মোঃ ফাহিম আহম্মেদ রিয়াদঃ
বলা হয়, “আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ।” কিন্তু মাদক নামের এই ভয়বাহ ভাইরাসটি বড়দের তে বটেই সেইসাথে আক্রমন করছে শিশুদেরও। মাদকের কবলে পরে শিশুরা হারাচ্ছে তাদের ভবিষ্যৎ। মাদকাসক্ত হয়ে দূর্বিসহ জীবনযাপন করছে অনেক শিশুরাই। মাদকের কবলে পরে অনেক মেধাবী শিশু কিশোররাই ঝড়ে পড়ছে।
অধিকাংশ শিশু-কিশোররা প্রথমিক অবস্থায় সিগারেট বা ধুমপান করে মাদকে পা দেয়। এরপর আস্তে আস্তে উচ্চমাত্রর মাদক যেমন ঘুমের বড়ি, ডান্ডি, হেরোইন ও ইয়াবাতে আসক্ত হয়ে পরে। এর ফলে তাদের স্বাভাবিক বিকাশে বাধাগ্রস্থ হয়, পড়ালেখায় মন বসে না। এমনকি খাওয়াদাওয়াতেও অরুচি এসে যায়। ডান্ডি, ঘুমের বড়ি ও ইয়াবা সহজলভ্য হওয়ায় অনেকেই এ জাতীয় মাদকে বেশী ঝুঁকছে। ঘুমের বড়ি ইদানিং মাদক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বিভিন্ন ফার্মেসী থেকে তারা ছলে বলে কৌশলে ঘুমের ঔষধ সহজে কিনেই মাদকাসক্ত হচ্ছে। মাদকের জন্য তারা অকালেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।
দেশের ৮৫ শতাংশ পথশিশুরাই মাদকাসক্ত। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্যমতে, পথশিশুদের ১৯ শতাংশ হেরোইন নামের মারাতœক মাদক সেবন করে। আর ৮শতাংশ সিরিঞ্জের মাধ্যমে মাদক নিচ্ছে। বিভিন্ন মাদকের মধ্যে পথশিশুরা গাঁজা হেরোইন, ঘুমের বড়ি ও ডান্ডির মতো মাদকে বেশী আসক্ত হচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ৮ থেকে ১০বছরের পথশিশুরা গাঁজা, সিগারেট, ডান্ডির মতো মাদক গ্রহণ করছে। আর ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা ফেন্সিডিল, হেরোইনে আসক্ত।
এমনকি ক্ষুধার কষ্ট থেকে ভুলে থাকতে এই শিশুরা নিয়মিত মাদক সেবন করছে। অবিভাবকহীন অনেক শিশুদের ভাগ্যে অধিকাংশ সময় খাবার জোটেনা। আর এ পরিস্থিতিতে ক্ষুধার জ্বালা যাতে না বোঝা যায় সে জন্য তারা মাদক নিচ্ছে। এবং মাদক ব্যবসায়ীরা এই শিশুদের মাদক বিক্রির কাজেও অপব্যবহার করছেন।
গতকাল সন্ধ্যায় বগুড়া রেলস্টেশনে বাসায় যাওয়ার জন্য কাহালুগামী ট্রেনের অপেক্ষা করছিলাম তখন রেলস্টেশনের ফুটওভার ব্রিজের উপরে কিছু টোকাই ও পথশিশুদের দলবেঁধে ডান্ডি নামক সহজলভ্য মাদক গ্রহণ করতে দেখতে পেলম। সেখান থেকেই মাদক নিয়ে লেখার কথা মাথায় আসলো।
অবিভাবকদের অসচেতনতার কারণে অনেই সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েরাও মাদকের কবলে ঝূঁকছে। যে সময়টা তাদের বিকাশ ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে কাটানোর কথা সে সময়টা তারা মরণব্যাধী মাদকে ঝূঁকে পড়ছে। মাদকের কবল থেকে শিশু-কিশোরদেরর রক্ষা করার জন্য শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একা কাজ করলে চলবে না সেই সাথে এগিয়ে আসতে হবে আমার আপনার। পাঠ্যবয়ের পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষাও মাদক থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে।