জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অজ্ঞাত ১১৪ শহীদের পরিচয় শনাক্তে মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আজ রোববার সকাল ১০টায় রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থানে এই কার্যক্রম শুরু হয়। স্বজনদের ডিএনএ নমুনার সঙ্গে মিলিয়ে অজ্ঞাত নিহতদের পরিচয় নির্ণয় করা হবে।
কবরস্থানে উপস্থিত ছিলেন নিহত শহীদদের পরিবার–পরিজন। তাঁদের একজন রাশেদা বেগম জানান, তাঁর ছেলে সোহেল রানা ১৮ জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নিতে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে নিখোঁজ হন। আজ পর্যন্ত তাঁর খোঁজ পাননি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমি ছেলের লাশটা অন্তত চাই।’
কার্যক্রম শুরুর আগে সিআইডির প্রধান ও অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. ছিবগাত উল্লাহ ব্রিফিংয়ে জানান, আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক ‘মিনেসোটা প্রটোকল’ অনুসরণ করেই মরদেহ উত্তোলন, ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এ কাজে সহযোগিতা করছে ঢাকা জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ পুলিশ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
বিশ্বের ৬৫টি দেশে ফরেনসিক শনাক্তকরণ কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেওয়া আর্জেন্টিনার বিশেষজ্ঞ লুইস ফনডিব্রাইডারও প্রক্রিয়ায় যুক্ত রয়েছেন। ঢাকার চারটি সরকারি চিকিৎসা কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরাও অংশ নিচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কবরস্থানে অজ্ঞাত শহীদদের গণকবর এলাকা সাদা কাপড়ে ঘিরে রাখা হয়েছে এবং একটি অস্থায়ী তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। সাধারণ প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
সিআইডি প্রধান জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ১০টি পরিবারের পক্ষ থেকে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন পাওয়া গেছে। আরও পরিবার এগিয়ে এলে তাঁদের নমুনাও সংগ্রহ করা হবে। মরদেহ উত্তোলনের পর ময়নাতদন্ত শেষে ডিএনএ সংগ্রহ করে স্বজনদের সঙ্গে মিলিয়ে পরিচয় নিশ্চিত হলে ধর্মীয় রীতিতে দাফন সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘যাঁরা রক্ত দিয়ে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছিলেন, আমরা তাঁদের সঠিক পরিচয় দিতে চাই।’
সিএ/এএ


