সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি ও সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে পুলিশ। প্রচলিত আইনের পাশাপাশি প্রয়োজন হলে বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ (ডিটেনশন আইন) প্রয়োগের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে ৬৪ জেলার পুলিশ সুপার, সব রেঞ্জ ডিআইজি, মহানগর পুলিশ কমিশনার এবং আইজিপি বাহারুল আলম ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
পুলিশ জানায়, কেউ চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মামলা করতে ভয় পেলে, পুলিশ নিজে বাদী হয়ে মামলা করবে। চাঁদার অর্থসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার হলে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করা হবে। প্রয়োজনে ডিটেনশন আইনের ৩(২) ধারা প্রয়োগ করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আটক রাখা হবে। মহানগর এলাকায় হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে।
সম্প্রতি পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ হত্যাকাণ্ড এবং সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নৃশংসতার ভিডিও জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এর প্রেক্ষিতে ‘চিরুনি অভিযান’ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আইজিপি বাহারুল আলম জানান, “চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু হয়েছে। কেউ মামলা না করলে পুলিশ নিজেই মামলা করবে এবং দ্রুত বিচার আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ডিটেনশন আইনের কথাও বলা হয়েছে।”
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, রাজনৈতিক বিবেচনা নয়—চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় আনতে সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে। জেলা পর্যায়ে তাদের অপরাধের ইতিহাস সংগ্রহ, গোয়েন্দা তথ্য যাচাই এবং অভিযানের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে।
বিশেষ ক্ষমতা আইনে যেসব অপরাধের কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে—রাষ্ট্র বা জননিরাপত্তা বিঘ্ন, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি, আইনের শাসনকে বাধাগ্রস্ত করা, অর্থনৈতিক ও আর্থিক ক্ষতি করা এবং বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করার মতো কার্যকলাপ।
আইন অনুযায়ী, গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা বাধ্যতামূলক।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বৈঠকেও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।