকাল ভালো না। আমি আমার বাবার বাড়ি যাই। আপনার কোনওদিন বাড়ি ফিরতে ইচ্ছে হলে, মেয়ের মুখ দেখতে মন চাইলে আপনার শশুরবাড়ি চলে যায়েন।
আজকে রাখলাম। এই চিঠির উত্তর দেয়ার প্রয়োজন নাই। আমার জানানোর দরকার ছিল, তাই জানিয়ে দিলাম। ভালো থাকেন। খোদা হাফেজ।
ইতি
পারুল
*
শফিক চিঠিটা পড়ে কতক্ষণ মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে রইলো। ছয় বছর আগে রাতের আঁধারে, নীরবে ঘটে যাওয়া একটা মর্মান্তিক ঘটনার একমাত্র সাক্ষী সে। কাওকে জানাতে পারেনি সেই রাতের গল্প। জানানোর মত সাহস তার নেই, অথচ সে যুদ্ধ ফেরত সৈনিক!
|| ৩ ||
প্রিয় তুমি,
আশাকরি সুখেই আছো। অন্তত আমি তাই মনে করি। কোনোরকম ভূমিকা ছাড়াই শুরু করছি। তুমি আমার ওপর রেগে আছো, তাই না?
রেগে থাকারই কথা, একটা লোক পরিবারের ভরণপোষণের জন্য, পরিবারের সদস্যদের মুখে একটু হাসি দেখার জন্য, সবাইকে নিয়ে সুখে থাকার জন্য জীবিকার খোঁজে শহরে এসে কোনও খোঁজখবর না দিয়ে ভোজবাজির মত উধাও হয়ে গেলে রাগ লাগারই কথা। রাগ না লাগাটাই যেন অস্বাভাবিক দেখায়!
আমি ঢাকায় আসার পর আমার পাঠানো একমাত্র পত্রে অনেককিছু লিখেছিলাম, ভালোমন্দের গল্প।
তোমরা জানতে, আমি ঢাকায় এসেই একটা হোটেলে চাকরি জুটিয়ে ফেলেছি। হোটেলের ম্যানেজারি করা আমার কাজ। তবে, সারাদিন বসে বসে এতো এতো টাকা গুনবো, অথচ মাস শেষে নির্ধারিত অংকের বাইরে কোনও মাইনে পাবো না। সেটার জন্য খারাপ লাগে। কারণ টাকাটা আমার অথবা আমদের খুব দরকার, আমার পরিবারকে জীবনযুদ্ধে টিকিয়ে রাখার জন্য দরকার।
হোটেলের মালিক আমার দেশি মানুষ, অথবা এভাবেও বলা যায়—আমি তার দেশের লোক। তাই চাকরিটা সহজেই জুটে গেছে কপালে।
বলেছিলাম চাকরি পাওয়ার সেই গল্প। আমি তখন ঢাকায় এসে উঠলাম মাত্র। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হচ্ছে। কিছুই চিনিনা, কিছুই জানিনা। খুব ক্ষুধা পেয়েছিলো তখন। কী করবো? কই যাবো? কিছুই জানি না।
অনেক ঘোরাফেরার পর একটা সরাইখানার দেখা পেলাম। বিদ্যুৎ নেই। মোমবাতি জ্বেলে রাখা হয়েছে। আমি সরাইখানায় ঢুকে টের পেলাম, আমি ছাড়া এই মুহুর্তে আর কোনও খদ্দের নেই এখানে। তবে, ক্যাশটেবিলের সামনে ভদ্রগোছের একটা লোক বসে থাকতে দেখলাম। লোকটা সারাদিনের আয়-ব্যায়ের হিসেব করছিলেন বোধহয়, আমাকে একা পেয়ে গল্প জুড়ে দিলেন। আমিও সায় দিতে লাগলাম তার কথায়।
এভাবে ঘণ্টাখানেক গল্প করার পর হঠাতই লোকটা প্রস্তাব সেধে বসলো, ”কাজ করবেন এখানে?” আমিও কোনও চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই টুপ করে রাজি হয়ে গেলাম।
তারপর, কয়দিন যেতেই আমি টাকা চেয়ে বসলাম, টাকার পরিমাণ ভালোই ছিল, তবুও তিনি রাজি হয়ে গেলেন। সেই টাকা পেয়ে আমি আনন্দে চিঠি লিখতে বসে গেলাম। চাকরি পাওয়ার সুসংবাদ এবং সাথে কিছু টাকা দিয়ে বাড়ির ঠিকানায় পোস্ট করলাম।
মোটামুটি এই ছিলো গল্প। তোমরা এগুলোই জানতে, আমি এসবই বলেছিলাম তোমাদের।
আসলে এসব গল্পের কোনও অস্তিত্ব নেই! আদতে আমি এখনো কোনও চাকরিই পাইনি। ঢাকা শহরে ঘুরতে ঘুরতে জুতোর শুকতলা ক্ষয় করে ফেলেছি, তবে একটা চাকরি জোগাড় করতে পারিনি।
তোমরা যেন চিন্তা না করো, সেজন্যেই এসব মুখরোচক গল্প ফেঁদেছিলাম। চিঠির সাথে যেই টাকাগুলি পাঠিয়েছিলাম, সেগুলি মানুষের থেকে কর্য করে নেয়া। সেই কর্য আজও শোধ করতে পারিনি। আর কখনো পারবো বলেও মনে হয় না!
যাইহোক, চিন্তা কোরো না। আমি শীঘ্রই ভালো একটা চাকরির ব্যাবস্থা করে ফেলবো। তবে, এখন কি করছি, কই আছি, কেমন আছি—এসব জানতে চেয়ো না।
আম্মা মারা গেছেন, তার কবরটা কেমন হয়েছে, গোসল সুন্দরভাবে হয়েছিলো কিনা, জানাজা, দাফন ঠিকঠাক মত হয়েছে কিনা জানতে খুব ইচ্ছে হয়। একদিন টুপ করে চলে আসবো বাড়িতে। আম্মার কবর জেয়ারত করব দীর্ঘসময় ধরে। কবরের ধারে বসে থাকবো, আম্মার কাছে মাফ চাইতে হবে। জীবনে অনেক ভুলত্রুটি করেছি আম্মার সাথে, সেগুলির জন্য মাফ চাওয়া হয়নি। আচ্ছা, আম্মা কি আমাকে ক্ষমা করবেন? আমার কথা শুনতে পাবেন তো?
আচ্ছা, তোমাদের ”নীলা” অথবা আমার ”জান্নাত” কেমন আছে? আমার মেয়েটা হাঁটতে পারে তো? কথা বলতে পারে? বয়স কত হলো? আমাকে দেখলে বুঝবে তো? যে- আমিই ওর বাবা। খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। তুমি দেখো, আমি একদিন না জানিয়ে টুপ করে চলে আসবো। চমকে দেবো তোমাকে। জানো তো? হঠাৎ পাওয়া কোনও আনন্দের উপলক্ষ বা সুসংবাদ একটু বেশিই উপভোগ্য হয়।
সকালবেলা মজিদ মিয়া তোমার চিঠি আমাকে পৌঁছে দেওয়ার পর থেকেই প্রচন্ড মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছি। সেজন্যে কথাগুলো এলোমেলো হয়ে গেলো। আজ এ পর্যন্তই থাক। আমি শীঘ্রই একটা ব্যাবস্থা ফেলবো, ভেবো না আমাকে নিয়ে। মা-মেয়ে দুইজনেরই শরীরের যত্ন নেওয়া উচিত এখন। ঠিকমতো যত্ন নিয়ো শরীরের।
ভালো থেকো, আল্লাহ হাফেজ।
ইতি
তোমার শফিক
|| ৪ ||
চিঠিটা পড়েই পারুল কান্নায় ভেঙে পড়লো। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে সে। এতোদিনের চাপা অভিমান, কষ্টে কেউ যেনো ছাই দিয়েছে। টিউবওয়েলের মতো হরহর করে লোনা জল গড়িয়ে পড়ছে তার চোখ থেকে।
|| ৫ ||
গল্পের শেষটা আরো আগেই জানতে পারতাম আমরা, কিন্তু নিয়তির খেয়ালে আমরা এখনো গল্পের শেষ খুঁজছি!
আসলে যেই চিঠি শফিকের নামে পোস্ট হয়েছিল পারুলের কাছে; সেই শফিক আর নীলার বাবা শফিক, দুইজন এক ব্যক্তি নয়। এই শফিক আর কোনোদিন বাড়িতে ফিরবে না। একমাত্র মেয়েকে খুব আদরে ”জান্নাত” নামে ডাকবে না, শুনবে না বাবা ডাক, বয়স কত হলো, হাঁটতে পারে কিনা—এসব কখনোই জানা হবেনা তার। মায়ের কবরের পাশে বসে ডুকরে কেঁদে উঠবে না, করবে না জেয়ারত, ডাকবে না মা’কে, চাইবে না ক্ষমা। সে কোনওদিন জানবেও না এতোকিছু!
