Home বাংলাদেশ আইন ও অপরাধ নিজ মেয়ের সন্তানের পিতা হলেন বাবা

নিজ মেয়ের সন্তানের পিতা হলেন বাবা

0

কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নের কাঠালিয়ামুড়া এলাকায় নিজের মেয়েকে দিনের পর দিন ধারাবাহিকভাবে ধর্ষণ করেছে কলিম উল্লাহ নামের এক পাষণ্ড পিতা। ২০১৭ সালের মার্চে সংঘঠিত এ ঘটনায় গর্ভবতী হয়ে সম্প্রতি ওই মেয়ে একটি বাচ্চাও প্রসব করে। ঘটনা ধামচাপা দিতে বাচ্চা হওয়ার পাঁচদিন পূর্বে তাকে তড়িঘড়ি করে বিয়েও দেয়া হয়। সেখানে হাতের মেহেদী মোছার আগেই মা হওয়ার ঘটনায় তার কপালে নেমে আসে নির্যাতন।

পালিয়ে রক্ষার পরই ঘটনাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নোমান হোসেন প্রিন্সের নজরে আনা হয়। অভিযোগ পেয়ে ধর্ষক কলিম উল্লাহকে গ্রেফতারের ব্যবস্থা করেন তিনি। ইউএনও প্রিন্স নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ১৩ বছর বয়সী ধর্ষিতা মেয়েটি স্থানীয় পিএখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

ধর্ষিতা মেয়ে ও তার মায়ের বরাত দিয়ে ইউএনও মো: নোমান হোসেন প্রিন্স জানান, পিএমখালী ইউনিয়নের কাঠালিয়ামুড়া এলাকার কলিম উল্লাহর সাথে একই ইউনিয়নের জুমছড়ি এলাকার খোরশিদা বেগমের বিয়ে হয় ১৪ বছর আগে। তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। তবে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তাদের দাম্পত্য বিচ্ছেদ ঘটে।

বিচ্ছেদের পর ছোট মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান খোরশিদা। আর লেখাপড়ার জন্য বাবা কলিম উল্লাহর কাছে থেকে যায় বড় মেয়েটি। ২০১৭ সালে পিএমখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় বড় মেয়েটি। ভর্তির দুই মাসের মাথায় বাবা কলিম উল্লাহ তার পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়।

ধর্ষিতার ভাষ্য মতে, ২০১৭ সালের মার্চের কোনো একদিন বাবা কলিম উল্লাহ তাকে এক বিছানায় ঘুমাতে নিয়ে সারারাত ধর্ষণ করে। এরপর থেকে প্রাণনাশসহ নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে নিয়মিত পাষবিক নির্যাতন করত পাষণ্ড পিতা। একপর্যায়ে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এটি জানার পর স্থানীয় মেম্বার আরিফ উল্লাহর সহযোগিতায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে এক ফুফাতো ভাইয়ের সাথে তাকে (মেয়েটিকে) বিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বিয়ের চারদিন পর তার একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়।

ধর্ষিতা আরও জানায়, সন্তান জন্মদানের পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু করে। এভাবে চলার ২৮ দিনের মাথায় তার কন্যা সন্তানটি মারা যায়। অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেলে গত ১ এপ্রিল সে শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে নানার বাড়িতে মা খোরশিদা বেগমের কাছে গিয়ে আশ্রয় নেয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন প্রিন্স বলেন, অভিযোগ পেয়ে বুধবার বিকেলে ধর্ষিতা ওই মেয়ে এবং তার পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করেছি। সাথে সাথে পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষক পাষণ্ড কলিম উল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

এদিকে ঘটনাটি প্রচার পাবার পর পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু পাষণ্ড বাবা কলিম উল্লাহ নয়, তাকে সহযোগিতাকারী মেম্বার আরিফ উল্লাহ, ফুফাতো ভাই ও অন্যদের আইনের আওতায় আনতে দাবি জানান স্থানীয় সচেতন মহল।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে স্থানীয় মেম্বার আরিফ উল্লাহর মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু সংযোগ না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। কক্সবাজার সদর থানার ওসি (অপারেশন) মাইনউদ্দিন পাষণ্ড পিতাকে গ্রেফতারের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পাষণ্ড পিতা ও তার সহযোগীদের শনাক্ত করে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version