জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (OHCHR) একটি মিশন ঢাকায় স্থাপনের খসড়া সমঝোতা স্মারকে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৩৩তম উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের মিশন স্থাপন–সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।
এর আগে গত ২৯ জুন উপদেষ্টা পরিষদে এ খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। সে সময় আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, ওএইচসিএইচআর-এর (OHCHR) সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়েছে। তিনি বলেন, “ওই সংস্থা গত বছর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতেই আলোচনায় গতি আসে এবং এখন সেটি চূড়ান্ত পর্যায়ে।”
ড. আসিফ নজরুল আরও বলেন, খসড়া চুক্তিটি এখন জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার ফলকার টুর্কের কাছে পাঠানো হবে। তার অনুমোদন মিললেই দ্রুত এ চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হবে। শুরুতে তিন বছরের জন্য এই মিশন চালু থাকবে।
হেফাজতে ইসলামের উদ্বেগ
এদিকে জাতিসংঘের এ উদ্যোগকে ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক বুধবার সিলেটে এক সভায় বলেন, “বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের পথ তৈরি করতে পারে। দেশের জনগণ এবং হেফাজতে ইসলাম এটি মেনে নেবে না।”
তিনি আরও দাবি করেন, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পর্যালোচনা
বিশ্লেষকদের মতে, মানবাধিকার পর্যবেক্ষণে জাতিসংঘের অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে পারে। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ সংবেদনশীলতা ও মতবিরোধ বিবেচনায় নিয়ে এই পদক্ষেপ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে সকল পক্ষের সঙ্গে পরামর্শ ও সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।