আগের মত সে এখন আর পৃথিবীর আলো আর দেখতে পায় না। কারন, সে পৃথিবীতে বেঁচে নেই! প্রায় ছয় বছর আগে নীরব, নিস্তব্ধ, কোলাহলমুক্ত একরাতে ক’জন আততায়ীর হাতে নির্মমভাবে মারা পড়েছে সে।
তারপর, সেখানে দেবদূতের মত আবির্ভাব হয়েছিলো যুদ্ধ ফেরত নওজোয়ান শফিকের। দুইজনের নামই শকিক হওয়ায় জন্ম হয় চমকে যাওয়া নতুন এক গল্পের!
কী ছিল সেই গল্প? আসুন যেনে নেয়া যাক।
দিনটা ছিল সুন্দর, গরম-শীতের মাঝামাঝি সময়। তবে, পরিস্থিতি মোটেও ভালো ছিলোনা। একের পর এক গুপ্তহত্যা, লুটতরাজ, ধর্ষন চলতো সেসময়।
সন্ধ্যা হলেই সুনসান নীরব হয়ে যেতো শহরের হাট-ঘাট-মাঠ। চরম সাহসী কেউ না হলে বাইরে বের হতো না কেউ। মৃত্যুশয্যা নেয়া কোন রোগির জন্য কোনও কাজে বাইরে যাওয়ার দরকারটা পর্যন্ত চেপে যেতো!
এরকম এক অশান্ত, ঝঞ্ঝাটপূর্ন সময়ে ঢাকা শহরে পা রাখে শফিক। চোখেমুখে একমুঠো সুখ খোঁজার স্বপ্ন। দুমুঠো খাবারের স্বপ্ন। মা’কে চিকিৎসা করানোর স্বপ্ন। সর্বোপরি, সুখে-শান্তিতে পরিবার নিয়ে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্নে বিভোর ছিলো শফিক।
ঢাকা শহরে সেবারই প্রথম এসেছিলো শফিক। শহর নিয়ে কিছুই জানা ছিলো না তার।
সময়টা ঝিঁঝিঁ ডাকা সন্ধ্যা। এই নগরের নতুন নাগরিক শফিক রাস্তায় হাটছিলো একমনে। গন্তব্য অজানা।
হঠাৎ কয়েকজন লোক এসে পেছন থেকে জাপটে ধরলো শফিককে। হকচকিয়ে গেলো শফিক।
— “আপনেরা…”
— ”চোপ!”
— ”ভাই আমি তো কিছু করিনাই, গ্রাম থেকে আসছি কাজের খোঁজে, নিরীহ প্রকৃতির মানুষ।”
— ”ওই বাহেন… তোরে কথা কম কইতে কইসিনা?”
চুপ হয়ে গেল শফিক। কী করবে, কী হতে যাচ্ছে ভেবে পেলো না সে। চিৎকার দিয়ে কাওকে ডাকবে? কিন্তু কাকে? কেউ তো তার আপন নেই এই স্বপ্নের শহরে।
আস্তে আস্তে শফিকের সবগুলো হাত-পা এক করে বেঁধে ফেলতে লাগলো লোকগুলো। সে করজোড়ে বারবার বলতে লাগলো, ”ভাই আমার মা খুব অসুস্থ, চিকিৎসার টাকা জোগানোর জন্য ঢাকায় কাজের খোঁজে আসছি। আপনেরা আমার প্রাণটা ভিক্ষা দেন, সারাটাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।”
কে শোনে কার কথা।
পিছমোড়া করে বেঁধে মেরেধরে শফিকের পকেটে অল্পবিস্তর যা টাকাপয়সা ছিলো, সব পকেটে পুরে ভেগে গেলো আততায়ীরা। আধমরা হয়ে পড়ে রইলো শফিক। ক্রমেই সে মৃত্যুর দিকে এগুতে লাগলো।
দূর থেকে এই ঘটনা দেখতে পেয়েছিলো এক তরুন মুক্তিযোদ্ধা, তার নামও ছিল শফিক।
মুক্তিযোদ্ধা শফিক গ্রামের নিরীহ শফিককে বাঁচাতে এগিয়ে গিয়েছিল ঠিকই, শেষ অবধি বাঁচাতে পারেনি। তবে তার ওই ইচ্ছার কারনে জন্ম হয়েছিল অবিশ্বাস্য এক গল্পের!
কী ছিল সেই গল্প? পাঠক এতক্ষনে বুঝে গেছেন নিশ্চয়ই!