মালয়েশিয়ায় আইএসে অর্থ পাঠানোর অভিযোগে বাংলাদেশি শ্রমিকদের গ্রেপ্তার: পুলিশপ্রধানের দাবি
মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি শ্রমিকরা সিরিয়া ও নিজ দেশ বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট (আইএস) সংগঠনের কাছে অর্থ পাঠাতেন বলে দাবি করেছেন দেশটির পুলিশপ্রধান খালিদ ইসমাইল। শুক্রবার টেলিভিশনে প্রচারিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মালয়েশীয় পুলিশপ্রধান জানান, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে পরিচালিত ধারাবাহিক অভিযানে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী মোট ৩৬ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে। আটক ব্যক্তিরা নির্মাণ, সেবা ও কারখানা খাতে কর্মরত ছিলেন।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশপ্রধান জানান, ওই শ্রমিকদের একটি চক্র অন্যান্য বাংলাদেশিকে টার্গেট করে দলে যুক্ত করত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তারা উগ্র মতাদর্শ প্রচার করত।
এই ৩৬ জনের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে সরাসরি সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্যপদের অভিযোগ আনা হয়েছে, ১৫ জনকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে এবং বাকি ১৬ জন এখনো পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন বলে জানানো হয়। এদের বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিক্রিয়ায় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘যদি সত্যি প্রমাণ হয় তাঁরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত, তাহলে দেশে ফেরার পর তাঁদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনায় আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ও লজ্জিত। তবে বাংলাদেশের অবস্থান জঙ্গিবাদের বিষয়ে স্পষ্ট—জিরো টলারেন্স। কোনো অবস্থাতেই সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে আমরা প্রশ্রয় দিই না।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে কুয়ালালামপুরে আইএস সংশ্লিষ্ট এক হামলার পর মালয়েশিয়ায় ব্যাপক জঙ্গি দমন অভিযান শুরু হয়। তখন শত শত সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জঙ্গি সংশ্লিষ্ট গ্রেপ্তারের হার কিছুটা কমে এসেছে।
পুলিশপ্রধান আরও বলেন, ধৃত চক্রটি আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস এবং ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে আইএসের কাছে পাঠাত। তাঁদের ধারণা, এই নেটওয়ার্কে ১০০ থেকে ১৫০ জন পর্যন্ত শ্রমিক জড়িত থাকতে পারে।
তিনি জানান, যাঁদের সংশ্লিষ্টতা তুলনামূলকভাবে কম, তাঁদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। তবে যারা মূল পরিকল্পনায় জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।