অনলাইন ভিত্তিক বিমান টিকিট বুকিং প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’-এর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির তিনজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন—হেড অব ফিন্যান্স সাকিব হোসেন (৩২), চিফ কমার্শিয়াল অফিসার সাঈদ আহমেদ (৪০) এবং চিফ অপারেটিং অফিসার এ কে এম সাদাত হোসেন (৩২)।
ঢাকা মহানগর মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন রোববার দুপুরে গণমাধ্যমকে জানান, ভুক্তভোগী গ্রাহক বিপুল সরকার শনিবার রাতে থানায় মামলা করেন। মামলায় মোট পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। বাকি দুই আসামি হলেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান বিন রাশিদ শাহ সাঈম এবং তাঁর বাবা এম এ রাশিদ। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পুলিশ জানায়, অন্তত ১৭টি এজেন্সি প্রাথমিকভাবে ৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতির তথ্য দিয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ হঠাৎ করে ফ্লাইট এক্সপার্ট তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এতে হাজারো গ্রাহক ও টিকিট বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ক্ষতির মুখে পড়ে। জানা গেছে, অনেকেই আগাম অর্থ পরিশোধ করে টিকিট বুক করেছিলেন।
অভিযোগ রয়েছে, মালিকপক্ষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে এবং প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। এ অবস্থায় গ্রাহক ও এজেন্সিগুলোর অর্থ ফেরত পাওয়া অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
শনিবার রাতে রাজধানীর মতিঝিলে ফ্লাইট এক্সপার্টের কার্যালয়ের সামনে ভিড় করেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ও সরবরাহকারী প্রতিনিধিরা। অধিকাংশই কোনো আশার খবর না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যান।
প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালের মার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। কম দামে সহজে টিকিট বুকিংয়ের সুবিধার কারণে এটি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তারা এয়ারলাইনসের টিকিট ছাড়াও হোটেল বুকিং, ট্যুর প্যাকেজ ও ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সেবা দিত।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি এয়ারলাইনস থেকে টিকিট না নিয়ে দুটি মধ্যস্থতাকারী এজেন্সির মাধ্যমে বুকিং করত। বর্তমানে সেই দুটি এজেন্সি টিকিট বাতিল করে রিফান্ডের অর্থ তুলে নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে ফ্লাইট এক্সপার্টের একটি অভ্যন্তরীণ ফেসবুক গ্রুপে এমডি সালমান বিন রাশিদের দেওয়া একটি বার্তার স্ক্রিনশট পাওয়া গেছে, যেখানে তিনি দাবি করেন, তাঁর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির দুই কর্মকর্তা বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আত্মরক্ষার্থে প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
তবে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেন।